Home সারাদেশ গান বাজিয়ে তালে তালে নেচে যুবককে অকথ্য নির্যাতন

গান বাজিয়ে তালে তালে নেচে যুবককে অকথ্য নির্যাতন

40

পুলিশের সোর্স পরিচয়ের ডাকাত গ্রেফতার 

ডেস্ক রিপোর্ট: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে নিরীহ মানুষ জনকে মিউজিক বাজিয়ে গানের তালে তালে নেচে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে যুবক শাহ আলমের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসে এক যুবককে পিটিয়ে নির্যাতনের ভিডিও শুক্রবার রাতে ভাইরাল হয়। আর এ ভাইরাল হওয়া সেই যুবক শাহ আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তবে এলাকাবাসী বলছে যুবক শাহ আলম একজন ডাকাত ও পুলিশের সোর্স। শুক্রবার তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ ডাকাতির মামলায় আদালতে পাঠিয়েছেন। সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই ডাকাতের দ্বন্দ্বে এ ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিও ফেসবুকে আসার আগেই তাকে সোনারগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে ভিডিওতে শাহ আলমকে পুলিশের সোর্স দাবি করা হলেও ওসি তা অস্বীকার করছেন। ভাইরাল হওয়া শাহ আলম উপজেলার মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের বাড়িচিনিস গ্রামের মৃত শাহাবুদ্দিনের ছেলে।

জানা যায়, শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায় শাহ আলম নামের এক যুবক মিউজিক বাজিয়ে নাচতে নাচতে মধ্যযুগীয় কায়দায় আরেক যুবককে বেদম লাঠিপেটা করে নির্যাতন করছে। শাহ আলম নামের যুবকটি নাচতে নাচতে কিছুক্ষণ পর তার তাকে একটি প্লাস্টিকের সবুজ রঙের পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা করছে। পেটানোর সময় যুবকটি হাউমাউ করে চিত্কার করলেও সে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে। এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তাকে গ্রেফতারের দাবি তোলা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সোনারগাঁও থানার এক এএসআইয়ের সোর্স পরিচয় দিয়ে বুক ফুলিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন করে যাচ্ছে শাহ আলম। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার টর্চার সেলে নিয়ে মিউজিক বাজিয়ে গানের তালে তালে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়া নিরীহ যুবকদের আটকে রেখে মুক্তিপণ বাবদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরবর্তী সময়ে পুলিশের মাধ্যমে ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে তাদের হয়রানি করেন। শাহ আলমের বিরুদ্ধে এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র জানায়, শাহ আলম নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত্ মাদক ও সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মারধর করে অর্থ আদায় করাই তার পেশা। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। সে পুলিশের সোর্স পরিচয় দেওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। অবশেষে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

সূত্র আরো জানায়, শাহ আলমের বাড়ি মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের কাবিলগঞ্জ গ্রামে। সে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা বাড়িচিনিস গ্রামে তার বোনের বাড়িতে বসবাস করে। শাহ আলমের নির্যাতিত যুবক ডাকাত সাদ্দামের সহযোগী বলে একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।

সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, শাহ আলমের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেফতার করে বেলা ১২টার দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ভিডিও ফেসবুকে শুক্রবার রাতে পাওয়া যায়। তিনি আরো জানান, দুই ডাকাতের দ্বন্দ্বে এ ভিডিও ভাইরাল করা হয়। নির্যাতিত যুবক ডাকাত সাদ্দামের সহযোগী। লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বে ঐ যুবককে পেটানো হয়।

ওসি জানান, শাহ আলমের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। পুলিশের নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্থ আদায়, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসা করত। সে মূলত একজন ডাকাত। সেজন্য তাকে শুক্রবার গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ইত্তেফাক