Home সাহিত্য ও বিনোদন শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে খুলনা বিভাগীয় সাংস্কৃতিক উৎসব

শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে খুলনা বিভাগীয় সাংস্কৃতিক উৎসব

21

স্টাফ রিপোটার: “আমরা অনুরোধ জানাবো সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদেরকে যে, তাদের অবশ্যয় আমাদের শিল্পীদের যে স্বপ্ন সংগ্রাম, তাতে সহযোগিতা করতে হবে; শিল্পীদের সংকটে আমাদের পাশে দাঁড়াতে হবে” । বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী গণজাগরণের সংগীত উৎসবের খুলনা ভিাগের অনুষ্ঠানে রোববার এ কথাগুলো বলেছেন।
শিল্প সংস্কৃতিঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ার অভিলক্ষ্যে ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় শিল্প নিয়ে পৌঁছে যাবো আমরা উন্নতির শিখরে’এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গণজাগরণের শিল্প আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শিল্পের সকল শাখার সমন্বয়ে দেশব্যাপী বহুমুখী সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের বাস্তবায়িত রুপ ‘গণজাগরণের সংগীত’ এই সামগ্রিক উন্নয়ন পক্রিয়ায় সর্বসাধারণকে সম্পৃক্ত ও অনুপ্রাণিত করতে ৫ শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে ২-৭ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত চলছে ‘গণজাগরণের সংগীত উৎসব।’

‘গণজাগরণের সংগীত উৎসব’
৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬ দিনব্যাপী গণজাগরণের সংগীত উৎসব এর দ্বিতীয় দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১ম পর্বে পরিবেশিত হয় সুরশ্রী দলের পরিবেশনায় দলীয় সংগীত’ মোরা যাত্রী একই তরণীর এবং মাগো ভাবনা কেন’। এরপর শিল্পী মুরাদ হোসেন পরিবেশন করেন ’মাগো ধন্য হলো’, এরপর পরিবেশিত হয় সুমিতা মজুমদারের কন্ঠে ‘বাগিচায় বুলবুলি তুই’। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী। ‘পাবে সামান্যে কি তার দেখা’ পরিবেশন করেন নাবিয়া বিনতে নাসির মিতুল এবং সুরশ্রী দলের অনান্য শিল্পী জুনায়েদ আহমেদ রিফাত, উম্মে মারিয়া, অনিন্দ পাল ও অনান্যরা।

২য় পর্বের পরিবেশনা উপস্থাপন করে সঞ্চারী সংগীত দল। শুরুতেই পরিবেশিত হয় সমবেত সঙগীত ’আমার প্রতিবাদের ভাষা’ ও ‘সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’। এরপর সুমা বেপরীর কন্ঠে পরিবেশিত হয় একক সঙ্গীত ‘সাঁঝের বেলা’। একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রুদ্র দাস- ‘কেন কাঁদে পরা ‘। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন স্বর্ণময়ী মন্ডল ’নিবিড় ঘন আঁধারে’, ঈষিতা বড়ুয়া নিপা পরিবেশন করেন ‘পরি জাফরানী ঘাগড়ী’; ধ্রুব সরকার পরিবেশন করেন ‘ও আমার উড়াল পক্ষীরে.. যা যা তুই উড়াল দিয়া যা’; এরপর মায়াবী রেনেসা পরিবেশন করেন ‘কুহ কুহ কোয়েলিয়া’।

এরপর পরিবেশিত হয় সংগীত ‘মনে পড়ে আজ’ পরিবেশনায় জুটন চন্দ্র মজুমদার। রুমা চৌধুরী পরিবেশন করেন ‘সংগীত সাগরের তীর থেকে’। এরপর পরিবেশিত হয় দলীয় সংগীত ‘মায়ের দেয়া মোটা কাপড় এবং ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। পূজা দাস পরিবেশন করেন ‘আমার বন্ধুয়া বিহনে গো; জয়শ্রী মন্ডল পরিবেশন করেন ‘কেমনে ভুলিব আমি’। ‘ডুবে দেখ দেখি মন’ পরিবেশন করেন মো: আয়নাল হক। শুল্কা সরকার পরিবেশন করেন জনপ্রিয় গান ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’। একক গান পরিবেশন করেন সন্তোষ চন্দ্র ‘সেই যে গেলে’ , লাভলী শেখ পরিবেশন করেন ‘কত অধম পাপী তাপী’। এরপর একক পরিবেশনা নিয়ে আসেন সানজিদা ইয়াসমিন লাভলী ‘বাপুই চ্যাংড়ারে, মো: মানিক শাহ পরিবেশন করেন ‘দে দে পাল তুলে দে, মাঝি হেলা করিস না, ছেড়ে দে নৌকা আমি যাবো মদিনা’।

৬ দিনব্যাপী সংগীত উৎসবে ১১ টি সংগীত দল পরিবেশন করছে – অন্তরা, সুরশ্রী, সঞ্চারী, রাগিনী, সুরধ্বনি, সুরসপ্তক, স্বরলিপি, গীতাঞ্জলি, গীতালি, সুরতরঙ্গ এবং সুরলহরী। ২য় দিনের আয়োজনে সমন্বয়কারী হিসেবে ছিলেন আবিদা রহমান সেতু ও শারমিন শাওন।

খুলনা বিভাগীয় ব্যবস্থাপনায় ২য় দিনে ‘গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব’ অনুষ্ঠিত

দেশব্যাপী চলছে গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব। এর অংশ হিসেবে আজ খুলনা বিভাগের ১০ টি জেলা চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল, মাগুড়া ও বাগেরহাটে এক যোগে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হোন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন- ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত করেছি, কিন্তু এতো বছর পরেও মনে হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে। এই মুক্তিযুদ্ধের ধারায় গঠিত যে সরকার দেশের উন্নতির জন্য কাজ করছে, তার বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা একটি শিল্প পরিবার গড়ে তুলতে চাই যারা সারা বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে একত্রিত করবে”।

এছাড়াও আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ সদস্য শরীফ আতিকুজ্জামান এবং অনলাইনে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো। এসময় খুলনা বিভাগের সকল জেলার কালচারাল অফিসারগণ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। পরে এসব জেলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় সমবেত সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশনা। খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ছিলেন কালচারাল অফিসার সুজিত কুমার সাহা। পর্যায়ক্রমে ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সকল বিভাগ ও জেলাগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব।