Home রাজনীতি হঠাৎ আত্মপ্রকাশ করা বিডিপি’র নেতৃত্বে যারা

হঠাৎ আত্মপ্রকাশ করা বিডিপি’র নেতৃত্বে যারা

51

ডেস্ক রিপোর্ট: আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র জমা দেন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) নেতারা। হঠাৎ আত্মপ্রকাশ করা বিডিপির চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি এখনো জামায়াতে ইসলামীতেই আছেন।
আত্মপ্রকাশ করা বিডিপির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম (চান) ও সেক্রেটারি জেনারেল নিজামুল হক (নাঈম)। আনোয়ারুল ইসলাম একসময় ছাত্রদল করতেন। আর নিজামুল হক ছাত্রশিবির করতেন। পরে দুজনেই জামায়াতের রুকন (শপথধারী সদস্য) এবং ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরার সদস্য হন। তাঁরা এখনো জামায়াতে ইসলামীতেই আছেন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বিডিপির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম পেশায় আইনজীবী। তাঁর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার চারি আনি পাড়ায়। তিনি ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জহুরুল হক ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। তাঁর বড় ভাই এ কে এম রফিকুল ইসলামও বিএনপির সৌদি আরব (পূর্বাঞ্চল প্রদেশ) শাখার সভাপতি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আনোয়ারুল ছাত্রদল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে কিছুদিন যুক্ত থাকলেও পরে ঢাকায় আইন পেশায় গিয়ে জামায়াতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগর কমিটির মজলিশে শুরার সদস্য।
বিডিপির সেক্রেটারি জেনারেল নিজামুল হক ছাত্রশিবিরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১১ সালে শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক হন, পরের কমিটিতে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

নিবন্ধনের আবেদনে বিডিপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কার্যালয় হিসেবে নয়াপল্টনে ‘চায়না টাউন’ নামে একটি বহুতল ভবনের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। আবেদনের সঙ্গে ১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা দেওয়া হয়। এ কমিটিকে বিডিপির ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটি’ বলে উল্লেখ করা হয়। ১৫ সদস্যের স্থায়ী কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁদের অধিকাংশই জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো না কোনো পর্যায়ের নেতা ছিলেন। কেউ কেউ পরবর্তী সময়ে জামায়াতের শপথধারী রুকন বা সদস্য হন। তাঁদের একজন রাশেদুল ইসলাম (রানা) এক কমিটিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ও পরে ছাত্রকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। আরেকজন রিয়াদ হোসাইন, যিনি একসময় শিবিরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।
জানা গেছে, ইসিতে বিডিপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির পৃথক তালিকাও জমা দেওয়া হয়। তাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি পদে মনির উদ্দিন (মনি) ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজাউল করিমের নাম রয়েছে। মনির উদ্দিন ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি ও পরে কেন্দ্রীয় হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট (এইচআরডি) সম্পাদক ছিলেন। রেজাউল করিমও ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা।

তবে জামায়াতের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, বিডিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার না করলেও দলটি নিবন্ধন পেলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নতুন এই দলের প্রতীকে (আপেল বা আনারস) জামায়াত নির্বাচন করতে পারে, এমন গুঞ্জনও উঠেছে। অবশ্য সেটা নির্ভর করবে নতুন দলটি নিয়ে সরকারের মনোভাব এবং বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায় তার ওপর।
আমাদের সময়.কম