Home জাতীয় মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ

মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ

27

স্টাফ রিপোটার: গার্মেন্ট শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনসমূহ অবিলম্বে মজুরি বোর্ডের কার্যক্রম সম্পাদন করে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে চলতি মাসের বেতন, পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসসহ সকল বকেয়া পরিশোধের দাবি জানানো হয়। ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল ২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে এবং গার্মেন্ট ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীমের পরিচালনায় আজ ২০ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম আবু সাঈদ, ওএসকে গার্মেন্টস এ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দুলাল সাহা, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা তাসলিমা আক্তার, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ভট্টাচার্য, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালে বাজার পরিস্থিতি ও শ্রমিকপক্ষের দাবি উপেক্ষা করে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নি¤œতম সমুদয় মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। মুদ্রাস্ফীতির হার সম্পর্কে সরকারি বয়ান অনুসারেই একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, বর্তমান বাজারে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে নীরব দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অতীতের সকল নজির অতিক্রম করেছে। শ্রমিকের জীবন বাঁচানোর পদক্ষেপ হিসেবেই মজুরি বোর্ডের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে অবিলম্বে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, পৃথিবীর সর্বোচ্চ রপ্তানী করেও সর্বনি¤œ মজুরি পাওয়া শ্রমিকরা আজ তিল পরিমাণ মাসিক আয় নিয়ে সাগর সমান জীবন ব্যয়-এর মুখোমুখি অসহায় দাঁড়িয়ে আছে। বিস্ফোরণের পূর্বেই সরকার মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে তা সব পক্ষের জন্যই ভালো হবে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে গার্মেন্ট শ্রমিকের নি¤œতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, ২৫ জুনের মধ্যে চলতি মাসের বেতন ও পূর্ণাঙ্গ বোনাস পরিশোধ করা না হলে ঈদের আগে শ্রমিকদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়া হবে। বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বেসিকের সমান বোনাসের দাবি অন্যান্য বছরের মত যদি এবারও উপেক্ষা করা হয় তার পরিণতি ভাল হবে না। সমাবেশ থেকে সংকট সৃষ্টির পূর্বেই সরকারি সংস্থাসমূহকে এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, দেশে সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন গার্মেন্ট মালিকরা কিন্তু শ্রমিকদের পাওনার কথা আসলে তারাই সবচেয়ে বিত্তহীন হয়ে যান। অথচ মালিকরা কেনা-কাটা ও ঈদ উদযাপনের জন্য কানাডা-আমেরিকা-মালয়েশিয়ায় পারি জমান। প্রতি বছর ঈদ উৎসবের সময় গার্মেন্ট শ্রমিকরা উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়।
সমাবেশ থেকে বেপরোয়া শ্রম শোষণের স্বার্থে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ধর্মঘট নিষিদ্ধের বিধান সম্বলিত অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল ২০২৩ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, সরকার শ্রমিকদের সবটুকু গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার মধ্য দিয়ে দেশের শ্রম খাতকে যে সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের ক্ষেত্রে পরিণত করতে যাচ্ছে তা সর্বাত্মক শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা হবে।
সমাবেশ শেষে শ্রমিকদের একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে।