Home জাতীয় আপাতত পিপিপি’র মাধ্যমে সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদানের কোনো সুযোগ নেই

আপাতত পিপিপি’র মাধ্যমে সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদানের কোনো সুযোগ নেই

32

স্টাফ রিপোটার: বিদ্যমান পিপিপি আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদানের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে কেবল অনলাইনে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করার মাধ্যমেই প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি জলমহাল ইজারা পেতে পারে।

সম্প্রতি, এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এই মতামত ব্যক্ত করা হয়। এতে অবহিত করা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫’-এর ধারা ২(১২) অনুযায়ী ‘সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯’-এর ২৮ অনুচ্ছেদ-এর আওতায় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাথে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে কোনও জলমহাল ইজারা প্রদানের সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালাটি পিপিপি আইন প্রণয়নের পূর্বে করা হয়েছিল। আইনের বিধানাবলি, যেকোনো বিধি ও প্রবিধিমালা কিংবা নীতিমালার উপর প্রাধান্য পায়। ২০০৯ সালে প্রণীত সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় পরীক্ষামূলকভাবে সারাদেশে স্বল্পসংখ্যক জলমহালের ব্যবস্থাপনার কথা বলা আছে। অন্যদিকে, ২০১৫ সালের পিপিপি আইনে পিপিপি প্রকল্প বলতে নূতন কোন অবকাঠামো নির্মাণ বা পরিচালনা বা উভয় করার পরিকল্পনা, বিদ্যমান কোন অবকাঠামো বিনির্মাণ করার পরিকল্পনা কিংবা দুটিই অথবা কোন অবকাঠামোর সুবিধার সাথে সংযুক্ত নয় এমন সকল পণ্য বা সেবা সরবরাহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড বা কর্মসূচি বোঝায়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় জলমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের নানা অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীগণ নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতেন। অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া চালুর ফলে এখন আর সেই সুযোগ নেই। অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর জলমহাল সংশ্লিষ্ট অংশীজন থেকে কোনো ধরণের অভিযোগ আসেনি।

প্রসঙ্গত, land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েব পোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাচ্ছে। এছাড়া, জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েবপোর্টাল থেকেই জানা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিল, হাওর, বাওর, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে ছোটো-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। বেশ কয়েকটি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইজারা-বিহীন রাখা হয়েছে যেমন, দিনাজপুরের রামসাগর, সিরাজগঞ্জের হুরাসাগর। মাছ সংগ্রহের অভয়াশ্রম ঘোষিত জলমহালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওড়, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওড় ইত্যাদি।

‘উন্নয়ন প্রকল্পে’ ৬ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরণের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন ‘জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন ‘উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। এছাড়াও জনস্বার্থে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জলমহাল হস্তান্তর করা হয়।