Home সারাদেশ রাণীশংকৈল মডেল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

রাণীশংকৈল মডেল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

17

রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌর শহরের স্বনামধন্য মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েটি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টিতে প্রাক প্রাথমিক, শিশু শ্রেণিসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সত শত এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রণি পর্যন্ত আড়াইশত ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে। স্কুলটিতে সরকারিভাবে
১৮ জন এবং ২ জন গেস্ট টিচারসহ মোট ২০ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।
প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্বনামধন্য স্কুলটি ২০০৯ সালে সম্বলিতভাবে জাতীয়ভাবে ২০০৯ সালে জাতীয় পুরস্কার পান এবং সারাদেশে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতির জন্য ২০১১ সালে দ্বিতীয় বারের মতো জাতীয় পুরস্কার পান।
বিদ্যালয়টিতে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছেলিমা সিদ্দিকা সিনিয়ারিটির ভিত্তিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। আর এর পরই স্কুলটিতে দিন দিন
লেখাপড়ার মান ক্ষুন্নসহ শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং শুরু হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতা বলে সরকারি কারিকুলামকে ঝামেলা দেখিয়ে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণির ভর্তি বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ৬ষ্ঠ- ৮ম শ্রেণির অভিভাবক ও পৌর শহরের স্থানীয়রা এপ্রেক্ষিতে গত রবিবার ৩ ডিসেম্বর পৌরশহরের বাসিন্দা ও রাণীশংকৈল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নওরোজ কাউসার কাননকে সাথে নিয়ে প্রায় ১০০ জন অভিভাবক বিদ্যালয়ে জড়ো হয়।
পরে কাননসহ ১৫ থেকে ২০ জন অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের রুমে প্রায় আধা ঘন্টা অপেক্ষার পর ও প্রধান শিক্ষক তার চেয়ারে এসে বসে। শুরু হয় আলাপচারিতা। এসময় অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতার বলে ভর্তি বিলম্ব করছে আমরা আমাদের সন্তানদের ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। অন্য প্রতিষ্ঠানের ভর্তির সময় প্রায় শেষের দিক। ওই স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিউটি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছেলিমা আক্তার স্কুলের স্টাপ মিটিংয়ে বলেন এবার তিনি ৬ ষষ্ঠ শ্রেণিতে কোন ছাত্র ভর্তি করাবেন না। প্রধান শিক্ষকের এমন মন্তব্য নিয়ে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা এর বিরোধিতা করেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবক এবং কাননের মধ্যে বেশ উত্তেজনামূলক কথাবার্তা হয়। খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিকও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।কিছুক্ষণ পর ইউএনও রকিবুল হাসান ও সহকারী শিক্ষা অফিসার ঘ্যানশ্যাম রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং উভয় পক্ষের সবার কথা শুনে ব্যাপাটি মিটমাট করে দিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসেন। কিন্ত বাক বিতন্ডার সময় ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ধীরেন চন্দ্র রায় ওই উত্তেজনামূলক মুহূর্তেটিকে গোপনে ভিডিও করে রাখে। এবং পরে এই ভিডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিভাবকগণ ও কাননের উত্তেজনার মুহূর্তেটিকে বিভিন্ন জনকে দিয়ে আপলোড করিয়ে তাদের সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করে।
এবং অফিসে এসে প্রধান শিক্ষকের সাথে ঝগড়া ও বাক বিতন্ডা করেছে মর্মে
ইউএনওকে না জানিয়ে কাননের নামে রাণীশংকৈল থানায় প্রাধান শিক্ষক ছেলিমা ও সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ খবর শুনে অভিভাবকরা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা ওই প্রধান শিক্ষকসহ স্কুলের গ্রুপিং সৃষ্টিকারী কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের বদলী দাবী করেন। এদিকে গতকাল ওই প্রধান শিক্ষক যে অভিভাবক ও কাননের উপর উত্তেজিত হয়ে অপমানমূলক কথা বার্তা বলেছিলো তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে।
এ নিয়ে পৌর শহর জুড়ে চলে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
এ ব্যপারে অভিভাবক ও স্কুল কমিটির সদস্য সাবেক কাউন্সিল সিরু, ইস্তেকার , মহসিন, কাউন্সিল সেফাউল আলম, রুমা বসাক, সেলিনা আকতার, মুনজুরুল আলম, মো. মাসুম, রফিকুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ওই প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ, শেফালী খাতুনসহ আরো দুএকজন মূল স্কুলটাকে নষ্ট করার কারণ। এদের বদলী করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

সহকারী শিক্ষা অফিসার ঘ্যানশ্যাম রায় বলেন,বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে কোচিং বাণিজ্য ও তাদের মধ্যে অভ্যান্তরীণ কোন্দল নিয়েই মূলত গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিধায় স্কুলটির শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছেলিমা আক্তার দায় চাপাচ্ছেন শিক্ষা ব্যবস্থার নতুন কারিকুলামের উপর।

রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, আমি বাকবিতণ্ডার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি। তিনি আরো বলেন শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে এবং শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয় টি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।