Home রাজনীতি সরকার ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধীদলকে নির্মূল করতে চায়: মির্জা ফখরুল

সরকার ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধীদলকে নির্মূল করতে চায়: মির্জা ফখরুল

31

স্টাফ রিপোটার: সরকার গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংঙ্কুচিত করে হত্যা, গুম, খুন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধীদলকে নির্মূল করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসন গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। গত ৪ এপ্রিল বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

ভার্চুয়াল সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন , ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। মহাসচিব সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন।

ফখরুল বলেন, সভায় ঢাকার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়-ক্ষতির জন্য দূঃখ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে পর পর এই ধরনের অগ্নিকান্ডের বিষয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলেই ভয়াবহ দূর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুলির উদাসীনতা, অযোগ্যতা, দূর্নীতি ও নজরদারীর অভাবের কারনে ভয়াবহ পরিনতির স্বীকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সভা মনে করে এই অনির্বাচিত সরকারের ব্যর্থতার কারনে সামগ্রিক ভাবে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী বিভাগ গুলির কর্মকর্তাদের তোষননীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচনের কারনে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধির কোনও জবাবদিহিতা না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সভায় বঙ্গবাজার সহ অন্যান্য স্থানে সংঘটিত অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং অবিলম্বে বঙ্গবাজারসহ সকল বাজারে অগ্নি নির্বাপন ও সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করনের দাবী জানায়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি জার্মান মিডিয়া হাউজ ‘ডয়েজ ভেল’ কর্তৃক স্যোশাল মিডিয়ায় র‍্যাব এর অপকর্মের ডকুমেন্টারী প্রকাশিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে এই ডকুমেন্টারী প্রমাণ করেছে যে অনির্বাচিত সরকার আইন শৃংখলা বাহিনীকে অবৈধ ভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। সভা অবিলম্বে সংবিধান বিরোধী, মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বন্ধ করার জোর দাবী জানায়। সভা, র‍্যাব কর্তৃক বেআইনীভাবে গুম, হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড এর তীব্র নিন্দা জানায় এবং এই সব সংবিধান ও মানবাধিকার লংঘনের জন্য দায়ী সরকারের পদত্যাগ দাবী করে।

মহাসচিব বলেন, সভায়, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল ঘোষিত কর্মসূচী পালনের সময় দেশের বিভিন্ন জেলায় বিনা অজুহাতে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ কর্তৃক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এ ধরনের হামলা ও গ্রেফতার থেকে প্রমান হয় যে, গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংঙ্কুচিত করে হত্যা, গুম, খুন ইত্যাদি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধী দলকে নির্মূল করতে চায়। সভা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানায়।

সভায়, সম্প্রতি নওগাঁয় র‍্যাব কর্তৃক সরকারী প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তা সুলতানা জেসমিন কে বেআইনী ভাবে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার তীব্র নিন্দা জানায় এবং অবিলম্বে দায়ী র‍্যাব কর্মকর্তা, সরকারের যুগ্ম সচিব আজিজুল হকরে বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানায়। সভায় এ বিষয়ে জনমত গড়ে তুলোর জন্য যথাযথ কর্মসূচী প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, সভায়, ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট প্রয়োগ করে জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশ স্বাধীনতা হরণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, সাংবাদিক এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক সংগ্রামে পত্রিকার সম্পাদক মো: আবুল আসাদ সহ অন্যান্য সাংবাদিক এবং নাগরিকদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অবিলম্বে এই নিবর্তন মূলক কালো আইন, ডিজিটাল সিকিউটিরি আইন বাতিলের দাবী জানানো হয়।