Home জাতীয় সোমেশ্বরী নদী রক্ষা ও বালুখেকোদের শাস্তি দাবি ১৫ নাগরিকের

সোমেশ্বরী নদী রক্ষা ও বালুখেকোদের শাস্তি দাবি ১৫ নাগরিকের

40

ডেস্ক রিপোর্ট: নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ীকন্যাখ্যাত সোমেশ্বরী নদীকে বালুখেকোদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক। একইসঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশ করায় একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক নয়া শতাব্দীর স্থানীয় প্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মী রিফাত আহমেদ রাসেলকে ডেকে নিয়ে হত্যার হুমকিদাতা ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তাঁরা। শনিবার (১২ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি করেন তাঁরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন যাবত বোমা মেশিন (এক ধরনের ড্রেজার) চালিয়ে সোমেশ্বরী নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে দুর্গাপুর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে, স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নদীটি নাব্য হারাচ্ছে। শহরের ওপর দিয়ে নিয়মিত ভেজা বালু পরিবহন করায় ট্রাক থেকে পড়া কাদাপানিতে পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে জনদুর্ভোগও বাড়ছে। এছাড়া দিনরাত বিকট শব্দে বোমা মেশিন চলায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ সববয়সী মানুষ শব্দদূষণের শিকার হচ্ছেন। এক কথায়, এলাকার জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণকারী পাহাড় ঘেষে প্রবাহিত সোমেশ্বরী নদীকে বাঁচাতে স্থানীয় সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী রিফাত আহমেদ সোহেল বালুখেকোদের পরিবেশবিনাশী কার্যক্রম নিয়ে তথ্য প্রকাশ করায় স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি তাঁকে ও তাঁর বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করলে সাংবাদিককে ‘বালুর মধ্যে পুঁতে হত্যা করা হবে’ বলেও হুমকি দেন ওই জনপ্রতিনিধি ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ড৩ায়েরি করলেও বালুদস্যুদের উপর্যুপরী হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন সাংবাদিক রিফাত আহমেদ সোহেল। বিবৃতিতে অবিলম্বে সোমেশ্বরী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধসহ নদীটি রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, রিফাত আহমেদ সোহেলসহ স্থানীয় সব সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হুমকিদাতা বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন- বিশিষ্ট শিশুসংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুর রহমান সেলিম, কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশের (জিসিবি) কার্যকরী সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, নৌ-সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডেভেলপমেন্টের (মেড) নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ, প্রভারটি ইমুলিনেশন এ্যাস্ট্যিান্স সেন্টার ফর এভরিহোয়্যারের (পিস) নির্বাহী পরিচালক ইফমা হুসেইন, সাংবাদিক ও শিশুসংগঠক রাজন ভট্টাচার্য, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মাহবুল হক, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ, জনলোকের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী সাবেক ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম সুজন, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী, আলোকিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাপ্পিদেব বর্মণ ও দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা।