Home সাহিত্য ও বিনোদন বিজয় একাত্তর

বিজয় একাত্তর

36

পলাশ কলি হোসেন শোভা: ভোরের আযানের সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায় রানুর। রোজ এই সমশটায় উঠে সে পড়তে বসে। তখনও ভাই ভাবী ওঠেনি। বাবা মা ভাই বোনদের ছেড়ে বড় ভাইয়ের সাথে ঈশ্বরদীতে থেকে পড়াশোনা করছে। বড় ভাই শফিক এখানকার হাই স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক। সবার স্বপ্ন রানু এসএসসি তে ভালো রেজাল্ট করে কলেজে পড়বে। তারপর ঢাকায় ডাক্তারী পড়ে অনেক বড় ডাক্তার হয়ে গ্রামে ফিরে মানুষের চিকিৎসা করবে।
সূর্য ওঠার আগের পুবের রক্তিম আকাশটাকে খুব ভালো লাগে তার। উঠানে গিয়ে আকাশ দেখে। ভাবী সাবেরা বেগম ততক্ষণে পাশে এসে দাড়ায়।
রানু আজ স্কুল থেকে ফেরার পথে রাজুদের বাসায় যাবি। ওর মা কে আসতে বলবি।
ওনাকে কি দরকার পড়লো?

সব কথা শুনতে নাই রানু, যা বললাম তাই করবি।
আচ্ছা , বলেই পুকুর পাড়ের দিকে চলে যায় রানু।
শফিক অনেক সকালে স্কুলে চলে যায়। রানু বেলা করে যায় সই চম্পার সাথে।দশটা বাজার আগেই চলে আসে চম্পা , খুব বেশি দূরে নয় স্কুল। গল্প করতে করতে কখন যে স্কুলের ভেতর ঢুকে পড়ে খেয়ালই থাকেনা।
দুজনে গল্প করছে আর হাসছে, হঠাৎ চম্পা ওকে ইশারায় ডানদিকে তাকাতে বলে, তাকাতেই রানু দেখতে পায় একটা ছেলে হোন্ডায় হেলান দিয়ে তাদের দেখছে,
তখন গ্রামের ছেলেরা এভাবে হোন্ডা চালাতো না। অবস্হাপন্ন ঘরের ছেলেরাই কেবল হোন্ডা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়

ধুর বাদ দে, বলেই রানু জোরে জোরে সামনের দিকে হাটতে থাকে। দুই বন্ধু ভাবনায় পড়ে যায় ছেলেটি এখানে কি করছিলো?রাতে শুয়েও ভেবে পায়না রানু। মনে হতে থাকে মাএ তো ক্লাস এইটে পড়ছে। এখনই এসব উৎপাত ঠিক নয়। সকালে ভাবিকে বলতে হবে। নয় ছয় ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন একই জায়গায় ছেলেটি দাড়িয়ে। আক ছেলেটি ওদের সামনে এসে পথ আগলে দাড়ায়,
তোমার নাম কি?
ভেবাচেকা খেয়ে যায় রানু বলে,
আমার নাম দিয়ে আপনার কাজ কি?এখানে এসে রোজ দাড়িয়ে থাকেন কেন?
ভুল বললে আজ নিয়ে তিনদিন দাড়িয়েছি, এটা রাখো,
কি এটা?

এটার ভেতর সব কিছু লেখা আছে। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
অসভ্য কোথাকার, কোন বাড়ির পোলা আপনি? এত বদ!
তাও লেখা আছে। শোনো মেয়ে, আমার সাথেই তোমার বিয়ে হবে, হোন্ডা স্টাট দিয়ে ধুলা উড়িয়ে চলে যায়।
চম্পা এতক্ষণে বলেউঠে,
দোখছোস রানু পোলাডার কওো বড় কলিজা, জানে না তোর ভাই কে?
ভয় পেয়ে যায় রানু, বলে,
তুই কিন্তু কারো কাছে এসব কথা বলবি না সই।
নারে সই বলবো না। জলদি চল্ ক্লাসের দেরী হয়ে যাবে।

তিনদিন পর আবারে একই জায়গায় ছেলেটি কে দেখে রানু চম্পা কে ফেলেই বাড়ির দিকে দৌড় দেয় পিছনে পিছনে ছেলেটি আসতে থাকে। ঘরের উঠান থেকে রাস্তার দিকে আসতেই ভাবী দেখতে পায় রানু ছুটে আসছে, রানু হাপাতে হাপাতে বলে,ভাবী জলদি ঘরে ঢুকে ঐ ছেলেটা আমার পিছে নিসে।
ছেলেটিও সামনে ভাবীকে দেখে থমকে যায়।
এ্যাই ছেলে এদিকে। ইশারায় ডাকে।
ভয় পায়না ছেলেটি কাছে এসে বলে,
জ্বী বলেন?
তুমি আমার ননদের পিছু নিসো ক্যান?কে তুমি? এখানে এসব কি শুরু করছো?
সাবেরা বেগম ছেলেটির সাহস ও ব্যাক্তিত্ব দেখে ইকটু অবাকই হলো।

কোন বাড়ির ছেলে তুমি? বাবার নাম কি?
মোল্লা বাড়ির ছেলে। আমার নাম সজীব , বাবার নাম হাজী আজিজ মোল্লা। আমি কলেজে পড়ছি।
সাবেরা বেগম বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকে। ঈশ্বরদীর সব চেয়ে বনেদী পরিবার আর ধনবান এই আজিজ মোল্লা। তার ছেলে এই বাড়িতে!!!
তুমি বাড়ি যাও। দুদিন পর আমার সাথে দেখা করবে। ওকে রাস্তায় বিরক্ত করবে না।
আচ্ছা , ঘাড় নেড়ে সায় দিয়ে চলে যায়।

রাতে সাবেরা বেগম শফিক মাস্টার কে সব খুলে বলে, শফিক চিন্তিত হয়ে পড়ে।
বোনটারে ডাক্তার বানাবে বলে নিজের কাছে এনেছে, আর এখন যখন বিয়ের কথা বলছে তাহলে তো আর ঘরে রাখা যাবে না।
ওকে না হয় বাড়িতেই পাঠিয়ে দেই কি বলো?
বলো কি?ওমন বড় ঘরের সমন্ধটা তুমি কেন না করবা?ওরা ঘটক পাঠালে না কইরো না কইলাম
দেখো পাঠায় কিনা, হাজী সাহেবের ও তো একটা পছন্দ আছে, আমাদের সাথে ওনারা আত্নীয়তা করবে কেন?
বলেই ঘুমাতে চলে যায় সে।
স্কুলে যাবার পথে রানুর চোখ দুটো তাকেই খুঁজে, চম্পা বুঝতে পেরে বলে,
কি রে সই কি খুঁজিস?
কিছু না

বলেই সামনের দিকে হাটতে থাকে। হঠাৎ সামনে দিয়ে হোন্ডা চলিয়ে চলে যায় সজীব একটা কাগজ ফেলে যায়। চটজলদি চম্পা কাগজটা তুলে নেয়,
সই চিঠি তো আমারেই দিসে, কি কস?
হ, তোরেই দিসে, জোরে হাট।
চম্পা এক গাল হেসে রানুর বইয়ের ভেতর ঢুকিয়ে দেয় চিঠি টা।

কয়েকদিন ঘটকের আমা গোনার পর হাজী সাহেব তার নিকট আত্মীয় স্বজন নিয়ে শফিক মাস্টারের বাড়িতে আসেন
গ্রাম থেকে বাবা মাও এসেছে। মা কে পেয়ে রানু খুব খুশী।
প্রথমেই শফিক বলে,

চাচাজী আপনার ছেলেটা সবে আই, এ পড়ে, আমার বোনটাও ছোট, বিয়েটা দুই বৎসর পর সাবস্ত করি?
আরে না না না, জোরে বলেউঠে হাজী সাহেব।
আমার ছেলে পছন্দ করছে, এই সপ্তাহেই বিয়া হবে। তাছাড়া দেশের অবস্থা ভালো না, শেখ সাহেব আন্দোলনের জন্য ঝাপাইয়া পরছে, দেশের মানুষ সব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খাড়ায়া গেছে, কি হয় কওন তো যায় না আমি জলদি ছেলের বিয়া দিমু।
ছেলের বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললো না। ধুমধামে বিয়ে হয়ে গেলো।

চৌদ্দ বছরের বালিকা বধু রানু। এত বড় বাড়িতে এসে হতভম্ব । চারটে ননদ,তিনটা দেবর শাশুড়ী সব মিলিয়ে বাড়িটা সব সময় গমগম করছে। তার উপর অনেকে আশ্রিত । এখানে থেকে পড়াশোনা করছে। দোকানের আড়তের অনেক কর্মচারী। বাড়িতে পাচ ছয় জন রান্নার লোক দোকানে খাবার পাঠাতে হয়। রানুর কাছে এসব বিশাল যজ্ঞ মনে হয়। সব কিছুর তদারকি শাশুড়ী তাকে বুঝিয়ে দেয়।

প্রতি রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি আসার সময় রানুর জন্য টুকটাক গহনা নিয়ে আসে সজীব।

পর্ব- ২

গতকাল শশুর এক জোড়া সোনার নুপুর দিয়ে বলেছিলো, সব সময় পড়ে থাকবা। আমার মা হাটবে আর আমি শুনবো মা আমার হাটছে।
বাড়ির রেডিওতে লিলি মনি খবর গান নাটক শোনে, রানুও খবর শুনে আর ভয় পায় কি হবে দেশের। ৭ মার্চ এর শেখ সাহেবের ভাষনের পর ঈশ্বরদীতে মানুষের আতংকিত কখন কি হয়, আর বিহারী বসতি অনেক বেশি । ভেতরে ভেতরে তারা বাঙালিদের ঘৃনা করে একথাও শুনেছে রানু। আশেপাশের অবস্থাপন্ন হিন্দু রা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাচ্ছে, ওদের সোনা দানা মূল্যবান জিনিস পএ সব হাজী সাহেবের কাছে গচ্ছিত রাখছে। এসব দেখে ভয় পায় রানু।
রাতে স্বামীর বুকে মাথা রেখে বলে,
চলেন, আমরা এখান থেকে গ্রামে আমার বাবার বাড়িতে যাই। বিহারীদের আমার কেন জানি ভয় করে।
হো হো করে হেসে উঠে সজীব, আদর করতে করতে বলে,
চিন্তার কিছু নাই বউ। ওরা আমাদের প্রতিবেশী , আমরা একসাথে বড় হইছি। তাড়া নওশাদ উমর ইশতিয়াক সব আমার বন্ধু । আমাদের কিছু হবে না। তুমি ঘুমাও।

ভোরে ঘুম ভেঙে যায় রানুর। সজীব বিছানায় নেই।
কোথায় গেলো এত সকালে চিন্তায় পড়ে যায় রানু। সারা বাড়িতে খুঁজেও পায়নি ওকে।
সবাইকে নাস্তা দিতে দিতে বলে, বাবা দেশের অবস্থা ভালো না চলেন আমাদের বাড়িতে চলে যাই।
কি যে বলো মা, আমার বাড়ি এত কিছু ফেলে কেমনে যাবো?আমরা এত মানুষ কেমনে তোমাদের বাসায় উঠি?
বাবা কষ্ট তো দু চারদিন হবে। পরে ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া আমার শরীরটাও ভালো না
শাশুড়ী রানুর দিকে তাকিয়ে বলে,
মাগো তোমার মন চাইলে যাও, আমরা এখানেই থাকি।
রানু কোন কথা বলে না।
ইকটু পরেই সজীব হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে চিৎকার করে বলতে থাকে,
কত বড় সাহস আমারে শাসায়, পতাকা যেন না টানাই, আমারে কয় এই কথা?
কি হইছে? জানতে চায় রানু।
ঐ যে নওশাদ আমার হাতে পতাকা দেইখা কয়, যেন মা টানাই, তর্ক করলাম, আমারে কয়, দেইখা নিবো।
কেন ওদের সাথে কথা বলতে যান? ওগো তো বাড় বাড়ছে। আসেন খাবেন।

২৭ মার্চের সকাল।খবর আসে পাকিস্তানী আর্মী রা ঢাকায় গনহত্যা শুরু করেছে। শেখ সাহেব কে এরেস্ট করে পাকিস্তানে নিয়ে গেছে। রানুর শশুর ৫০ বস্তা চাল কিনে রেখেছে। সাথে যাবতীয় সব। এর মধ্যেই গরীব গেরস্থ রা আশ্রয়ের জন্য এই বাড়িতে উঠেছে। গতরাতে হাজী সাহেব মজনুরে দিয়ে পতাকাটা নামিয়ে যত্ন করে ট্রাঙ্কের মধ্যে রেখে দিলো সে। স্বাধীন হলে বড় একটা বাঁশ দিয়ে উঠানে উড়াবে।
বেলা বাড়তেই সজীব মজনু কে নিয়ে বাজারে যায় দোকান থেকে মালপত্র সরিয়ে ফেলবে। পিছনে পিছনে ছোট ভাই পিন্টু আসছে দেখে কিছু বলেনি সজীব । চারটা বড় পাইকারি দোকান একটা আড়ত। একটা স্বর্ণের দোকান, কোনটাতে আগে যাবে ভেবে পায় না সজীব
মজনু বলে উঠে,
চলেন সোনার দোকানের জিনিস সরাই।
হঠাৎ পিন্টুর চিৎকার শুনতে পায় একটা কুকুর তাকে কামড়ে ধরেছে। লোকজনের চেষ্টায় পিন্টু কে উদ্ধার করা হয়।
বাসায় এসেই রানুকে স্বর্ণ গুলো দিয়ে বলে,
এগুলো তোমার সাথে রাখবা। অন্য কোথাও রেখো না হারিয়ে যাবে।
কিছু নিজের কাছে রেখে বাকি গুলো কলসী তে ভরে বাঁশ ঝাড়ের মাটির নীচে রেখে দেয়।
বিকেলের দিকে অনেক গুলো বিহারী পরিবার আশ্রয় নেয়। হাজী সাহেব ওদের থাকার ব্যবস্হা করে দেন
বিহারি দের ধারনা ইন্ডিয়ান আর্মী তাদের এটাক্ট করবে।
এত লোকের রান্না ২০/২৫ জন মিলে প্রতি বেলায় রান্না হচ্ছে যেন একটা আশ্রয় শিবির
রাতে রানু পেটে ব্যথা অনুভব করলে ভয় পেয়ে যায়।
সজীব শান্তনা দিয়ে বলে,
বউ কিছু হবে না তোমার। দেইখো পরীর মত একটা মেয়ে হবে আমার। নাম রাখবো মুক্তি ।
রানু ব্যথা নিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে স্বামীর মুখের দিকে।

তখনও পাকিস্তানি সৈন্য রা ঈশ্বরদী ঢুকেনি। আর বিহারী যখন জানতে পারলো পাকিস্তান এদেশে হত্যা যজ্ঞ চালাচ্ছে তখন তারা শহরে লুটপাট শুরু করে দেয়।
হাজী সাহেব ভেবে পান না কি করবেন, বাড়ির ভেতরেও আর নিরাপদ মনে করছেন না। তারউপর প্রতিদিন নওশাদ উমর একবার করে বাড়িতে ঢু মেরে যায়। বিহারীরা সব হাজী সাহেবের বাসা ছেড়ে চলে যাওয়াতে আরও ভয় হয়। মনে মনে দরুদপাঠ করেন আর আল্লাহ্কে ডাকেন।
এপ্রিলের শেষে একদিন কুড়ি পঁচিশ জন নারায়ে তাকবির ধ্বনি দিতে দিতে বাড়িতে লুটতরাজ শুরু করে দেয়। তাদের হাতে ছুরি,চাপাতি, বন্দুক আরও কত কি।
সজীব জলদি করে মজনু কে বলে বোনদের আর রানু কে নিয়ে বাঁশ ঝাড়ের ভেতর দিয়ে দূরে চলে যেতে। ওরা গেলেও রানু স্বামী কে ছেড়ে যায় নি। তাছাড়া সে পোয়াতি তার কিছু হবে না।
নওশাদ দৌড়ে এসে আগে সজীবকে ধরে হাত বেধে উঠানে ফেলে। হাজী সাহেব কে একজন ধরে আনে।
উমর জানতে চায়,
বুড্ডা বল্ কোথায় সোনাদানা টাকার বস্তা রাখছিস?কেউ কিছু বলেনা দেখে চাপাতি দিয়ে হাজী সাহেব কে কোপ দেয়।
সজীব বলে,
নওশাদ তুই মনে রাখিস আমাদেরও দিন আসবে,তখন তোরে দেইখা নিমু।জয়বাংলা।
সাথে সাথে বন্দুক দিয়ে হাজী সাহেব কে আর সজীবকে হত্যা করে।
ছোট ভাই মন্টু বলে উঠে,
আমাকে মেরো না। আমি জানি ওগুলো কোথায় আছে।
বল্ কোথায় আছে?
পুকুর পাড়ে মাটির নিচে।
ওরা মন্টুকে ধরে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়।
স্বামী শশুর আর কয়েক জন কর্মচারীর মৃত্যু চোখের সামনে দেখে জ্ঞান হারায় রানু।
শাবল হাতে দিয়ে বলে,
কোপ দে
আমার শরীরে শক্তি নেই তোমরা কোপ দিলেই পাবে। পাঁচ ছয় জন যখন মাটি কোপাতে ব্যস্ত তখন মন্টু এক দৌড়ে ওদের দৃষ্টির আড়াল হয়ে যায়।

এক মাস পর রানুর কোল জুড়ে পরীর মত একটি কন্যা সন্তান আসে। নাম রাখে মুক্তি । চাঁদের মত মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে রানু আর সজীব কে অনুভব করে তার পাশে।
এবাড়ির খবর রানুূদের বাড়িতে পৌছালে শফিক নিতে আসে রানুকে। অনেক খুজে দু গ্রাম পর এক বাড়িতে ওদের পায়
মেয়ে কে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে রানু।

আজ বিজয় হলো পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছে।
বিছানায় মুক্তি হাত পা ছুঁড়ে খেলছে। চারিদিকে মানুষের বিজয় উল্লাস। দেশ শত্রু মুক্ত হলো আজ। সবাই বলছে স্বাধীন হইছে দেশ।
মুক্তি যোদ্ধারা যুদ্ধ করেছে। আর ঘরে ঘরে যে কত মানুষ জীবন দিয়েছে তার কি কোন হিসেব আছে?
সজীবদের কথা কারো মনে নেই, আজ মনে পড়ছে, মনে পড়বে মনে রাখবে শুধু রানু আর মুক্তি।
বিজয়ের এই পতাকা উড়তে কত রক্তের বন্যা বয়ে গেছে সারাদেশে।
রানু মনে মনে বলে
স্বাধীন বাংলাদেশ আর বিজয় আমাকে কি দিলো?
আমি তো দিয়েছি আমার সর্বস্ব।

(একটি সত্য কাহিনি নিয়ে লেখা)

-লেখক : সাবেক অধ্যাপক, মিরপুর গার্লস আইডিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ঢাকা।