Home সারাদেশ ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প ঘেষে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প ঘেষে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

31

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের সুপারী বাগান গ্রামে নদী পার এলাকায় পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প ঘেষে দিনরাত বেকু মেশিন দিয়ে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালানো হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে চলেছে। নদীর কোল এলাকায় গভীর গর্ত করে মাটি খননের ফলে চরম হুমকীর মুখে পড়েছে উপজেলার সহ¯্র কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত একমাত্র পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি। স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ী আবুল খায়ের ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা পদ্মা রক্ষা বাঁধ এলাকা থেকে মাটি খনন করে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে পাচার করে চালাচ্ছে রমরমা বাণিজ্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদেশে ট্রেনিংরত থাকার সুযোগে স্থানীয় বালু ও মাটি ব্যবসায়ীরা পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প এলাকা থেকে বীনা বাঁধায় বালু উত্তোলন করে বাণিজ্য চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে করে সম্প্রতী উপজেলার অস্তিত্ব টিকে থাকার প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।

এ ব্যপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) খাইরুল ইসলাম জানান, “আমিও অফিসিয়াল ট্রেনিংয়ের কাজে ৪০ দিনের জন্য সাভারে চলে যাচ্ছি। ওই গ্রামের পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প এলাকায় মাটি খননের খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে গিয়েছি। বালু ব্যাবসায়ীরা গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করে চলেছে। আমি খননরত জমির মালিক ও ব্যাবসায়ীদের বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য অফিসে ডেকেছি”।

আর উপজেলায় দায়িত্বরত ফরিদপুর পাউবো’র প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন বলেন, “উপজেলার সুপারী বাগান গ্রামের পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্প এলাকা থেকে মাটি খনন বন্ধের জন্য আমি উর্দ্ধতনদের অবগত করেছি”। আর শনিবার বালু ব্যাবসায়ী আবুল খায়ের জানান, “ আমি শুধু বেকু মেশিনের মালিক। বাঁধ এলাকার পার্শ্ববতী জমির মালিকরা আমার বেকু মেশিন দিয়ে মাটি খনন করে নিজেদের প্রয়োজনে ট্রাকযোগে সরবরাহ করে চলেছে”।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, গত ওই গ্রামের মধ্যে দিয়ে উপজেলার প্রধান সড়ক ছেড়ে প্রায় সাড়ে ৩শ’ মিটার উত্তর দিকে পদ্মা নদীর তীর ঘেষে গড়া হয়েছে বাঁধ নির্মান প্রকল্প। এ বাঁধ প্রকল্প ও পাকা সড়কের মধ্যবর্তি উন্মুক্ত ফসলী জমির বিভিন্ন স্থান জুড়ে মাটি ব্যাবসায়ীরা দিনরাত বালু উত্তোলন করে চলেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর কড়াল ¯্রােতে পদ্মা রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি চরম হুমকীর মুখে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে চলেছেন এলাকাবাসী। এ ছাড়া পদ্মা পারে খননরত জমির আশপাশের ফসলী মাঠগুলো পদ্মা ভাঙনের হুমকীর মুখে পড়বে বলে কৃষকরা দ্রুত বালু উত্তোলন উৎসব বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। ওই এলাকার এক কৃষক জলিল মন্ডল (৬০) জানায়, “ আামাদের ফসলী জমির পাশ দিয়ে গভীর গর্ত করে পুকুর কাটার মত যেভাবে খনন করা হচ্ছে তাতে বর্ষা মৌসুমে পদ্মার কড়াল ¯্রােতের কবলে আশপাশের ফসলী জমিগুলো ভেঙে পড়ে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে”। একইদিন মোশারফ হোসেন (৫৫) জানায়, “পদ্মা নদী বেষ্টিত অত্র উপজেলাবাসীর শত বছরের চাওয়া পাওয়া পদ্মা রক্ষা বাঁধ নির্মান। গত বছর সেই পদ্মা রক্ষা বাঁধ নির্মান প্রকল্প সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় কিছু বালু ব্যাবসায়ীদের হীনকর্মকান্ডে উপজেলার অস্তিত্ব রক্ষা সেই বাঁধ প্রকল্প আজ চরম হুমকীর মুখে পড়েছে।