Home সাহিত্য ও বিনোদন শুরু হলো ৮ দিনব্যাপী একুশের সাংস্কৃতিক উৎসব

শুরু হলো ৮ দিনব্যাপী একুশের সাংস্কৃতিক উৎসব

13

স্টাফ রিপোটার: মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের যৌথ আয়োজনে শুরু হয়েছে ৮ দিনব্যাপী আয়োজন ‘একুশের সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৪’। ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।

‘একুশের সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৪’। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির সম্মানিত সচিব জনাব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত মঞ্চসারধি জনাব আতাউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন এর সেক্রেটারী চন্দন রেজা এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী।

বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন “ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের মাস, আসুন আমরা সংস্কৃতির এই আন্দোলনে একাত্ম হয়ে বিশ্বের প্রত্যেক দেশে শহীদ মিনার করি। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশে যেন শহীদ মিনার হয় ইতোমধ্যেই অনেক দেশে হয়েছে।

বিশ্বের যে কোন দেশে হত্যাকান্ডের বিরোধিতা করি আমরা। আমরা মনে করি ফিলিস্তিনে অবিলম্বে হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হবে। আজকে বিশ্বের যে স্থানেই মানুষ নিগৃহীত হবে তাদের পাশে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, দেশের আপামর মানুষ কবি, সাহিত্যিকরা”।

১৫-২২ ফেব্রুয়ারি পযন্ত ৮ দিনব্যাপী এ আয়োজন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চে চলবে প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে।

১ম দিনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল শিশু-কিশোর সংগীত দল। এরপর লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় ‘বীর পুরষ’ নৃত্য পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু নৃত্যদল। নৃত্য পরিচালনা করেন সোমা গিরি। এরপর ‘ইতিহাস জানো তুমি আমারা’ নৃত্য পরিবেশন করে ধৃতি নর্তনালয়, নৃত্য পরিচালনা করেছেন নৃত্য পরিচালক ওয়ার্দা রিহাব। এরপর লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনা এবং জয়দীপ পালিত এর পরিচালনায় পরিবেশিত হয় শিশু নৃত্য ‘চলো বাংলাদেশ’। পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশুনৃত্যদল। এরপর নৃত্যলোক নৃত্যদল পরিবেশন করে ‘একুশ জাগরণ’। নৃত্য পরিচালনা করেছেন নৃত্য পরিচালক কবিরুল ইসলাম রতন। এরপর ধুতি নর্তনালয় নৃত্যদল ২য় পরিবেশন করে ‘বাংলা হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ’। নৃত্য পরিচালনা করেন ওয়ার্দা রিহাব। এরপর নৃত্যলোক নৃত্যদল পরিবেশন করে ‘ও পৃথিবী এবার এসো’। নৃত্য পরিচালনা করেছেন নৃত্য পরিচালক কবিরুল ইলাম রতন। এরপর আবার নৃত্য ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল শিশু-কিশোর সংগীত দল।

এরপর কবি কন্ঠে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মিনার মনসুর ও আসলাম সানি। এরপর পরিবেশিত হয় একক সংগীত। একক সংগীত ‘অপমানে তুমি জ্বলে উঠেছিলে’ ও ‘মাগো ভাবনা কেনো’ পরিবেশন করেন সোহানুর রহমান। হিমাদ্রি রায় পরিবেশন করেন একক সংগীত ‘মাগো ধন্য হলো জীবন’ ও ‘ভেবনা গো মা’। এরপর ধারাবাহিক আয়োজনে পরিবেশিত হয় নৃত্য ‘বাংলার ধ্রুবতারা’। ভাবনা ও পরিকল্পনা লিয়াকত আলী লাকী এবং পরিচালনা করেছেন নৃত্য পরিচালক স্নাতা শাহরীন। নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যদল। এরপর পরিবেশিত হয় সংগীত। একক সংগীত ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো’ ও এই শিকল পড়া ছল’ পরিবেশন করেন বর্ণালী সরকার এবং অন্তরা পরিবেশন করেন একক সংগীত ‘সূয্যেদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি’ ও ‘সেই রেল লাইনের ধারে’। এরপর লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় ‘ আজ যত যুদ্ধবাজ’ নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যদল। নৃত্য পরিচালনা করেন মেহরাজ হক তুষার। সহযোগীতায় ছিলেন এস কে জাহিদ।

সবশেষ পরিবেশিত হয় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পালা `উথুলা সুন্দরী’। পরিবেশন করেন পালাকার ইসলাম উদ্দিন।

বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে পালার দর্শক গ্যালারী। গ্রাম বাংলার বহু পুরোনো পালা শিল্পীর ভাষ্যমতে ১শ থেকে দেড়শ বছরের পুরোনো পালা উতুলা সুন্দরী মুলত প্রেমের কাহিনী। কাল্পনিক এ পালায় এক সুন্দরী রমনী ও প্রেম কাহিনী ও অলীক ভাগ্যলিখনের গল্প তুলে ধরেন পালাকার।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আব্দুল্লাহ বিপ্লব ও তামান্না তিথি।