Home রাজনীতি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জাসদকে জড়িয়ে শেখ সেলিমের বক্তব্যের প্রতিবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জাসদকে জড়িয়ে শেখ সেলিমের বক্তব্যের প্রতিবাদ

34

ডেস্ক রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জাসদকে জড়িয়ে শেখ সেলিমের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ । আজ ২৬ আগস্ট জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জাসদকে যুক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ সেলিমের বক্তব্য রাজনৈতিক দূরসন্ধিমূলক মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। শেখ সেলিম বঙ্গবন্ধুর খুনীগোষ্ঠী এবং খুনীগোষ্ঠীর পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারকদের আড়াল করার উদ্দেশ্যেই মিথ্যাচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপপ্রয়াস পেয়েছেন। জাসদ কখনই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে নাই। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী গোষ্ঠীর সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পূর্বাপর কর্নেল তাহের বা হাসানুল হক ইনু বা জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। জাসদ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সুফলভোগীও নয়। কারা খন্দকার মুশতাকসহ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে হাত মিলিয়েছে, কারা খুনিদের রক্ষা করেছে, কারা খুনিদের পুরস্কৃত করেছে তা প্রকাশিত। খন্দকার মুশতাকের ৮৩ দিনের অবৈধ শাসনকালে কারাবন্দি জাসদ নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেয়া হয়নি। বরং ঐ ৮৩ দিনেও জাসদের নেতা-কর্মীদের উপর চরম রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন-নির্যাচন চালানো হয়েছে। চট্টগ্রামের জাসদ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা খসরু, রাজবাড়ীর জাসদ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আজাদ, গাইবান্ধার জাসদ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা রুস্তমসহ সারা দেশে কয়েকশত জাসদ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ‘দূরের না, আপন লোকরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আমার মা যাদের রেঁধে খাওয়াতেন তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এজাহার, এফআইআর, তদন্ত, চার্জশীট, সাক্ষীদের জেরা ও সওয়াল জবাব, চার্জের উপর আদালতে যুক্তিতর্ক, আদালতের রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষনের কোথাও জাসদ বা জাসদের কোনো নেতার নাম পর্যন্ত উচ্চারিত হয়নি। এটাই স্বাভাবিক ও সত্য। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পূর্বাপর জাসদের কোনো ধরণের যোগাযোগ ছিল না। শেখ সেলিম বা কেউই মিথ্যাচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ইতিহাসের এই সত্য আড়াল করতে পারবে না।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ সেলিম তার আপন মামা বঙ্গবন্ধু ও আপন ভাই শেখ মনির লাশ ফেলে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সাথে যুক্ত তৎকালীন আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে কি করছিলেন তা জাতি জানতে চায়।
জাসদ গঠন ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিভক্তি বঙ্গবন্ধুকে দূর্বল করে দিয়েছিল, একা করে দিয়েছিল, অসহায় করে দিয়েছিল। এটা সত্য। কিন্তু যারা জাসদ গঠন করেছিলেন তারা জাসদ গঠনের আগে বঙ্গবন্ধুকে তার নেতৃত্বে বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলেন। এমন কি ছাত্রলীগের বিভক্তি, একই দিনে দুই জায়গায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সম্মেলনের একটিতে বঙ্গবন্ধুর যোগদানের পরও জাসদ গঠনের আগ পর্যন্ত কয়েক মাস তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। কাদের চাপে বঙ্গবন্ধু বিভক্তির পথে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনকেও বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়া হয়েছিল- তাও আজ জাতির সামনে প্রকাশিত। সুতরাং জাসদ গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভক্ত করার দায়ও জাসদের না, বরং ঐ ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীরই।