Home রাজনীতি মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতার স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু–মেনন

মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতার স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু–মেনন

25

স্টাফ রিপোটার: “মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতার স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভাসানীর কাছে তাই বাঙালির ঋণ কিছু কম নয়। কিন্তু ঋণ স্বীকার করা তো দূরের কথা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে তাঁকে স্মরণটুকু পর্যন্ত করা হয়নি। জাতীয় পর্যায়ের ন্যূনতম কোন অনুষ্ঠানে নয় বরং তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীর শ্রদ্ধানুষ্ঠান রাজনৈতিক মারামারিতে রূপ নিয়েছে। দলীয় অহমিকা ও অন্ধত্ব ছাড়া ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ সেখানে কাজ করেনি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্টদের অগ্রবর্তীস্থান যখন এখন ইতিহাস স্বীকার করছে। এমনকি ভারতের স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর উৎসবে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি প্রেসিডেন্ট কমিউনিস্টদের সেই ভূমিকার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন তেমনি স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে স্বাধীনতা সংগ্রামে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বদানকারী ভূমিকাকেও স্বীকার করা হবে। সেদিন আমরা থাকব না, কিন্তু নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিহাসকে সঠিক জায়গায় স্থাপন করবেন।”
আজ ২০ নভেম্বর বিকেল ৩টায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর কর্মসূচিতে মওলানা ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি একথা বলেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ঐ আলোচনা সভায় ‘মওলানা ভাসানী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ড. মেসবাহ কামাল।
মেনন বলেন, যখন কেউ ভাবতেই পারেনি তখন ১৯৪৮-এ পূর্ব পাকিস্তান পরিষদে মওলানা ভাসানী পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের সুনির্দিষ্ট রূপ তুলে ধরেছিলেন। সেটাই অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল যুক্তফ্রন্টের একুশ দফায় আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে সোহরওয়াদী যখন সংখ্যাসাম্য নীতি মেনে নিয়েছিলেন, পূর্ব বাংলার স্বায়ত্ত্বশাসনকে পায়ে দলে ছিলেন, মওলানা পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রকারী শাসকগোষ্ঠীকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন না পেলে ‘আসসালামু আলাইকুম’ জানাতে দ্বিধা করবেন না বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে দল ছাড়তে হয়েছিল, তার সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেক্রেটারি মুজিবের সাথে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছিল। আবার সেই মুজিব যখন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের ৬ দফা রূপরেখা তুলে ধরায় ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দী’ তখন তিনিই আটষট্টির ডিসেম্বরে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অর্গল খুলে দিয়েছিলেন। ষোলই ফেব্রুয়ারি, পল্টনে আয়ুবকে এই মর্মে হুঁশিয়ার করেছিলেন যদি শেখ মুজিবকে মুক্তি দেয়া না হয় তা’হলে বাস্তিল দুর্গের মত ক্যান্টনমেন্ট ভেঙে মুজিবকে মুক্ত করে আনবেন। সেনা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়লেও মওলানা ভাসানী স্বাধীনতার স্বপ্নকে ছাড়েন নাই।