Home সারাদেশ সিত্রাংয়ে মোংলায় ক্ষয়ক্ষতি

সিত্রাংয়ে মোংলায় ক্ষয়ক্ষতি

41

মোংলা (বাগেরহাট) থেকে মো. নূর আলমঃ
সিত্রাংয়ের তান্ডবে মোংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ২৪ অক্টঁবর সোমবার রাতে পশুর নদীর লাউডোব এলাকায় সিমেন্টের কাঁচামাল (জিপসাম) এম,ভি পৌষ-ফাল্গুনের পালা কার্গো জাহাজ ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক চ্যানেলে ডুবে গেছে বিআইডব্লিটিসির ষ্টিমার ঘাটের পল্টুন। ডুবন্ত দুইটি নৌযান মার্কিং করে সতর্ক লাল নিশানা টানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং শাখার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান রকি বলেন, যে পল্টুনটি ডুবেছে তাতে ওই চ্যানেল দিয়ে অন্যান্য নৌযান চলাচলে আপাতত কোন সমস্যা হবেনা। তারপরও দ্রুত পল্টুনটি উদ্ধারে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী যানসহ লোকজন রওনা হয়েছেন।

ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজের মালিক মোঃ হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, গত রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে পশুর নদীর লাউডোব এলাকায় ৪শ মেট্টিক টন জিপসাম নিয়ে কার্গো জাহাজটি ডুবে যায়।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) কালাচাঁদ সিংহ বলেন, কার্গোটি মুল চ্যানেলের বাহিরে ডুবেছে, এতে ওই চ্যানেল দিয়ে নৌযান চলাচলে কোন সমস্যা নেই। তারপরও মালিক পক্ষকে দ্রুত কার্গোটি উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় মোংলা বন্দরে মঙ্গলবার দুপুরের পালা থেকে সকল বিদেশী জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণ পুরোদমে শুরু হবে।

এদিকে ঝড়-বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২ হাজার চিংড়ি ঘের মালিক কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আর ২শ ঘের পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, চিংড়ি ঘেরের বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলা ও চাঁদপাই ইউনিয়নে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জাফর রানা বলেন, ঝড়ে মোংলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩শ কাঁচা ঘরবাড়ীর পুরোপুরি ও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘর ও গাছপালা পড়ে ভোগান্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারেরা।

ঝড়ের রাতে ও পরদিন মঙ্গলবার দুপুরের জোয়ারে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। এতে তলিয়েছে পশুর নদীর পাড়ের জয়মনি, চিলা, কাইনমারী, কানাইনগর, শেলাবুনিয়া ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়ীঘর।

এদিকে ঝড়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুইদিনেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে মোংলা বন্দর, পৌর শহরসহ গ্রামাঞ্চলে। এতে চরম ভোগান্তীতে লাখো মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যাতে সকল ধরণের সাহায্য সহযোগীতা পেতে পারেন সেজন্য তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে পাঠানো হচ্ছে। এরপর বরাদ্দ পেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা বন্টন করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।