ডেস্ক রিপোর্ট: সীমান্তে উত্তরের ১৮০টি বিমানের উড়াউড়ি দেখে তড়িঘড়ি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর কাছেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা যৌথ আকাশ মহড়া ‘সতর্ক ঝড়ে’ দক্ষিণ কোরিয়ার আরও ২৪০টির মতো উড়োজাহাজ অংশ নিচ্ছে। এদিকে সিউল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার প্রতিবাদে ৮০টিরও বেশি কামানের গোলা ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সমুদ্রসীমায় এসব গোলা ছোঁড়ে উত্তর কোরিয়া।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের সামরিক সীমান্তের উত্তরে চার ঘণ্টাব্যাপী উত্তর কোরিয়ার ১৮০টির মতো যুদ্ধবিমানের উড়াউড়ি দেখে তারাও তড়িঘড়ি ওই অঞ্চলের কাছে তাদের যুদ্ধবিমান জড়ো করেছে।
মিলিটারি ডিমারকেশন লাইনের ২০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত থাকা তথাকথিত কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকার উত্তরে শুক্রবার উত্তরের উড়োজাহাজগুলো উড়েছে, বলেছে তারা। এর পাল্টায় দক্ষিণ কোরিয়া তড়িঘড়ি এফ-৩৫এসহ ৮০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে বলে দেশটির সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে জানা যায়। যুদ্ধবিমান মোতায়েনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা যৌথ আকাশ মহড়া ‘সতর্ক ঝড়ে’ আরও ২৪০টির মতো উড়োজাহাজ অংশ নিচ্ছে, জানিয়েছে সিউল।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জানান, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে ৩টার দিকে দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী মিলিটারি ডিমারকেশন লাইনসহ দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় উত্তর কোরিয়ার প্লেন উড়তে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই ছোড়া হয় ৮০টিরও বেশি গোলা। তাছাড়া, একটি ব্যালেস্টিকসহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া হয়। জবাবে অন্তত ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। ইউন সুক-ইওল প্রশাসনের দাবি এর আগে এক সঙ্গে এতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি সিউল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী জানায়, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ছাড়াও ২৪০টি যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রেখেছে তারা। উত্তর কোরিয়ার যে কোনো উগ্র আচরণের জবাব দিতে প্রস্তুত আছে সিউল। গত মাসেও উত্তর কোরিয়ার ১০টি যুদ্ধবিমান একই ধরনের সাময়িক মহড়া চালায়। তখনো নিজেদের যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রেখেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। কিম জং উন প্রশাসনের এমন আচরণে যৌথ বিমান মহড়া চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া।
এদিকে, বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি পাক জং চোন বলেন, ওয়াশিংটন ও সিউল মহড়া চালিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক বৈঠকে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড জেমস অস্টিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লি জং-সুপ। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের সামর্থ্য সর্বোচ্চ করার আহ্বান জানান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে একত্র হতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। এতে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, আলবেনিয়া, আইয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। এদিকে, বারবার ক্ষেপণাস্ত্র উক্ষেপণ মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলায় উত্তর কোরিয়ার নিন্দা জানিয়েছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার। পিয়ংইয়ংকে আলোচনায় ফিরে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
ইত্তেফাক