আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবশেষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে মালদ্বীপে আশ্রয় নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে তিনি মালদ্বীপ গেছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। খবর এএফপির।

জানা যায়, ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া তার স্ত্রী ও এক দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী নিয়ে সামরিক বিমান অ্যান্তোনভ–৩২ যোগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

এর আগে বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের বাধার মুখে আকাশপথে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর সমুদ্রপথে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেন গোতাবায়া। বিমানবন্দরের অভিবাসন কর্মকর্তারা গোতাবায়ার পাসপোর্টে সিল মারতে রাজি না হওয়ায় মঙ্গলবার এই দ্বীপ দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য নৌবাহিনীর টহল নৌযান ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

দেশটিতে চলমান অস্থিরতা এবং এর জেরে সাধারণ জনগণের ক্ষুব্ধ আন্দোলনের দাবানল আছড়ে পড়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বাসভবনে। গত শনিবার দেশটির শীর্ষ এই দুই নির্বাহীর বাসভবনের দখল নেন বিক্ষোভকারীরা, এখনও তারা সেখানেই অবস্থান করছেন।

শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কলম্বোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলে নেয়ার আগ মুহূর্তে সেখান থেকে পালিয়ে যান ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া। পরে তিনি দুবাইয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

শ্রীলঙ্কার কোনো আইনেই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের বিধান নেই। তবে পদত্যাগের পর গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বিদেশে যেতে চান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রও রাজাপাকসের ভিসার আবেদন প্রত্যাখান করেছে। রাজাপাকসে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যের মতোই গোতাবায়ারও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছিলো। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে একটি আইন মেনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। ওই আইনে বিদেশি নাগরিকদের নির্বাচনে দাঁড়ানো নিষিদ্ধ ছিলো।

এরপর নির্বাচনে বিশাল জয় নিয়ে ক্ষমতায় বসেন গোতাবায়া। কিন্তু তার সরকারের মাত্র তিন বছরের নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের ফলে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণীত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের মার্চ থেকে দেশটিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ রূপ নেয় অসহযোগ আন্দোলনে।