ডেস্ক রিপাের্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ২৮ এপ্রিল ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস ২০২৪’ উপলক্ষ্যেনিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস ২০২৪’ উদ্‌যাপন করছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য-‘সুস্থ শ্রমিক, শোভন কর্মপরিবেশ; গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে শ্রমিক কল্যাণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। শোষণবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো শ্রমনীতি ঘোষণা করেন। শিল্প শ্রমিক মজুরি কমিশন গঠন, বিভিন্ন সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, শ্রম পরিদপ্তর পুনর্গঠন, জাতীয় শ্রম উপদেষ্টা বোর্ড গঠনসহ ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও এরসদস্যপদ লাভ করে।
আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ সৃজন এবং তাঁদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও কল্যাণকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধন ও হালনাগাদ করেছে। আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’ প্রণয়ন করেছি। শ্রম বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও প্রটোকলের নিরিখে শ্রমিক, মালিক ও কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন ও জোরদার করা হয়েছে। শ্রমিকদের চিকিৎসায়, তাঁদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিক পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারের সময়োচিত ও যথাযথ পদক্ষেপের ফলে কর্মপরিবেশসহ শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নতি সাধিত হচ্ছে।
আওয়ামী সরকারের নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুসারে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে শিল্পখাতের প্রসার ও শ্রম অধিকার এবং শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। দেশের অদম্য অগ্রযাত্রায় শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ জড়িয়ে আছে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন সাধন এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের শ্রমখাতকে ‘স্মার্ট’ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শোভন কর্মপরিবেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি পালনকে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ঘটাতে দিবসটির গৃহীত সকল কার্যক্রম অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।
আমি ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস ২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”