Home জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১ আরো পর্যালোচনা করার দাবি নিয়ে মতবিনিময় সভা

শিক্ষাক্রম-২০২১ আরো পর্যালোচনা করার দাবি নিয়ে মতবিনিময় সভা

25

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে শিক্ষাক্রম-২০২১ : আদৌ কি পাবো কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা? শীর্ষক ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক মতবিনিময় সভা আজ ২ ডিসেম্বর ২০২৩ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-র কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন।

সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, স্কুল শিক্ষক শামীম জামান, মাকসুদ ইবনে রহমান, মো: আবুল কালাম পনির, মো: আব্দুল খালেক, মালেক মনসুর, বেলাল হোসেন, অভিভাবক জাকির হোসেন, প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন, মো: আসিফুর রশীদ।

সভায় বক্তাগণ বলেন, শিক্ষাক্রম কারিকুলাম পরিবর্তন একটা মৌলিক বিষয়। এটা করতে হলে তা দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করে অংশীজনের মতামত গ্রহণ ও গবেষণার মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ এর ক্ষেত্রে এসব কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এই শিক্ষাক্রম রূপরেখার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়বে। সামর্থ্যবান অভিভাবকরা সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর দিকে ঝুঁকছেন এবং বিদেশ চলে যাওয়ার প্রবণতাও বৃদ্ধি পাবে। এই কারিকুলামে একদিকে বিজ্ঞান শিক্ষা সংকোচিত করা হয়েছে, অর্থনীতি বিষয়টি নেই। অন্যদিকে এই কারিকুলামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনেক ধরনের শিক্ষা উপকরণের প্রয়োজন হচ্ছে যা অভিভাবকদের ব্যয় বাড়াচ্ছে; অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও উপকরণ সরবরাহের কোন ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বাড়তি ব্যয়ের বোঝা বহন করতে পারবেনা; ঝরে পড়ার সংখ্যা বাড়বে। বক্তাগণ বলেন, প্রতিদিনের মূল্যায়ন পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা কারিকুলাম শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে এক প্রকার কেরানি তৈরি করবে। যোগ্যতা দক্ষতার কথা বলা হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন এই শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। কিছু সুন্দর কথা থাকলেও তা কিভাবে বাস্তবায়ন হবে তার পরিকল্পনা নাই।

বক্তাগণ বলেন, ফিনল্যান্ডসহ উন্নত দেশের আদলে শিক্ষাক্রম প্রণীত হওয়ার কথা বললেও ঐসব দেশের মতো শিক্ষা বাজেট বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণের কোন উদ্যোগ না নিয়ে সরকার একতরফাভাবে নিজেদের মস্তিস্কপ্রসূত অবাস্তব, অলৌকিক ভাবনা দেশবাসীর উপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন, যা সমস্ত আধুনিকতার কথা বলে বাস্তবে সামন্ত মানসিকতার প্রতিফলন।

বক্তাগণ আরো বলেন, দেশের শাসন ব্যবস্থায় অরাজক পরিস্থিতি, ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে সরকার সক্ষম হয়েছে। এই কারিকুলাম প্রণয়নে কারো মতামত নেওয়া হয়নি। আবার কারিকুলামের সমালোচনা করায় চারজন অভিভাবক ও শিক্ষককে গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা।

বক্তাগণ অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত অভিভাবক, শিক্ষকদের মুক্তি ও শিক্ষাক্রম-২০২১ বাতিল করে সর্বজনীন, বিজ্ঞান ভিত্তিক, বৈষম্যহীন, সেক্যুলার একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষা কারিকুলাম চালু করার দাবি জানান।