Home সারাদেশ সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে নির্বিঘ্নে মাছ ও কাঁকড়া আহরণের অভিযোগ

সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে নির্বিঘ্নে মাছ ও কাঁকড়া আহরণের অভিযোগ

69

কয়রা উপজেলা প্রতিনিধি, খুলনা: বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন পাটকোষ্টা, কাগাদোবেকী, ভোমরখালী, নীলকোমল টহল ফাঁড়ির আওতাধীন খাল ও সুন্দরবনের তৎসংলগ্ন সংরক্ষিত এলাকার নদ-নদীতে শত শত জেলে নির্বিঘ্নে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অভিযোগ উঠেছে। বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে প্রতি গোণে নৌকা প্রতি ঘুষ দিয়ে জেলেরা ওই অভয়ারণ্যে অবাধে বিচরণ করে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে। অল্প সময়ে বেশি মাছের আশায় বিষ দিয়ে মাছ শিকারের অভিযোগও রয়েছে অসাধু জেলেদের বিরুদ্ধে। এতে নষ্ট হচ্ছে সুন্দরবনের মাছের প্রজননক্ষেত্র। ধ্বংস সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য।

তবে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট স্টেশন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। অভয়ারণ্যে মাছ ধারার দায়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলেকে আটক করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান ও মামলা অব্যাহত রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন টহল ফাঁড়িগুলোর অধীনে বেশ কয়েকটি খাল মাছের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য মাছের খালগুলোকে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকা পাটকোষ্টা টহল ফাঁড়ির আওতাধীন চেরাগখালী ঝালিয়াখাল, মোরগখালী কাগাদোবেকী খাল, খাল, টহল ফাঁড়ির আওয়াতাধীন কালিরচর, শিসখালী, ছদনখালী, কাগানদী, মরাকাগা, কেওড়াতলী খাল, ভোমরখালী টহল ফাঁড়ির আওতাধীন কুকুমারী, ভোমরখালী খাল, খলিশাবুনিয়া, বড়কুকুমারী খাল, নীল কোমল অভয়রণ্য কেন্দ্রে টহল জোরদার থাকলেও বঙ্গবন্ধুর জ্বর, বন্ধের খাল, কেওড়াসুতি খাল, কলাতলা খালে ঢুকে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে বেশ কয়েকটি জেলে গোষ্ঠী।

অধিকাংশ জেলে কোম্পানী নাম ধারী অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই কোম্পানীরাই বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, হরিণ শিকারসহ জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস করে চলেছে। এই মাছ কোম্পানীরা সব সময় জেলে ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততাকারী হিসাবে কাজ করে থাকে। মাঝে মধ্যে বন বিভাগের লোক. দেখানো অভিযানে কিছু জেলেকে আটক করা হলেও অধিকাংশ জেলে ও কোম্পানী নাম ধারী অসাধু ব্যবসায়ীরা থেকে যাচ্ছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

এ বিষয়ে সুন্দরবনের নীলকমল অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক নয়। আমার নীল কোমল অভয়ারণ্য এলাকায় নৌকা ঢুকিয়ে মাছ কাঁকড়া ধরার কোন সুযোগ নেই। আমরা কঠোর অবস্থানে আছি আমার ভয়ে এ অঞ্চলে কোন জেলে নৌকা ঠোকাতে সাহস পায় না।

সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ডক্টর আবু নাসের মহসীন হোসেন জেলেদের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ। সুন্দরবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সংরক্ষিত এলাকায় মাছ শিকার বন্ধে বনবিভাগের লোকজন সবসময় তৎপর রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।