Home জাতীয় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি শ্রীউলায় ভাসমান সেতুর উদ্ভোধন

সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি শ্রীউলায় ভাসমান সেতুর উদ্ভোধন

50

সাতক্ষীরা থেকে শ্যামল বিশ্বাস: সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে আম্ফান ক্ষতি গ্রস্ত এলাকায় ভাসমান সেতু উদ্বোধন করেন।
একতাই বল’ প্রবাদের প্রমাণ করেছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি হাজরাখালি বাওড় বেষ্টিত হাজরাখালি গ্রামবাসী। ‘দেশের চতুর্থ দীর্ঘতম ভাসমান সেতু’ নির্মাণের মধ্যে দিয়ে তারা জয় করেছেন হাজরাখালি বাওড়।

শনিবার উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে ভাসমান সেতুর ওপর দিয়ে হালকা যানবহন ওলোক চলাচল শুরু হয়। এদিন পড়ন্ত বিকেলে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এবং ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ‍্যমে ভাসমান সেতুটির উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ বি এম ডি মোস্তাকিম।

জানা যায়, উপজেলার হাজরাখালি বাজার সংলগ্ন জলামহল হাজরাখালি বাওড় বেষ্টিত এ হাজরাখালি গ্রাম। নদের তীরবর্তী হাজরাখালি গ্রাম থেকে বাওড়টির উৎপত্তি হয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাওড়টি প্রায় ৩ বর্গ কিলোমিটার হাজরাখালি গ্রামকে বেষ্টিত করে ওই গ্রামেরই আরেক প্রান্ত খোলপেটুয়া নদের তীরবর্তী কোলা গ্রামে শেষ হয়েছে।

প্রায় ২০ হাজার জন অধ্যুষিত গ্রামটিতে রয়েছে ১টি ওয়ার্ড। গ্রামবাসী যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে নৌকায় পারাপার হয়ে আসছিল।

গ্রামবাসীর চেষ্টায় এ দুর্ভোগের অবসান ঘটলো বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন। এ সময় ওই গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার চোখে-মুখে আনন্দের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠতে দেখা যায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত গ্রামবাসীর অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আবুল কাশেম নামের এক বয়োবৃদ্ধ আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, জীবন সায়াহ্নের পড়ন্ত বেলায় এমন দৃশ্য দেখে যেতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এ সময় হাজরাখালি বাওড়ের দু’কূলে উৎসুক নানা বয়সীর নারী-পুরুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

ভাসমান এ সেতু নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা হাজরাখালি গ্রামবাসী। সেতু তৈরীর উদ্যোগে মিটিং করা হয়। তাতে সাড়াও মেলে আশাতীত। সরকারি অর্থায়নে শুরু করা হয় ৭শ ফুট দৈর্ঘ্যের ভাসমান সেতু নির্মাণের কাজ। সরকারি অর্থায়নের বাইরেও অনেক কৃষক, শ্রমিক সামিল হন তাদের সঙ্গে। ৩ফুট প্রস্থের সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে ২৬৬টি বড় আকারের প্লাস্টিকের ব্যারেল। যা সংযুক্ত রাখার জন্য বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যারেলের ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য দেওয়া হয় বাঁশ। বহু টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ভাসমান এ সেতুটি।

তবে, বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাসমান সেতুটির দু’পাশে ঢালাই সিড়ি নির্মাণ করতে হবে। এতে আরও প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে বলে এলাকাবাসির দাবি।

চলতি বছরের ৫ ই মে থেকে ভাসমান সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের পর শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সেতুটির।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আশাশুনি উপজেলা আওয়ামীলীগ এর যুগ্ন- সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা সাকিলের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য জি এম জালালউদ্দিন ইয়াসিন আলি, নওয়াবেকি গনমুখি ফাউন্ডেশনের কালিবাড়ি শাখা ব‍্যবস্তাপক আব্দুল মালেক , উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায়হান সাদ, শ্রীউলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান পল্টু, সাধারণ সম্পাদক বাবলু, রেডিয়েন্স এন্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ,বিভিন্ন ওয়ার্ডের বতর্মান ও সাবেক ইউপি সদস্য, আওয়ামীলীগ নেতা আবু সাইদ সরদার বিশিষ্ট সমাজ সেবক সজ্ঞায় মিশ্র, সহ এলাকার কয়েক শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।