Home রাজনীতি বরিশাল সিটি নির্বাচন: অবশেষে নির্বাচনীয় মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ

বরিশাল সিটি নির্বাচন: অবশেষে নির্বাচনীয় মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ

37

বরিশাল অফিস: অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রচার প্রচারনা নিয়ে।প্রায় দেশমাস আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাদের মাঠে দেখা যায়নি, বিশেষ করে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র অনুসারীদের।৪০দিন পরে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ পক্ষে প্রচার প্রচারনায় নেমে সাদিক অনুসারী জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নগরীর সেহেল চত্বরস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে অনিুষ্ঠানিক এ প্রচারপ্রচারনা শুরু করেন তারা। এতে নেতৃত্ব দেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোহম্মদ ইউনুন। গতকালও তারা নগরীর পোর্ট রোড, চকবাজার, কাটপট্রি এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানের প্রাচার প্রাচানরা চালান প্রাচারপত্র বিলি কেেরন। ছোড়া নগরীর ৩০ ওয়ার্ডেও তারা নৌকা প্রতিকের পক্ষে প্রচার পত্র বিলি, সভা সমাবেশ ও মিছিল বেড় করেন। বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির জেষ্ঠ্য সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ ও বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এদিকে কেন্দ্রয়ী নেতাদের সধিান্ত অনুযায়ী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে না আসলেও তিনি ঢাকায় থেকে নির্বাচন পরিচালানা কাজে যুক্ত থাকবে। এবং নৌকা প্রতিকের বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি সব ধরনের সহযোগী করবে।

তবে সাদিকবিহীন এই প্রচারনা তেমন একটা গতি পাচ্ছে না বলে জানান নেতা কর্মীরা। তারা বলেন, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ বরিশালে অবস্থান নিয়ে তার অনুসারীরা যে উৎসহ পায়, কিন্তু তার শূন্যতা সেই উৎসহ কিছুটা উবে যায়। অন্য দিকে প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারনায় সাদিক অনুসারীদের কোন ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে। সাদিক অনুসারীরা বলেন, শুরু থেকেই আমাদের নেতা আবুল হাসানাত অবদুল্লাহ্ মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ নৌকার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নিদের্শ দেওয়া হয়েছিলো।

আমরা নির্বাচনীয় কাজের অংশও নিতে গিয়ে ছিলালাম। কিন্তু প্রার্থীর আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ সাথে থাকা পানি প্রতিমন্ত্রীর অনুসারীরা আমাদের বিভিন্ন সময়ে প্রাচার প্রচারনা কাজে বাধা দিয়েছে। এমনকি বেশীর ভাগ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাভাপতি সাধারন সম্পাদকের নাজেহাল হতে হয়েছে। তারা পোস্টার লিফলেট চেয়ে পায়নি। তাদের সাথে উগ্রআচার আচারন করা হয়েছে। তাই বেশীর ভাগ ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরাতাদের কিছুটা গুটিয়ে রেখেছেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হুমাযুন কবির বলেন, আমাদের রাজনৈতিক অভিবাক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও আমাদের নেতা মেয়র সাদিক আবদুল্লার কড়া নিদের্শনায় আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে মেনেছি নৌকা বিজয়ী করতে। তাবে আমাদের নেতা সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে থাকলে আমরা আরো গতি পেতাম। মনবল বাড়তো।

১নম্বর ওয়াড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল বাশার সুমান বলেন, প্রাচার প্রচারনা ক্ষেত্রে আমরা প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোন ধরনে সহযোগীতা পাচ্ছি না। আমাদের অভিবাক বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ ও আমাদের নেতা সাদিক আবদুল্লাহ্ নির্দশে মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে প্রাচার প্রচারনায় নেমে পারেছি।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারন সম্পাদক প্রিন্স মাহমুদ বলেন, গতকাল ৫টা থেকে বিভিন্ন এলাকায় প্রাচরপত্র বিলিসহ ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছি। সন্ধ্যায় কাশিপুর বাজাার এলাকায় নৌকার পক্ষে একটি মিছিল বেড় করা হয়েছে।

এবারের সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের জন্য মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ ও তার চাচা আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতসহ ৮জনের মানোনয়ন দাবী করেন। মানোনয়ন প্রশ্নের শেষ হাসিটা হেসেছেন সাদিকের চাচা আবুল খায়ের। এতে করে তাদের মধ্যে বিরোধ আরো প্রকাশ্যে চলেন আসে।

আওয়ামীলীগ সূত্র জানায়, মানোনয়ন পাওয়াার পরে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের পশে ভীরকরেন সাদিক বিরোধী ও বরিশাল সদর আসনের সাংসদ পনিসম্পাদ মন্ত্রী কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারী নেতা কর্মীরা। তারা খোকন সেরনিয়াবাতকে কেন্দ্র করে একটি বলায় তৈরী করে। মানোনয়নের পরে গত ২১ এপ্রিল বরিশালে আসেন আবুল খায়ের আবদুল্লহ। তাকে নগরীর সেহোলে চত্বরে দেওয়া হয় নাগরীর সংবার্ধনা। সেখানে ডাকা হয়নি জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের।

এর নিয়ে দুই পক্ষে বিরোধ চরমে উঠে। বিরোধ শেষ পযর্ন্ত সংঘাতে পরিনত হয়। সাদিক ও খোকন অনুসারীদের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হন সাদিক অনুসারী মহানর ছাত্রলীগের আহবায়ক রইস আহমেদ মান্না। মান্নার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে খোকন অনুসারীরা। তাদের দায়ের করা মামলায় মান্না কারান্তরীন রয়েছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভেঙ্গে দেওয়া হয় সাদিকের নিয়ন্ত্রনে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি।

এদিকে আবুল খায়েরের পক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালানা ১৬ সদস্যর একটি কমিটি গঠন হয়। ওই কমিটিতে রাখা হয়নি নগরীতে বসবাসরত জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের। কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে সাদিক বিরোধী কয়েকজন বির্তকিত ব্যাক্তিকে। সাদিক বিরোর্ধীদের সাথে সংঘাত এড়াতে আওয়ামীলীগের জাতীয় পর্যায়ের কয়েকজন নেতার পরামর্শে মেয়র সাদিকের বাবা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ কে প্রধান করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ঠ উপদেষ্ঠা কমিটি গঠন করেন খোকন সেরনিয়াবাত। ওই কমিটির গঠনের পরে সংঘর্ষ সংঘাত বন্ধ হলেও নির্বাচনের কাজে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের বৃহত্তর অংশ নৌকা প্রতিকের পক্ষে কাজে নামেনি।

বরিশালে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্ বিজয় নিশ্চিত করতে চলতি মাসের ১৭ তারিখ গণভবনের বসে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালানরার জন্য কেন্দ্রয়ী একটি টিম গঠন করা হয। ওই টিমের প্রধান করা হয়েছে সাদিকের বাবা ও আবুল খায়ের বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ কে। কেন্দ্রয়ী যুগ্ম সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নসিমকে প্রধান সমন্বয়ক করে ৯সদস্যর একটি টিম গঠন করা হয়।

গত ১৬ তারিখ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা ডাকা হয। সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিলো নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ্র কিন্তু তিনি ওই সভায় যাননি। এতে কেন্দ্রীয় টিমের সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে গত মঙ্গলবার দুপুরে যুবলীগের কেন্দ্রয়ী কমিটির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, আফম বাহাউদ্দিন নাসিম। আরো উপস্থিত ছিলে সাদিক ঘনিস্ট হিসেবে খ্যাত মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও হাসানাত ঘনিস্ট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোহম্মদ ইউনুস। ওই দিন বিকেলই জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের হাসানাত ও সাদিক অনুসারীরা আনুষ্ঠানিক ভাবে নৌকার পক্ষে মাঠে নামেন।

মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজিব বলেন, খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষ থেকে ৩০ ওয়ার্ডে ৩০ ও ১২৪টি কেন্দ্রর জন্য কেন্দ্র পরিচালানা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকদের রাখা হয়নি। এমকি তারা নির্বাচনীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে গিয়ে অপমান ও অবমানার শিকার হয়েছে। ফলে তারাও প্রচারন প্রচারনরা থেকে বিরতী রয়েছে। আামাদের রাজনৈতিক অভিবাক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ নৌকা প্রতিক বিজয়ের জন্য সকল দন্ধ, বেধাভেদ ভুলে গিয়ে নৌকাকে বিঝয়ী করতে নিজেদের উৎসগকরতে বলেছেন। তার নিদের্শ অনুযায়ী আমরা জেলা ও মহানগর ও ৩০টি ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরা নৌকাকে বিজয়ের জন্য আমরা আমাদের সর্ব শক্তি নিয়ে প্রচার প্রচারনা কাজে নেমে পরেছি। তাবে আমাদের নেতা সাদিক আবদুল্লাহ্ বরিশালে থাকলে আমরা আওয়া উজ্জিবিত হতাম।

এর ধারাবিহতকায় সোমবার দুপুরে গৌরনদীর পৌরসভার কার্যলয়ে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাদের নিয়ে একটি সভাকরেন। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল বিকেল থেকে জেলা ও মহানগর একযোগে প্রচার কজে নেমে পরে।

জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাযুউম খান কায়সার বলেন, বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আজ থেকে নির্বাচনিয় প্রচার প্রচারনার কাজে অনুষ্ঠানিক ভাবে মাঠে নেমেছে। এর আগে ব্যাক্তি উদ্যোগে যে যার মত করে নৌকা প্রতিকের পক্ষে কাজ করতো।

দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামীলীগের মানোনিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর দলগতভাবে সকল প্রচারপ্রচারনা কার্যক্রম সোহেল চত্বরস্থ দলীয় কার্যলয় থেকে পরিচালানা করা হবে। পাশাপাশি প্রার্থী নিজে নির্বাচনীয় কার্যলয় থেকেও নির্বাচন পরিচালানার কাজ চলবে। নির্বাচনের প্রাচার প্রচারনার জন্য আমাদের অভিবাক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ একলাখ পিচ প্রচারপত্র (হ্যান্ড বিল) পঠিয়েছেন। তিনি বলেন, সকল মান অভিমান ঝেড়ে ফেলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে বলেছেন। এবং ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইতে বলেছেন। আমরা তার নিদের্শ অনুযায়ী কাজ শুরু করেছি।

বরিশার মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট একে এম জাহাঙ্গীরে হোসেন বলেন, নৌকা প্রতিকের প্রশ্নে আমরা আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ । আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। আমরা আগে থেকে বলে এসেছি, জেলা ও মহানগ্র আওয়ামলীগের বার্ধিত সভা করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারনার পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে। আমরা আজ (মঙ্গলবার) বিকেল থেকে একযোগে প্রচার প্রচারনার কাজ শুরু করেছি।