Home রাজনীতি জনবিচ্ছিন্ন সরকার একটা সেলফি তুলেই আনন্দে ডিগবাজি দিচ্ছে : রিজভী

জনবিচ্ছিন্ন সরকার একটা সেলফি তুলেই আনন্দে ডিগবাজি দিচ্ছে : রিজভী

36

স্টাফ রিপোটার: অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালেক নানার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার একটা সেলফি তুলেই আনন্দে ডিগবাজি দিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন তিনিব(প্রধানমন্ত্রী) দাওয়াত না দিলেই চলে যান। আমি রাজশাহীতে দেখেছি মালেক নানা ছিল। সবাই তাকে কৌতুক করে মালেক নানা বলতো।বকোন দাওয়াত ছাড়াই সব বিয়ে বাড়িতেই ওই মালেক নানা গিয়ে হাজির হতো। কি বর পক্ষ কি কনে পক্ষ যার বাড়ি হোক না কেন সে সেখানে গিয়ে বসে থাকতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন মালেক নানা হয়ে গেছেন।

সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সাউথ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলন, সেই ব্রিকসের সদস্য বাংলাদেশ নেই, সেই ব্রিকস সম্মেলনে কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানাতেই পারে বহু দেশকে জানিয়েছেন তারা। কিন্তু সবার আগে দৌড় মেরে চলে গেলেন শেখ হাসিনা। দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন সেটারও সদস্য না সেখানেও তিনি দৌড় মেরে চলে গেলেন।প্রধানমন্ত্রীর এখন এই অবস্থা দাওয়াত না দিলেও ওখানে উনি দৌড়ে চলে যান।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, উনার (প্রধানমন্ত্রীর) সাথে দুই একটা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যে দেশ আমন্ত্রণ করেছে সাইড লাইনে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার কথা হয়েছে। মানে এটা মূল বৈঠকের মধ্যে পড়ে না। উনি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হোক আর যাই হোক কোন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটু কথা বলতে চাইলে তারাতো বলতেই পারে তারপরও সবাই কিন্তু বলেনি। এই কারণে দৌড়ে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সেলফি তুলে কি খুশি। সারাদেশে উনি এমনভাবে সেটা ছড়াচ্ছেন। এই জন্যে আনন্দে গদগদ ওবায়দুল কাদের। নির্লজ্জতা বেহায়াপনা কত নিম্নগামী হলে পারে এটি হতে পারে।

রিজভী বলেন, আসলে ওবায়দুল কাদেররা এতটাই জনবিচ্ছিন্ন এই ধরনের কোন ছবি তুলতেই পারলেই তাদের প্রধানমন্ত্রী তারা আনন্দে ডিগবাজি দেন। আসলে যাদের কোন গণভিত্তি থাকে না তারা একটি সেলফি তুললেই সন্তুষ্ট হন।আপনি জনগণের সমর্থন হারিয়েছেন সুষ্ঠু ভোট আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু। অবাধ এবং ইনক্লুসিভ নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি বড় শত্রু জ্ঞান মনে করেন। সেই জন্য একটা সেল্ফিতেই আনন্দের সীমা নেই।

তিনি বলেন, এইভাবে দেশটা চলছে এখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। এই পরিত্রাণের জন্য এবার একেবারে জীবন মরণ শপথ নিয়ে নামতে হবে।তাছাড়া কেউ বাঁচতে পারবে না। এমন কেউ এখানে নেই যার নামে মিথ্যা বানোয়াট মামলা নেই। পুলিশ, র্যাব, আদালত বিচারক সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণে। তিনি এই ১৪ বছর বেছে বেছে বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন কি হাইকোর্টে কি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে, কি জজ কোর্টে। প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তারা সেই ভাবে কাজ করবেন, এক বিন্দু নড়চড় হবে না। আমরা একটি বিচারিক নির্মমতার শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। আমরা আদালতের দ্বারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছি। এই নির্যাতনের কাঠামো তৈরি করেছেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটার বিরুদ্ধে আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের মানুষ যাই বলুক সারা পৃথিবীর মানুষ যাই বলুক কর্তৃত্ববাদী দেশের সার্টিফিকেট নিয়ে উনি প্রধানমন্ত্রী। যে দেশে নির্বাচন হয় না, বিরোধীদলের নেতাদের কারাগারে রেখে সেখানেই মৃত্যুর নিশ্চয়তা দেয় যে সরকার, তারাই এখন সার্টিফিকেট দিচ্ছে শেখ হাসিনাকে।তাহলে বোঝেন শেখ হাসিনা কার পক্ষে? অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র মানেন না কোন আইন-কানুন মানেন না। আইনের কথা উনি মুখে বলবেন কিন্তু বাস্তবে কোন তোয়াক্কাই করেন না। উনার বিরুদ্ধে যে কথা বলবে সেই অপরাধী উনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করবে সেই অপরাধী। উনি যে লুটপাট করাচ্ছেন তার দলের নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে সেটার বিরুদ্ধে যে কথা বলবে সে অপরাধী।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, এই দুঃসময় এবং দুর্যোগের মধ্যে যারা কথা বলছেন এরাইতো বিপ্লবী, এরাইতো আদর্শবাদী এরাইতো ন্যায়ের পক্ষে কারণ অত্যাচারীর বিরুদ্ধে কথা বললে অত্যাচারী তার অত্যাচার নামিয়ে আনবে এইটা চিন্তা করেও যারা কথা বলে তাদের মতো দুঃসাহসী তাদের মতো আদর্শবাদী কি কেউ হতে পারে? আজকে একটি বিভাজন রেখা। একদিকে ন্যায়ের পক্ষে সত্যের পক্ষে আদর্শের পক্ষে ন্যায় বিচারের পক্ষে গণতন্ত্রের পক্ষে আরেক দিকে ব্যাংক লুটেরা, জনগণের টাকা লুটেরা, জনগণের বিদ্যুৎ লুটেরা গণতন্ত্র হরণকারীরা একদিকে। এই বিভাজন রেখা তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা।

জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, তাঁতীদলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান, ওলামা দলের সদস্য সচিব হাফেজ নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিল।