Home ধর্ম আজ পবিত্র শবে কদর

আজ পবিত্র শবে কদর

41

ডেস্ক রিপোর্ট: আজ পবিত্র শবে কদর। হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রাতলাইলাতুল কদর।
শবে কদর (ফার্সি: شب قدر‎‎) বা লাইলাতুল কদর (আরবি: لیلة القدر‎‎) এর অর্থ “অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত” বা “পবিত্র রজনী”। ফার্সি ভাষায় “শাব” ও আরবি ভাষায় “লাইলাতুল” অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী, অন্যদিকে ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হল ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা। ইসলাম ধর্ম অনুসারে, এ রাতে ইসলাম ধর্মের ধর্মপ্রচারক মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ)-এর অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত। কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহ এই রাত্রিকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন এবং এই একটি মাত্র রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক সওয়াব অর্জিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর মাহে রমজানে এই মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল কদর মুসলিমদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনে বলে তারা বিশ্বাস করে।
৬১০ সালে শবে কদরের রাতে মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত ইসলামের ধর্মের মহানবী, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট সর্বপ্রথম কুরআন নাজিল হয়। সর্বপ্রথম তার নিকট প্রথম সূরা আলাক্বের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাজিল হয়। এ রাতে ফেরেশতা জীবরাইল এর নিকট সম্পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয় যা পরবর্তিতে ২৩ বছর ধরে ইসলামের নবী মুহাম্মদের নিকট তার বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে নাজিল করা হয়।
মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাত সর্ম্পকে হাদিস শরীফে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। এমনকি মুসলমানদের প্রধান ধর্মী গ্রন্থ আল কুরআনে সূরা ক্বদর নামে স্বতন্ত্র একটি পূর্ণ সূরা নাজিল হয়েছে। এই সূরায় শবে কদরের রাত্রিকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসলাম ধর্ম মতে, মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূর্ববর্তী নবী এবং তাদের উম্মতগণ দীর্ঘায়ু লাভ করার কারণে বহু বছর আল্লাহর ইবাদাত করার সুযোগ পেতেন। কুরআন ও হাদীসের বর্ণনায় জানা যায়, ইসলামের চার জন নবী যথা আইয়ুব, জাকরিয়া , হিযকীল ও ইউশা ইবনে নূন প্রত্যেকেই আশি বছর স্রষ্টার উপাসনা করেন এবং তারা তাদের জীবনে কোন প্রকার পাপ কাজ করেননি। কিন্তু মুহাম্মদ (সাঃ) থেকে শুরু করে তার পরবর্তী অনুসারীগণের আয়ু অনেক কম হওয়ায় তাদের পক্ষে স্রষ্টার আরাধনা করে পূর্ববর্তীতের সমকক্ষ হওয়া কিছুতেই সম্ভপর নয় বলে তাদের মাঝে আক্ষেপের সৃষ্টি হয়। তাদের এই আক্ষেপের প্রেক্ষিতে তাদের চিন্তা দুর করার জন্য সূরা ক্বদর নাজিল করা হয় বলে হাদিসের বর্ণনায় জানা যায়।
মহিমান্বিত এ রাত মুমিন মুসলমানের জন্য আল্লাহর দেওয়া সেরা নেয়ামত। যদিও শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলো লাইলাতুল কদর তালাশ করার দিকনির্দেশনা এসেছে, তথাপিও অধিকাংশ মুসলিম ২৬ রমজান দিবাগত রাতটি ‘লাইলাতুল কদর’ পাওয়ার আশায় যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করেন। সে হিসেবে দেশব্যাপী এ বছর ২৬ রমজান মোতাবেক ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পালিত হবে কাঙ্ক্ষিত পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’।

২৭ রমজানের প্রস্তুতির তারাবিহ নামাজ পড়ার পর থেকে মুমিন মুসলমান সারারাত জেগে লাইলাতুল কদর পেতে ইবাদত-বন্দেগিতে রত থাকে।তারাবিহ, নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুল তাসবিহ, জিকির-আজকার, দোয়া-দরূদ পাঠ করেছেন।