Home সারাদেশ বেপরোয়া সিন্ডিকেট চক্র, বিষ দিয়ে মাছ ধরা অব্যাহত ,আটক ১,থানায় মামলা

বেপরোয়া সিন্ডিকেট চক্র, বিষ দিয়ে মাছ ধরা অব্যাহত ,আটক ১,থানায় মামলা

31

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি: সুন্দরবনে মাছ ধরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার মধ্যেও সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বিষ দিয়ে মাছ শিকার অব্যাহত রয়েছে।সোমবার ভোর রাতে উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের কাটকাটা বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে ওমর ফারুক (৩৭) নামে এক মাছ ব্যবসায়ী( নিষিদ্ধ সময়) ৫০ কেজি বিষযুক্ত চিংড়িসহ আটক করে কয়রা থানা পুলিশ।এ ব্যাপারে কয়রা থানায় ২ জনকে আসামী আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞত করে একটি মামলা হয়েছে। গত রবিবারও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩০ কেজি চিংড়ি মাছ আটক করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নিষিদ্ধ সময় থাকার পরও কয়রা মৎস্য আড়ৎ গুলোতে প্রতিদিন ১০০০-১৫০০ কেজি সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। আড়ৎতের ৪/৫ টি মৎস্য ব্যবসায়ী তারা নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের প্রলোভন দেখিয়ে বেশি লাভের আশায় তাদের দাদন (অগ্রিম টাকা) দিয়ে সুন্দরবেন পাঠিয়ে বিষ দিয়ে ধরা মাছ তাদের আড়ৎ এ এনে বেশি দামে বিক্রয় করেন। সতেচন মহল বন্ধের সময় সুন্দরবনের বিষ দিয়ে ধরা মাছ ধরায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। উপজেলার আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ একাধিকবার বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা বাড়ায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও তা বন্ধ হয়নি।

একাধিক প্রকৃত জেলের অভিযোগ, অসাধু বন কর্মকর্তা দের টাকা ইনকামের বড় উৎস্য সুন্দরবন বন্ধের এই তিন মাস। তারা টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেন। যারা টাকা না দেয় লোক দেখানোর জন্য তাদেরকে ধরেন। বন বিভাগ সুযোগ না দিলে কোন ভাবে সুন্দরবনে ঠুকে মাছ ধরা সম্ভব নয় বলে জানান তারা।

কয়রা পরিবেশ বাদী সংগঠণ সবুজ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, একটি স্বার্থনেশী মহল ব্যক্তি স্বার্থে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য ধ্বংসে মেতে উঠেছে। তারা এই বন্ধের সময় জেলের সুন্দরবনে পাঠিয়ে বিষ প্রয়োগ করে হাজার হাজার কেজি মাছ ধরছে। বন বিভাগ সতর্ক ও কঠোর হলে কখনওই এই দুষক্রীতিরা সুযোগ পায় না। এই দায় বন বিভাগের।

কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, সুন্দরবনসহ আশেপাশের বিভিন্ন নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধ করতে পুলিশের কঠোর অভিযান চলছে।চিংড়িসহ আটক ও মামলা ও হয়েছে থানায়। বেশ কিছুদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদী এবং খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা ল করা গেছে। কয়রা বাজারের এক শ্রেণির অর্থলোভী মৎস্য ব্যবসায়ী ও কোম্পানী নাম ধারী মৎস্য ব্যবসায়ীরা দুর্বৃত্তদের ও অসাধু জেলেদের হাতে বিষ দিয়ে এসব খালে মাছ শিকারে পাঠাচ্ছে। বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও সকল অপরাধ বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে৷

বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধে বন বিভাগ কার্যকর কী পদপে নিয়েছে—এ প্রশ্নের উত্তরে সুন্দরবন পশ্চিশ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসিন জানান, বিষ দিয়ে মাছ শিকারসহ নানা অনিয়ম রোধে বনে স্মার্ট প্যাট্রলিং অব্যাহত আছে। গত ২ মাসে খুলনা রেঞ্জে অবৈধ ভাবে সুন্দরবনে ঠুকে মাছ শিকার করার অপরাধে ৬২ টি মামলা, ৬৩ টি নৌকা, মটরসাইকেল ৪ টি,ইঞ্জিন চালিত ভ্যান একটি, ২৩ জনকে আটক, ৬৩৯ কেজি চিংড়ি জব্দ, ১৬ কেজি হরিণের মাংস ,শুঁটকি চিংড়ি ৩৫ কেজি, কাঁকড়া ১৯০ কেজি( অবমুক্ত), হরিণ মারার ফাদ ৬০০ টি সহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।তিনি বলেন,কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরায় তি হচ্ছে অনেক বেশি। কারণ কীটনাশকে সব প্রজাতির রেণু পোনা মরে সুন্দরবনের খাল-বিল মাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে। এসব বন্ধে সুন্দরবনকে আধুনিক নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কাজ চলছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।