Home রাজনীতি র‍্যাব ও পুলিশের প্রশংসা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন যথার্থ–তথ্যমন্ত্রী

র‍্যাব ও পুলিশের প্রশংসা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন যথার্থ–তথ্যমন্ত্রী

59

স্টাফ রিপোর্টার: জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের র‍্যাব ও পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ মূল্যায়নকে যথার্থ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেতার ভবন প্রাঙ্গণে সুবর্ণজয়ন্তী বিজয় দিবস ও বেতারের ৮২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতার প্রাক্কালে ইতিপূর্বে র‍্যাব ও পুলিশের সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আবার নতুন করে সংস্থাদ্বয়ের ভূমিকার মার্কিন প্রশংসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, র‍্যাব এবং পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও কমিনিটি পুলিশ ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস কমেছে। এটিই আসল চিত্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই মূল্যায়ন সঠিক। সেই প্রতিবেদনে তারা র‍্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেছে এবং বলেছে যে, ২০২০ সালে মাত্র তিনটি সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটেছে এবং সেখানে কোনো মৃত্যু ঘটেনি।’

প্রকৃত অর্থেই বাংলাদেশে র‍্যাব এবং পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও পুলিশের অন্যান্য শাখার তৎপরতার কারণে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস কমেছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আমরা যা করতে সক্ষম হয়েছি, পৃথিবীর বহু উন্নত দেশ তা করতে পারেনি এবং এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের টেকনিক্যাল সহযোগিতা রয়েছে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ মূল্যায়ন যথার্থ।’

পরে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় দেশ ও মানুষের কল্যাণ এবং জাতির মননশীলতা ও সাংস্কৃতিক উত্তরণে বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বেতারের এই ভূমিকাকে আরো শাণিত আধুনিক করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহমেদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন। সভাশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন দেশের প্রথিতযশা শিল্পীরা।

এদিন অপরাহ্নে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন’ প্রাঙ্গণের উদ্দেশ্যে যাত্রার প্রাক্কালে সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পঞ্চাশ বছরের পথচলায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরুদ্ধে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। সমস্ত ষড়যন্ত্র, প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্নপূরণের পথে দেশ দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলছে।’

মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তিনি পলে পলে বাঙালি জাতিকে আন্দোলিত করে শ্লোগান শিখিয়েছেন- বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো; তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা। তারই নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ, আর তিনিই এর মহান স্থপতি।’

তথ্যমন্ত্রী এসময় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জাতীয় চারনেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও আত্মদানকারী মা-বোনকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ১৯৭১-৭২ সালে যারা সংশয়ে ছিলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে কি না, উন্নত-সমৃদ্ধ হতে পারবে কি না, তারা আজ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে, বাংলাদেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ, বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।

‘যারা এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব চায়নি, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সেই অপশক্তি দেশে-বিদেশে সক্রিয় রয়েছে’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে, সমস্ত অপশক্তিকে পদদলিত করে, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে জাতির পিতার স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছে দেবো। স্বাধীনতাবিরোধী সমস্ত অপশক্তি নিপাত যাক- এই হোক আজকের প্রত্যয়।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আমীর হোসেন আমু এমপি’র সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।