Home কৃষি হাইব্রিড ধানের আবাদ নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

হাইব্রিড ধানের আবাদ নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা

58

ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত কয়েক বছর ধরে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন। পাশাপাশি ধানের বাম্পার ফলন ও বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় বেজায় খুশি কৃষকরা। এজন্য স্থানীয় কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে ধান আবাদ করেছেন।
তবে প্রচলিত ধান আবাদ করে কৃষকরা যখন খুব বেশী লাভের মুখ দেখতে পারছে না তখন বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনষ্টিটিউটর উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) ব্রি ধান আবিস্কারের ফলে কৃষকদের মাঝে বেশ সারা জাগিয়েছে। কৃষকরা এখন হাইব্রিড ধানে আশার আলো দেখতে পারছেন।
উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদে ফলন ভালো ও অন্য প্রচলিত ধানের চাইতে বেশী হওয়ায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, আগে যেখানে প্রচলিত ধান আবাদ করে বিঘা প্রতি ১৪ থেকে ১৫ মণ পাওয়া যেতো এখন উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদে তারা পাচ্ছেন ২২ থেকে ২৩ মণ ধান। এই ধান মানুষের জিঙ্ক ও প্রোটিন ঘাটতি মোকাবেলা এবং কৃষকদের অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বেশ সহায়ক হচ্ছে। জেলার আখাউড়ায় গত আমন মৌসুম থেকে এ মৌসুমে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বেশী ধান আবাদ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষ আবাদে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। রোপনকৃত জমির মধ্যে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমি উন্নত ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বীজ রয়েছে। তবে এ মৌসুমে সরকার কর্তৃক প্রায় ২৫০ জন কৃষকের মাঝে উন্নত ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বীজ ও সার দেওয়া হয়। উচ্চ ফলনশীল ধান বীজের মধ্যে রয়েছে ব্রি ৮৪, ৮১, ৬৩,৮৮, ৯৬, সুবর্ণ, হীরা জাগরনীসহ নানা প্রজাতির ধান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান আবাদে জমি প্রস্তুত, চারা উত্তোলন ও রোপনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতকে উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পযন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ হাল চাষ দিচ্ছেন, কেউবা জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণে কাজ করছেন। কেউ দিচ্ছেন সেচ।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষক মো. ফরিদ মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে ১৩ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। এরমধ্যে ৯ বিঘা জমিতে তিনি উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করেন বলে জানায়। প্রচলিত পদ্ধতিতে ধান আবাদ করায় প্রতি বছর তার অনেক টাকা লোকশান গুনতে হয়। কারণ কৃষি উপকরণসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধি ও ফলন কম হওয়ায় এ ক্ষতি হয়। তাই গত ২ বছর ধরে তিনি উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করায় অনেক লাভবান হচ্ছেন।
কৃষক মো. সবুজ মিয়া বলেন, প্রচলির ধান আবাদ করলে বিঘা প্রতি ১৩-১৪ মণের বেশী ধান পাওয়া যায় না। তাই উচ্চ ফলসীল ব্রি-৮৮,৮৪ হাইব্রিড জাতের ধান এ মৌসুমে তিনি আবাদ করছেন। এ ধান বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৩ মণ পাওয়া যায় বলে জানায়। আগে ধান চাষে অনেক টাকা লোকশান গুনতে হতো। হাইব্রিড ধান আবাদে ফলন ভালো হওয়ায় এ চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, এ উপজেলায় বেশীভাগ জমিতে বোরো ধান আবাদ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। শীতের কারণে বোরো ধান আবাদ পিছিয়ে নেই কৃষকরা। দিন দিন উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ গত কয়েক বছরের তুলনাই অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে এবং সেচ ব্যবস্থা ঠিকমতো ভাল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।