Home সারাদেশ রাজশাহীতে পৃথক অভিযানে ২৭টি এক্সাভেটর জব্দ, জেল-জরিমানা

রাজশাহীতে পৃথক অভিযানে ২৭টি এক্সাভেটর জব্দ, জেল-জরিমানা

25

মো.পাভেল ইসলাম মিমুল রাজশাহী: গত দশ দিনে পবা উপজেলায় উর্বর আবাদি তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও মাটি কেটে বিক্রি করার অপরাধে পৃথক অভিযানে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় রাতের আঁধারে অভিযান চালিয়ে ২৭টি এক্সাভেটর (খননযন্ত্র) জব্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার।

এসময় তিনি জানান, পবা উপজেলা প্রশাসন অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকায়, তারা কৌশল পরিবর্তন করে গভীর রাতে পুকুর খনন করছিল। তাই বাংলাদেশ দণ্ড বিধির প্রচলিত আইন উপেক্ষা করায় বালুবহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ১৫ (১) ধারায় এই জরিমানা করা হয়।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের সোনাইকান্দি এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ওয়ালিদ, পারিলা ইউনিয়নের ঘোলহাড়িয়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুল বারীক।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল প্রতিবেদক কে বলেন, আবাদি জমি রক্ষা ও অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধে জেলা প্রশাসন সব সময় সোচ্চার। জেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় সকল উপজেলা প্রশাসনকে কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে তদারকি ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন,আবাদি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের আদেশ আছে আবাদি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করতে হবে। সেই মোতাবেক প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। কোনোভাবেই আবাদি জমিতে পুকুর খনন করতে দেওয়া হবে না।

বাগান করলে ফসলি জমিতে ফেরানো যায়, কিন্তু পুকুর করলে সম্ভব না’ উল্লেখ্য পূর্ব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক জানান, রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা তাদের জমিতে বছরে তিন থেকে চারটি করে ফসল উৎপাদন করেন। এমন উর্বরা জমি দেশের খুব কম অঞ্চলে আছে। সাময়িক বেশি লাভের আশায় কৃষকরা ফসল উৎপাদন না করে মাছ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।

কিন্তু, যেসব জমিতে পুকুর খনন হচ্ছে তা আর কখনোই আবাদি জমিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। কেননা, মাটিগুলো পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। তাই এই বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লসমী চাকমা জানান, কোনো অবস্থাতেই তিন ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ইতোমধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা হয়েছে। পুকুর খনন বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার জানান, পবা উপজেলা প্রশাসন অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকায়, তারা কৌশল পরিবর্তন করে গভীর রাতে পুকুর খনন করছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।

তা সত্তে¡ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এই নির্দেশনা অমান্য করে, রাতের আঁধারে তিন ফসলি কৃষিজমিতে চলছিল পুকুর খননের মহোৎসব। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় গভীর রাতে পৃথক অভিযানে ২৭টি এক্সাভেটর (খননযন্ত্র) জব্দ করা সহ কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই অভিযানে পুলিশ সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতায় করেছেন। মাটি ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান।