Home রাজনীতি শাবিপ্রবি উপাচার্যের করা মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ফ্রন্ট

শাবিপ্রবি উপাচার্যের করা মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ফ্রন্ট

38

ডেস্ক রিপোর্ট: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক যুক্ত বিবৃতিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য গত ২০ সেপ্টেম্বর ’২৩ সেমিনারে যে বক্তব্য রাখেন— তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন — ‘তালেবানি কালচার নিয়ে আমি খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়ে থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’
সকলেই অবগত আছেন, তালেবানরা ২০ বছর পর ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে। আর ক্ষমতায় এসেই ধর্মের নামে সাধারণ মানুষের উপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বিশেষভাবে নারীদের উপর নিষেধাজ্ঞাস্বরূপ; কর্মক্ষেত্র, স্কুল—কলেজ—বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। যে তালেবানরা সমাজের অর্ধাংশ নারীকে এভাবে রুদ্ধ করছে তাদেরই ‘কালচার’কে সঠিক মনে করছেন উপাচার্য! উপাচার্যের এরূপ মন্তব্য অযৌক্তিক এবং নারীদের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়ে এরূপ মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত গণতান্ত্রিক ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এর আগেও আমরা দেখেছি, শাবিপ্রবিতে ২০২২ সালের জানুয়ারি—ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্রীদের হলের দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা করে। এ হামলার বিচার এবং উপাচার্যের দূর্নীতির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করলে, সেই আন্দোলনে পুলিশ উপাচার্যের নির্দেশে ব্যাপক হামলা—গুলি করে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ন্যাক্কারজনক ঐ হামলায় সারা দেশের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করে। এতেও নির্লজ্জ উপাচার্য (বর্তমান মন্তব্যকারী উপাচার্য) পদত্যাগ করেননি বরং আন্দোলন দমনে ভয়—ভীতির সৃষ্টি করতে থাকেন। উপাচার্যের পূর্বের আচরণ এবং এরূপ মন্তব্যই প্রমাণ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি পরিমাণ অগণতান্ত্রিক এবং দূর্নীতিপরায়ন হয়ে উঠেছে এসকল উপাচার্যের হাত ধরে। শাবিপ্রবি’র গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংসে এবং ভয় জিইয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে নতুন করে যেন আন্দোলন গড়ে না ওঠে এজন্য শিক্ষার্থীদের ওপর অযৌক্তিক একাডেমিক চাপ প্রয়োগ করে ব্যস্ত রাখা, বেতন—ফি বৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস, জনপরিসর সংকুচিত করা, শিক্ষার্থীদের আড্ডাস্থল ও টং দোকান তুলে দেয়া এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে টার্গেট করে ভয়—ভীতি প্রদর্শন এসব ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন— শাবিপ্রবি উপাচার্যের এ মন্তব্য মনে হতে পারে খণ্ডিত, কিন্তু সামগ্রিকভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেসরকারিকরণ—বাণিজ্যিকীকরণ, উপাচার্যের দূর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে সেই ক্ষোভ দমনের একটি প্রক্রিয়া হলো ক্যাম্পাসগুলোর গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা। আর তাই উপাচার্য বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদেরই নিরাপত্তার কথা তুলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করতে থাকেন।