Home রাজনীতি সন্তু লারমাকে অপসারণের দাবি

সন্তু লারমাকে অপসারণের দাবি

14

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া এক প্রতিবেদনে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার অধিকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমাকে ব্যক্তিগত মিলিশিয়া রাখার সরকারি অনুমতি পার্বত্য চট্টগ্রাম, বিশেষত বান্দরবান জেলার, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রধান কারণ ।আজ ক্যহ্লাচিং মার্মা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়েছে।

“ পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পক্ষে পাঠনো বিবৃতেতে আরও বলেন, “অন্যান্য অনেক সমস্যার পাশাপাশি, এই অঞ্চলের অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মূল কারণ হল প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার অধিকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্রি বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা গত দুই দশকের অধিক সময় ধরে ব্যক্তিগত মিলিশিয়া /সেনাবাহিনী পুষলেও, সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যাপারে নীরব থাকা। এ কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে । গত ২৬ বছরে সন্তু লারমার মিলিশিয়া বাহিনী শত শত যুবককে হত্যা করেছে। এই নিহতের তালিকায় আওয়ামী লীগ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। সন্তু লারমা নিজেই এক সাক্ষাতকারে সশস্ত্র গ্রুপ বজায় রাখার কথা স্বীকার করেছেন (দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=P7LoEPdKDGs)।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছে, “আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিষদের কিছু সদস্য বাংলাদেশে নেই, তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে অবস্থান করে সন্তু লারমার ব্যক্তিগত মিলিশিয়া বাহিনীর জন্য অস্ত্র সংগ্রহের কাজে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বান্দরবান জেলার বর্তমান পরিস্থিতি হলো বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সন্তু লারমার সশস্ত্র বাহিনীর বেআইনী কার্যকলাপকে সহ্য করার নীতিরই প্রত্যক্ষ ফল।“-

তারা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সরকার প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পিসিজেএসএস সভাপতি সন্তু লারমাকে তার ব্যক্তিগত মিলিশিয়া /সেনাবাহিনী বজায় রাখার অনুমতি দিয়েছেন। কোন বিবেচনায় এই অনুমতি দেয়া হয়েছে তা আমাদের কাছে আদৌ বোধগম্য নয়।

তারা আরও বলেন, অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত সরকারের বিদ্যমান নীতির পর্যালোচনা এবং এলাকায় শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সরকারের কাছে ব্যক্তিগত মিলিশিয়ার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সন্তু লারমাকে অপসারণ করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সকল সদস্য বাংলাদেশে বসবাস করছেন কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আঞ্চলিক পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করা এবং অন্যভাবে অনুসন্ধান করা, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সাথে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন (যা ১৯৯৯ সালে গঠনের পর থেকে কোনদিন অনুষ্ঠিত হয়নি) এবং খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের (যা ১৯৮৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়নি) ব্যবস্থা করার আবেদন করেছেI

এই বিষয়ে তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, ইউএনডিপির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিক্টর-সেভেন্ডসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পাহাড়ি জনগণের সুশীল সমাজের সাক্ষরকারী প্রতিনিধিরা হলেন অংগ্য প্রু মার্মা, কামানী কুমার কার্বারী, অমৃত ত্রিপুরা, ক্যহ্লাচিং মার্মা, মানবেন্দ্র চাকমা, বুদ্ধ চাকমা, শান্তি মুনি চাকমা আর আনন্দ জ্যোতি চাকমা I