Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব নিত্যপণ্যের বাজারে

পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব নিত্যপণ্যের বাজারে

45

ডেস্ক রিপোর্ট: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর জেরে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। বিশেষ করে সবজির দাম বেড়েছে। এমনিতেই গত কিছুদিন ধরে যখন সয়াবিন তেল, পামঅয়েল, চাল, আটা, ময়দা, চিনি, ডিমসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি তখন জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি ও এ কারণে ডাকা ধর্মঘটের কারণে পণ্যের দাম আরো বাড়লে বড় ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হবে স্বল্প আয়ের মানুষদের।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, জ্বালানী তেলের দাম বাড়ার কারণে কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বাড়বে। ফলে পণ্যের দাম বাড়বে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। এছাড়া আটা, ময়দা ও শুকনা মরিচের দামও বাড়তি। উল্লেখ্য, গত বুধবার প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর গতকাল ফার্নেস অয়েলে বাড়ানো হয়েছে লিটার প্রতি ৩ টাকা। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ের উপর।

সরকারের বিপনন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকাল তাদের দৈনন্দিন খুচরা বাজারদরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন করে বাজারে আটা, ময়দা ও শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি প্যাকেট আটায় ৩ টাকা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ও প্যাকেট ময়দায় ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আলুর কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। দেশী শুকনা মরিচের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৪০ টাকায়। সরকারের এ বিপনন সংস্থাটি সবজির দরের বাড়া-কমার তথ্য প্রতিবেদনে তুলে না ধরলেও খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গতকাল বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে শিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ঢেঁরস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও করল্লা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি আকারভেদে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও সবজিভেদে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।

সবজির দাম চড়া প্রসঙ্গে শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী হেলাল বলেন, মৌসুমের শুরুতে বাড়তি চাহিদার কারণে সবজির দাম একটু বেশীই থাকে। এছাড়া বন্যার কারণেও এবার সবজির দাম তুলনামূলক বেশী। তবে জ্বালানী তেলের দাম বাড়া ও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সবজির দামে প্রভাব পড়েছে জানিয়ে কাওরানবাজারের ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, বগুড়া থেকে ঢাকায় আসতে একটি ট্রাক ভাড়া আন্তত: ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বাড়বে। এই বাড়তি ভাড়াতো সবজির দামের সাথেই যুক্ত হবে। তাই শীতের ভরা মৌসুমে সবজির দাম কতটুকু কমবে বুঝতে পারছি না।

সবজির পাশাপাশি মাছের বাজারও চড়া। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে চাষের বড় আকারের কাতল, রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া চাষের শিং ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কৈ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, চিংড়ী ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, টোনা ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ৫’শ থেকে ৬’শ গ্রাম ইলিশ ৬’শ থেকে ৭’শ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর আব্দুল্লাপুর মাছের আড়তের ব্যবসায়ী ইয়াছিন হোসেন বলেন, এবার বাজারে ইলিশের সরবরাহ তুলনামূলক কম। যে কারণে ইলিশের দাম বেশী। আর ইলিশের দাম বেশী হওয়ার কারণে অন্যান্য মাছের দামও বেশী।

তবে ভোক্তাদের জন্য সুখবর হলো, সপ্তাহ শেষে গতকাল ব্রয়লার মুরগীর দাম আরো কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা। আর লেয়ার মুরগীর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এছাড়া ডিমের দামও কিছুটা কমেছে। ফার্মের লাল ডিমের হালিতে ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকায়।-ইত্তেফাক