স্টাপ রিপোর্টার ।। ৮২ জন ফেলোকে ফেলোশিপকে ফেলোশিপ সার্টিফিকেট প্রদান এবং প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্স(বিডিসিগ)-এর ৩দিনব্যাপি ফেলোশিপ কর্মসূচী। বাংলাদেশ প্রকৌশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া এ কর্মসূচী গতকাল (২৭ এপ্রিল) শেষ হয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-র সম্মেলন কক্ষে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: মহিউদ্দিন আহমেদ। সমাপণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইজিএফ-এর মহাসচিব আব্দুল হক অনু।
সমাপণী অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রযুক্তিকে ভয় নায়, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর যে ডিভাইড আমরা দেখছি, তা সময় মতো ঘুচে যাবে।”
এসময় তিনি বলেন, “প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আগামীতে তরুণ প্রজন্ম’ই নেতৃত্ব দিবে এবং নির্ধারিত সময়ের আগে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।” একই সঙ্গে বিভাগীয় পর্যায়ে এ ধরনের সচেতনতামূলক স্কুলিংয়ে বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট থাকবে বলে সবুজ সঙ্কেত দেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশে অনেক মানুষ ইন্টারনেট একসেসের বাইরে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি গ্রামে এখনো ফিক্সড ব্রডব্যান্ড নেই, তবে মোবাইল ইন্টারনেট রয়েছে। আমরা ডিজিলাইজড করেছি তবে ড্রাইভারলেস কার কিংবা ক্যাশলেস সোসাইটির মানুষ সময়ের সাথে সাথে গ্রহণ করবে, সময়ের সাথে মানুষ প্রযুক্তির সাথে এডজাস্ট করে নিবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা চালকবিহীন গাড়ির চেয়ে আমাদের জরুরি দরকার উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া।”
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা চালকবিহীন গাড়ির চেয়ে আমাদের জরুরি প্রয়োজন উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা। দেশের জন্য যেসব প্রযুক্তি প্রয়োজন, সেগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। সেজন্য দেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে তরুণ মানবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, “ডিজিটাল বিভক্তি শুণ্যের কোঠায় নিয়ে আসা চ্যালেঞ্জ হলেও যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। বাংলাদেশের ডিজিটাল স্বাক্ষরতা বাড়াতে হলে ডিজিটাল অবকাঠামো, ডিজিটাল সেবা এবং সেবা গ্রহণের বিষয়গুলো উন্নত ও সহজলভ্য করতে হবে। ডিজিটাল স্বাক্ষরতা বাড়লে অর্থনৈতিক বৈষম্য, নারী-পুরুষ বৈষম্য কমে আসবে।”
সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইজিএফ মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি’র সিস্টেমস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনআরসি সিইও এ এইচএম বজলুর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জুলকারিন জাহাঙ্গীর, প্রযুক্তি ও টেলিকম বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির।
এর আগে বিটিআরসি কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ এর সভাপতিত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মোঃ শাহরিয়ার হাসান জিসান। এছাড়াও প্রযুক্তি আইন এবং এতে ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা বিষয়ক সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল হক। এতে কি-নোট উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মোঃ সাইমুম রেজা তালুকদার। নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক শেসনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসি’র সিস্টেমস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান। সভাপতিত্ব করেন সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রযুক্তিবিদ, টেলিকম বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি-বেসরকারি বহুপক্ষীয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।