Home সাহিত্য ও বিনোদন অমর একুশে বইমেলা: আজ নতুন বই এসেছে ৭৫টি

অমর একুশে বইমেলা: আজ নতুন বই এসেছে ৭৫টি

25

স্টাফ রিপোটার: আজ ৬ই ফাল্গুন ১৯ই ফেব্রুয়ারি রবিবার। অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিন। মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ৭৫টি।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় গোবিন্দচন্দ্র দেব এবং ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজী আজিজুর রহমান এবং আমিনুর রহমান সুলতান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন খান মাহবুব, হাসান অরিন্দম, শিহাব শাহরিয়ার, পাপড়ি রহমান এবং রাজীব কুমার সরকার। সভাপতিত্ব করেন আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, গোবিন্দচন্দ্র দেব ছিলেন আমৃত্যু মানবহিতৈষী বন্ধু, প্রাজ্ঞ পন্ডিত, মানবদরদি মহাপ্রাণ এবং অসাম্প্রদায়িক একজন মানুষ। দার্শনিক তত্ত্বের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, দার্শনিক হিসেবে তিনি বৃত্তে থেকেও মুক্ত। তাঁর দর্শন তাই দৈশিক ও বৈশ্বিক। অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তিযোদ্ধা গাজীউল হক কর্মজীবনে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকেও রাজনীতি ও সাহিত্যচর্চা করেছেন এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছেন। রাজনৈতিক জীবনে কোনো প্রকার লোভ ও মোহ যেমন তাঁকে তাঁর আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, তেমনি কর্মজীবনেও তিনি ছিলেন মোহমুক্ত একজন মানুষ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, গোবিন্দচন্দ্র দেব দর্শনকে কেবল শাস্ত্রে নিবদ্ধ না রেখে ব্যবহারিক জীবনে দর্শনের প্রয়োগ ঘটাতে চেয়েছিলেন। দর্শনের মতো জটিল বিষয়কে তিনি অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন, ফলে তাঁর দর্শনের গ্রন্থগুলো সাহিত্যের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। উদার ও অসাম্প্রদায়িক গোবিন্দচন্দ্র দেবের, অহিংস ও সমন্বয়বাদী দর্শন আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক। অন্যদিকে দেশ-মাটি ও মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রামী গাজীউল হক ছিলেন একাধারে গীতিকার, সাহিত্যিক, কবি, রাজনীতিক। বাঙালির ইতিহাসের চরম উৎকণ্ঠাময় সময়ে ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তা ইতিহাসে তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবু মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, গোবিন্দচন্দ্র দেব ও ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক দু’জনেই ছিলেন মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক ও দেশপ্রেমিক। তাঁদের জীবন-কর্ম ও চিন্তাচেতনা দেশ-জাতি ও মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কামরুল হাসান, ফজলুর রহমান, জেবউননেছা এবং শিবুকান্তি দাশ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন নূরুন্নাহার শিরীন, সরকার মাসুদ, কাজী আসাদুজ্জামান, কাজী আনারকলি, হাসান শরীফ এবং আসাদ কাজল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, রূপশ্রী চক্রবর্তী, দেবাশিস্ রুদ্র এবং ঝর্ণা পারুল। এছাড়া ছিল আতিকুর রহমান উজ্জ্বলের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্যাঙ্গন’, শামীম চৌধুরী শ্যামলের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী’, মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘দৃষ্টি’, মানজারুল ইসলাম সুইট-এর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লাইসা আহমেদ লিসা, জান্নাত-এ-ফেরদৌসী, স্নিগ্ধা অধিকারী, মঞ্জু সাহা, সুমন চৌধুরী এবং উত্তম কুমার রায়। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন এনামুল হক ওমর (তবলা), ডালিম কুমার বড়ূয়া (কি-বোর্ড), মো. মনিরুজ্জামান (বাঁশি), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা)।

আগামীকাল২০শে ফেব্রুয়ারি সোমবার। অমর একুশে বইমেলার ২০তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নূরুননবী শান্ত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মিহির মুসাকী, বেলাল হোসেন, হোসেন আল মামুন। সভাপতিত্ব করবেন লুবনা মারিয়াম।