Home সারাদেশ লোকচক্ষুর অন্তরালে ঘৃণিত ‘রাজাকার ভাস্কর্য’

লোকচক্ষুর অন্তরালে ঘৃণিত ‘রাজাকার ভাস্কর্য’

20

ডেস্ক রিপোর্ট: মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকারদের ঘৃণা প্রদর্শনে কুষ্টিয়ায় নির্মিত দানবাকৃতি ঘৃণিত ‘রাজাকার ভাস্কর্যটি’ অযত্ন-অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। জায়গা দখলসহ দীর্ঘকাল সংরক্ষণের অভাবে ভাস্কর্যটি এখন লোকচক্ষুর অন্তরালে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার স্থপতি ইতি খানের ডিজাইন ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শহরের প্রবেশ মুখ মজমপুর গেট চত্বরে ট্রাফিক পুলিশ বক্সসংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার ওপর ঘৃণিত রাজাকার ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়। ভাস্কর্যটিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজাকার-হায়েনাদের মুখোশ উন্মোচনসহ ঘৃণ্য অপকর্মের কর্মের চিত্র রং-তুলির আঁচড়ে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। স্টিলের পাত ও লোহার অ্যাঙ্গেলে তৈরি দানবাকৃতির ভাস্কর্যটি জনাকীর্ণ এলাকায় স্থাপিত হলেও সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারিয়ে তা এখন বিলীন হওয়ার উপক্রম। ভাস্কর্যটি এখন আড়ালে পড়ে গেছে। পথচারীদের চোখে আর পড়ে না। এছাড়া ভাস্কর্যটির সামনে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার চিহ্নিত সব রাজাকার-আলবদরদের তালিকা সম্বলিত সাইনবোর্ডটি উধাও হয়ে গেছে। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা প্রদর্শিত রাজাকারদের নামের তালিকার সাইনবোর্ডটি বিনষ্ট করেছে বলে স্থানীয়রা জানান। ঘৃণা প্রদর্শনের নিমিত্তে সারা দেশের মধ্যে সম্ভবত কুষ্টিয়াতেই সর্বপ্রথম ও একমাত্র ‘রাজাকার ভাস্কর্য’ নির্মিত হয়েছে।
২০০৯ সালের ১৭ এপ্রিল বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার উপস্থিতিতে ভাস্কর্যটিতে মুহুর্মুহু পাথর নিক্ষেপ করে ঘৃণা প্রদর্শনের পর সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা মেজর জেনারেল (অব.) সিআর দত্ত, সমন্বয়ক লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ ও মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদসহ প্রতিনিধিদল ‘ঘৃণিত রাজাকার’ ভাস্কর্যটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ভাস্কর্য চালু হওয়ার শুরুতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসতেন ‘রাজাকার চত্বরে’ কিন্তু এখন দেখা মেলে না দর্শনার্থীদের ।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা খুররম শাহরিয়ার জানান, বাংলাদেশের মধ্যে কুষ্টিয়াতেই প্রথম একমাত্র ঘৃণিত রাজাকার ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু ভাস্কর্যটি সংরক্ষণে অযত্ন-অবহেলা ও রাজাকারদের প্রদর্শিত তালিকা সাইনবোর্ডটি উধাও হওয়ার ঘটনাটি রহস্যময় বলে তিনি জানান। ভাস্কর্যটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ-সংস্কারের দাবি করেন তিনি। কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ রফিকুল আলম টুকু জানান, নতুন প্রজন্মকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের অপকর্ম তুলে ধরতে এই ভাস্কর্যটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ইতিপূর্বে বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইত্তেফাক