Home জাতীয় রাষ্ট্রপতির বেতন কত, পান যেসব সুবিধা

রাষ্ট্রপতির বেতন কত, পান যেসব সুবিধা

23

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চলছিল আলোচনা। সব ধরনের জল্পনা-কল্পনা শেষে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মো. সাহাবুদ্দিনের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বেতন হিসেবে মাসে পাবেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সবশেষ ২০১৬ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে এ অঙ্কের অর্থ দিতে হবে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, আবাসন, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সেবা খাতের সব ধরনের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেয়ার নিয়ম রয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যরা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অতিথিদের পানীয় ও তামাকজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী ট্যাক্স-ফ্রি কিনতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত স্টাফসহ পাবেন অবসর সুবিধা।

১৯৭৫ সালে প্রণীত আইনে রাষ্ট্রপতির বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫০০ টাকা। এরপর ১০ বার আইনটি সংশোধন করা হয়। ১৯৮৭ সালে আড়াই হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার, ১৯৯২ সালে ১৫ হাজার, ১৯৯৮ সালে ২৩ হাজার, ২০০৫ সালে ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা, ২০০৯ সালে ৬১ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়। এই বেতন সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। রাষ্ট্রপতির মাসে আড়াই হাজার টাকা ছুটি ভাতা থাকে, এটিও আয়করমুক্ত।
দেশের আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির জন্য সরকারি আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। বাড়ি সুসজ্জিতকরণ ও মেরামতের পুরোটাই সরকার বহন করবে। রাষ্ট্রপতি নিজের বাড়ি বা ভিন্ন কোনও বাড়িতে অবস্থান করতে চাইলে সেটিও সুসজ্জিতসহ উপযুক্তকরণের দায়িত্বও সরকারের।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির সব ধরনের সফর ও সফরকালীন অবস্থানের ব্যয়ও সরকার বহন করে। তার পরিবহনের জ্বালানি ট্যাক্সের আওতামুক্ত। রাষ্ট্রপতি ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলওয়ে, বিমান ও নৌযানে সর্বোচ্চ সুবিধা পান। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে তার বার্ষিক ২৭ লাখ টাকা বিমা কাভারেজ দেয় সরকার।

আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বছরে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে তহবিল পান। সরকারের নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে তিনি এ তহবিল থেকে ব্যয় করেন। তহবিলের অর্থ থেকে দরিদ্র, অসহায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের তিনি আর্থিক সহায়তা দিতে পারেন। রাষ্ট্রপতির এ খাতের ব্যয়ের কোনো সরকারি অডিট হয় না।

এদিকে দেশি ও বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়নে সরকারি খরচ পান রাষ্ট্রপতি। এছাড়া বঙ্গভবনে আয়োজিত ইফতার মাহফিল, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, বুদ্ধপূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন, পহেলা বৈশাখ, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন ও উপহার দিতে সরকারের নির্ধারিত খাত থেকে খরচ করা হয়।

রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের আবাসস্থলে সাধারণ চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে। এছাড়া দেশের হাসপাতালগুলোতে সরকারি খরচে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিদেশেও তিনি চিকিৎসা নিতে পারেন।

২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনের আওতায় অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক ভাতা পান। এর বাইরেও তিনি ব্যক্তিগত সহকারী, অ্যাটেনডেন্টসহ সরকার নির্ধারিত দাফতরিক খরচ পান। ওই সময় তিনি একজন পূর্ণ মন্ত্রীর সমপরিমাণ চিকিৎসা খরচও পান। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগদানে বাহন ও সরকারি টেলিফোনও ব্যবহার করতে পারেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে ‘রাষ্ট্রপতির বেতন ভাতা ও সুবিধাদি আইন’ প্রণয়ন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৭৫ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে আইনটি পাস হয়। এরপর ১০ বার তা সংশোধন করা হয়।
আমাদের সময়.কম