Home জাতীয় সরকারি চাকরিতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি পদ শূন্য

সরকারি চাকরিতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি পদ শূন্য

46

ডেস্ক রিপোর্ট: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংসদকে জানিয়েছেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি পদ শূন্য রয়েছে। গতকাল বুধবার সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ফরহাদ হোসেন জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ প্রকাশিত স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস-২০২১ বইয়ের (২০২২ সালের জুনে প্রকাশিত) তথ্য অনুযায়ী সরকারের অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও সরকারি কার্যালয়গুলোয় বেসামরিক জনবলের উল্লেখিত সংখ্যক পদ শূন্য। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ৪৩ হাজার ৩৩৬টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ৪০ হাজার ৫৬১, তৃতীয় শ্রেণির ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৪৮ এবং চতুর্থ শ্রেণি পদে শূন্য পদ ১ লাখ ২২ হাজার ৬৮০টি।
তিনি জানান, এর মধ্যে ৪০তম বিসিএসে ১ হাজার ৯২৯ জন নিয়োগ করা হয়েছে। ৪২তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে ৩ হাজার ৯৬৬টি পদে সহকারী সার্জন নিয়োগ করা হয়েছে। ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান। ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন চলছে, ৪৪তম লিখিত পরীক্ষা গত ১১ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। আর আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি টেস্টের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারিত আছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারি অফিসগুলোয় শূন্য পদের নিয়োগ চলমান প্রক্রিয়া। ১০ থেকে ১৩তম গ্রেডের নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে হয়। ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডের নিয়োগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থার নিয়োগবিধি অনুযায়ী হয়ে থাকে। তিনি জানান, আদালতে মামলা থাকায় নিয়োগবিধি প্রণয়ন কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এবং পদোন্নতি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় কিছু শূন্য পদ পূরণ করা যায় না।
জাতীয় পার্টির (জাপা) এমপি মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানান, ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার পদে ৫ হাজার ৪৩৬টি শূন্য পদের চাহিদাপত্র পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই শেষে প্রকৃত সুপারিশযোগ্য শূন্য পদের সংখ্যা জানানো সম্ভব হবে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য শামসুন নাহারের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস-২০২১ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। এর মধ্যে নারী ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৯১ জন, যা মোট চাকরিজীবীর প্রায় ২৬ শতাংশ। ২০১০ সালে ছিল ২১ শতাংশ। প্রথম শ্রেণির পদে নারীদের জন্য আলাদা কোটা না থাকলেও ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডে নিয়োগে নারীদের জন্য ১৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা আছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ সংসদকে জানান, সরকারের অর্থ বিভাগের ২০২২ সালের ২১ জুলাই প্রজ্ঞাপনে পেট্রোল ও লুব্রিকেন্ট খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করার নির্দেশনা রয়েছে। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি গাড়ি ব্যবহার আগের তুলনায় সীমিত করে ২০ শতাংশ সাশ্রয় নিশ্চিত করা হচ্ছে। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের মাধ্যমে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জ্বালানি সাশ্রয়ের বিষয়ে অর্থ বিভাগের নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের গাড়ি মেরামতকালে রোড টেস্টের জন্য গাড়ি প্রতি তিন লিটারের স্থলে দুই লিটার, সিএনজিতে রূপান্তরিত গাড়ির ইএফআই/এমপিএফআই ইঞ্জিন চালুর জন্য মাসিক ৩০ লিটারের স্থলে ১৫ লিটার, সিএনজিচালিত যানে রূপান্তরিত কার্বুরেটর ইঞ্জিনের গাড়ি চালুর জন্য মাসিক ১৫ লিটারের স্থলে ১০ লিটার এবং গাড়ি ব্যবহারকারী কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে গাড়ি প্রতি ২০০ লিটারের স্থলে ১৫০ লিটার অকটেন ও পেট্রোল ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া ভিআইপিদের জন্য রিজার্ভ গাড়ি মেরামত ও টেস্ট ট্রায়ালের জন্য জ্বালানি ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডার যুক্ত গাড়ির সিলিন্ডার ব্যবহার উপযোগী থাকলে গ্যাস ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ইত্তেফাক