Home কৃষি জামালপুরে ভুট্টা আবাদে লাভবান কৃষকরা

জামালপুরে ভুট্টা আবাদে লাভবান কৃষকরা

11

সুমন আদিত্য, জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের চরাঞ্চলে অধিকাংশ গ্রামে ভুট্টা আবাদ দিন দিন বেড়েই চলছে। ভুট্টার কঁচি গাছের সবুজ সমারোহে মেতে উঠে মাঠগুলো। উৎপাদন খরচ কম ও অধিক ফলনের কারণে কৃষকরা আরো উৎসাহিত হচ্ছে এই ভুট্টা আবাদ। ভূট্টা আবাদের জন্য খুব একটা উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না বলে জানায় কৃষকরা।

জানা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা ভুট্টার গাছ ৫ থেকে ৬ টাকা ধরে বিক্রি করে কৃষকরা যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে সাইলেজ এবং ব্যবহার হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ গো-খাদ্য হিসেবে। বলা হয় যে, ভুট্টার সাইলেজ আয়ুর্বেদিক ওষুধের মত। দিন যত যায় তত এর গুনাগুন বাড়তে থাকে। এই সাইলেজের টেস্ট হচ্ছে এসিডিক সুইট টেস্ট এর মত যার মানে হচ্ছে টক-মিষ্টি ধরনের, যার জন্য গরু এটা প্রচুর পরিমাণে খেয়ে থাকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর এবং মেলান্দহকে বিভক্তকারী ঝিনাই নদীর দুই পাশ দিয়ে আবাদ হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা। বর্তমানে মেলান্দহ উপজেলাসহ চরাঞ্চলবাসীর জনজীবনে ভুট্টা এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুধু ভুট্টার ক্ষেত। ভুট্টা ক্ষেতে থাকা অবস্থায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অল্প খরচে ভাল দাম পাচ্ছে ভুট্টা আবাদীরা। বিক্রি করতেও খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না।

এলাকার কৃষকরা জানান, ধান, মরিচ, আলু আবাদে তাদের যে খরচ পরিশ্রম করতে হতো ভুট্টা আবাদে তেমনটি লাগে না। কম খরচে ভালো দাম আর খরচ কম হওয়ায় তারা ভুট্টা আবাদ করছেন। আর ভূট্টা এখন ১২ মাসই আবাদ করা যায়। প্রতি একরে ১২০ থেকে ১৩০ মণ ভুট্টা পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে দামও বেশি। প্রতিমণ ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে বারশ টাকা। এতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করে লাভ হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা।

পুষ্টিবিদদের তথ্য মতে, গো-খাদ্য হিসেবে তৈরি কৃত ভুট্টার এই সাইলেজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও মিনারেল এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।এই খাদ্য গ্রহণের ফলে দুগ্ধ প্রদানকারী গাভী গুলোর দুধ প্রদান অনেক গুণ বেড়ে গেছে ।
কম সময় ও স্বল্প অর্থ ব্যয় হওয়ার ফলে কৃষকদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্থানীয় চাষী গাজী মিয়া জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদে তার খরচ হয়েছে বিশ থেকে বাইশ হাজার টাকা বিক্রির আশা করছেন এক লাখ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত।

আরেকজন চাষী জামিল মিয়া জানান, প্রতি বিঘা ভুট্টাতে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে বিক্রি করা যায় বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত। আবাদ করাও সহজ। বিক্রি করতেও ঝামেলা নাই।

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, ভুট্টা চাষিরা অনেক বেশি লাভবান হওয়ার কারণ এর ব্যবহার অনেক বেড়েছে। ভুট্টার দানাকে আমরা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি এবং মুরগির খাদ্যতেও ইহা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চরাঞ্চল গুলোতে প্রাণীর খাবারের অভাব থাকার কারণে কৃষকরা ঘাস হিসেবেও ইহা বিক্রি করে থাকে।ভুট্টার অতিরিক্ত অংশ জ্বালানি হিসেবে এটার চাহিদা বেশি থাকার কারণে কৃষক খুব তাড়াতাড়ি বিক্রি করতে পারছে।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, আমরা কৃষকদের প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ভুট্টার বীজ প্রণোদনা দেই এবং বিভিন্ন রোগ বালাই হলে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে থাকি।