ডেস্ক রিপোর্ট: ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যায় কাপড়ের মাস্ক। এজন্য অনেকেই এ ধরনের মাস্ক পরেন। কিন্তু কাপড়ের মাস্ক করোনার ওমিক্রন ধরন ঠেকাতে পারে না বলে সতর্ক করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

তাদের মতে, বর্তমানে বেশিরভাগ কাপড়ের মাস্ক কেবলই ‘ফ্যাশনের উপকরণ’ হয়ে উঠেছে। ওমিক্রন নিয়ে সুখবর দিয়েছে লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের আরেক দল গবেষক।

তারা বলেছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে থাকার ঝুঁকি ডেল্টার তুলনায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ কম। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার এ ধরনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে।

করোনার বুস্টার ডোজ নিয়ে ধনী দেশগুলোর প্রতিযোগিতার কঠোর সমালোচনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলেছে, বুস্টার ডোজ দিয়েও কোনো দেশ মহামারি ঠেকাতে পারবে না; এতে বরং করোনা টিকার বৈষম্য আরও বাড়বে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনার খাওয়ার ওষুধ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, এএফপি ও রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান ও প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসের প্রফেসর ট্রিস গ্রিনহালগ জানিয়েছেন, কাপড়ের মাস্ক ভালো হতে পারে আবার ভয়াবহ খারাপও হতে পারে।

তবে তা নির্ভর করে মাস্কে কোন কাপড় ব্যবহার হয়েছে তার ওপর। তার মতে, একাধিক উপাদানে তৈরি তিন স্তরের মাস্ক মোটামুটি কার্যকর। কিন্তু বর্তমানে বাজারে ছেয়ে গেছে পাতলা এক কাপড়ের ফ্যাশন মাস্ক, যা কোনো কাজেই লাগবে না।

কানাডায় ইতোমধ্যেই এক স্তরের সুতির মাস্ক পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রফেসর গ্রিনহালগ বলেন, মূল বিষয় হলো কাপড়ের মাস্ক কোনো ধরনের হেলথ স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে তৈরি করা হয় না। এ কারণে এটি না পরাই উত্তম।

বুস্টার দিয়ে মহামারি কাটানো যাবে না-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, ধনী দেশগুলো বুস্টার ডোজ চালুর জন্য যে তড়িঘড়ি শুরু করেছে, তাতে ভ্যাকসিন বৈষম্য আরও বাড়বে।

আর এতে মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হবে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা ইতোমধ্যে পেয়েছেন তাদের বদলে সব জায়গার দুর্বলতম মানুষদের অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোনো দেশই বুস্টার দিয়ে মহামারি কাটাতে পারবে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ব্যাপক বুস্টার কর্মসূচি মহামারি অবসানের বদলে এটি দীর্ঘায়িত করতে যাচ্ছে।

যেসব দেশে ইতোমধ্যে উঁচু মাত্রার ভ্যাকসিন কাভারেজ রয়েছে সেখানে আরও ডোজ সরবরাহ করা হলে, ভাইরাসটি আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ার এবং পরিবর্তিত হওয়ার সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, সব দেশের অন্তত ৪০ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ নেওয়ার আগে বুস্টার প্রয়োগ বন্ধ রাখা উচিত।

ওমিক্রন নিয়ে সুখবর : করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে থাকার ঝুঁকি ডেল্টায় আক্রান্তদের তুলনায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ কম। লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের প্রকাশিত গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

যুক্তরাজ্যে ১ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়া পিসিআর টেস্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানান, গবেষণা চলাকালে বিভিন্ন তথ্যের গড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তারা দেখেছেন, ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনে সংক্রমিত হলে হাসপাতালে থাকার ঝুঁকি অনেক কম।

করোনার খাওয়ার ওষুধ অনুমোদন : ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী বড়ির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। বুধবার এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য এ ওষুধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ১২ বছর বয়সের নিচের কেউ এই বড়ি সেবন করতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আজ যে ঘটনা ঘটল, তা বিজ্ঞানের সক্ষমতা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ভাবন ক্ষমতার প্রতিচিত্র। ফাইজার যাতে এই বড়ির উৎপাদন বাড়াতে পারে, সেজন্য আইনি সহায়তা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

দ. আফ্রিকায় কমছে ওমিক্রন : দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসা ইঙ্গিত দিচ্ছে হয়তো ওমিক্রন চূড়ায় পৌঁছে গেছে।

১৬ ডিসেম্বর একদিনে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় ২৭ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা নেমে আসে ২১ হাজারে। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ গাউটেংয়ে সবার আগে সংক্রমণ কমা শুরু হয় এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।

দিল্লিতে বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা : ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বড়দিনের উৎসব ও নববর্ষসহ অন্যান্য উদযাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মহারাষ্ট্র রাজ্যের পর দিল্লিতে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। গেল ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ১৫টি রাজ্যে আরও ১৩ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে।-যুগান্তর