Home জাতীয় র‌্যাব সেজে টিকটক, শতাধিক নারীসঙ্গ পাওয়া রাজ কারাগারে

র‌্যাব সেজে টিকটক, শতাধিক নারীসঙ্গ পাওয়া রাজ কারাগারে

44

ডেস্ক রিপোর্ট : টিকটকে র‌্যাব ও বিজিবি’র সদস্য পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় টিকটক রাজ ওরফে আব্দুর রাকিব ওরফে খোকনকে (২৬) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান এ আদেশ দেন।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রেজাউল আসামি রাজকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জারিয়াত হোসেন জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক রাজকে কারাগারে পাঠিয়ে আগামী ২২ নভেম্বর জামিন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

সিএমএম আদালতে মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) পুলিশের উপ-পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

গত ১৫ নভেম্বর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবের একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে র‌্যাবের ইউনিফর্ম, প্রতারণায় কাজে ব্যবহৃত মোবাইল, সিম ও বাঁশি জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় রাজের বিরুদ্ধে ৩টি পৃথক মামলা করেন র‌্যাব-২ এর নায়েব সুবেদার সামছুল আলম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে প্রতারণা, পর্নোগ্রাফি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক এ ৩টি মামলা তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়।

গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত রাজ নিজেকে র‌্যাবের সদস্য পরিচয়ে শতাধিক নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি, ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেলিং-অর্থ আত্মসাতের বহু অভিযোগ রয়েছে। টিকটকার রাজ পেশায় বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেলের নিরাপত্তা কর্মী। কিন্তু র‌্যাবের পোশাক পরে নিজেকে র‌্যাব-৫ এ কর্মরত হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।

গত দু-বছর ধরে সে টিকটক, ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে র‌্যাবের পরিচয় দিতেন। টিকটকে রাজের ২ মিলিয়নের অধিক ভিউ এবং দেড় মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও নিজেকে উচ্চবিত্ত পরিচয় দিতেন রাজ। এই পরিচয় ফুটিয়ে তুলতে বিভিন্ন আলিশান বাড়ির সামনে ভিডিও তৈরি করতেন তিনি।

কমান্ডার মঈন বলেন, রাজ টিকটকে বিভিন্ন মেয়েদের মধ্যে যারা মূল্যবান অলঙ্কার পরতেন বা অবস্থা সম্পন্ন মনে হতো তাদেরকে টার্গেট করতেন। পরে বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অলঙ্কার ও অর্থ আত্মসাৎ করতেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি, আগে গার্মেন্টসে কাজ করলেও বর্তমানে বগুড়ায় একটি আবাসিক হোটেলের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করতেন। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পরে গত দেড় বছরে র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে আরও ৩টি বিয়ে করেছেন। যদিও পরে তার প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে সবাই তাকে ডির্ভোস দিয়ে চলে যায়।

এছাড়াও শতাধিক নারীকে বিভিন্নভাবে প্রতারিত করেছেন রাজ। কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ধারণ করে মোবাইলে সংরক্ষণ করে এবং ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।

এমনকি তিনি র‌্যাব-২ এ বদলি হয়েছেন বলে নিজের পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। এমন তথ্য দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভিডিও তৈরি করতে রাজধানী ঢাকায় আসতেন টিকটক রাজ।-আমাদের সময়.কম