স্টাফ রিপোর্টার ।। নরসিংদীর পলাশের ভিরিন্দা’র মেঠো পথের টগবগে কিশোর শহীদুল ইসলাম আজ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব। দেশ সেরা জেলা প্রশাসকের খ্যাতি অর্জন করেছেন আরো ৪ বছর আগে। পেয়েছেন জনপ্রশাসন পদক-২০২১। সততা, কর্মদক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি আগলে রেখেছেন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা ঢাকা’কে। এর আগে তিনি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মানবিকতা ও আন্তরিকতায় তিনি টাঙ্গাইলের জনতার প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেন। বহুমুখী সৃজনশীল প্রতিভায় ভাস্কর এই গুণী ব্যক্তি সম্প্রতি যুগ্মসচিব পদে পদন্নোতি পেয়েছেন। রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলামের পদোন্নতি অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম সামসুল আলম ও উইলস পরিবারের শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকবৃন্দ।
জনাব শহীদুল ইসলামের জন্ম রাজধানীর অদূরে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ভিরিন্দা গ্রামে। ওই গ্রামের মেঠো পথ ধরে পাঠশালায় শিক্ষা নিয়ে ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাস করে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ই্ংরেজি বিভাগে। সেখান থেকে অনার্স ও এম ডিগ্রি অর্জনের পর ২১তম বিসিএস-এ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(এডিসি) হন। তারপর হন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় এ জেলা থেকেই ২০১৯ সালে তিনি দেশ সেরা জেলা প্রশাসক হন। কেবল শিক্ষায় নয়, জেলা প্রশাসনের ৩০টি সেক্টরে নানাবিধ কাজের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের অসহায়-দুঃখ ‘সহ ৪২ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেন। ছিলেন সাংবাদিক বান্ধব। টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের আধুনিক ও নান্দনিক স্মারকস্তভ্ম তার হাতেই গড়া। ঢাকার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৮ জুলাই ২০২০। দায়িত্ব গ্রহণের পরেই বিশ্ব মহামারি করোনা মহামারি প্রতিরোধ এবং মানুষের আর্থ-সামাজিক জীবনে এর বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠানো তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি দক্ষতার সাথে সে দায়িত্ব পালন করেন। বুড়িগঙ্গা সহ ঢাকার বিভিন্ন নদী থেকে দখলদার বাহিনী উচ্ছেদেও তিনি অনন্য ভূমিকা রাখেন। এছাড়া ভূমি সমস্যা নিরসন, জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একই পরিবারের সদস্য-এ চেতনায় জাগ্রত করে দ্রুত সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া,খাস জমি বন্দোবস্ত কিংবা ভূমি অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি এবং শিল্প সকল সেক্টরের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ এবং দ্রুততম সময়ে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বরাবরে হস্তান্তরের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ‘ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির শক্ত ভিত্তি তৈরির সূতিকাগার হলো প্রাথমিক শিক্ষা’-এই মন্ত্র ধারণ করে শহীদুল ইসলাম যেম টাঙ্গাইলে প্রাথমিক শিক্ষা সহ শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছেন, তেমনি ঢাকা জেলাতেও কাজ করছেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে রাজধানীর সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজ। চেয়ারম্যানের দায়িত্বগ্রহণের পরপরই অবসর শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধ, শিক্ষক-কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট, নিয়মিত শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ীকরণ, বিএড স্কেল, বৈশাখী ভাতা প্রদান সহ নানা ন্যায্য সুবিধা প্রদান এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে তিনি সকলের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেন-মন্তব্য উইলসের অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর। তার এ পদোন্নতিতে খুশি উইলস পরিবার, খুশি সাধারণ মানুষ।
কারণ বহুমুখী বর্ণিল গুণাবলির দক্ষ-চৌকস ও সৃজনশীল জ্ঞানে প্রোজ্জ্বল জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের হৃদয়ে ধনী-গরিব সবাই সমান। সবাই তার কাছে অনায়াসে যেতে পারে। কাউকেই তিনি খালি হাতে ফেরান না, তার অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই বলেন, ডিসি স্যারের কাছে ধনী-গরিব, ফকির, মিসকিন, কোর্টপ্যান্ট কিংবা লুঙ্গিপড়া যেকোনো ধরনের মানুষই সমান যত্ন পান। এমন কাজ-পাগল ডিসি স্যার নাকি তারা তাদের কর্মজীবনে দেখেন নি। মানুষকে সেবায় তিনি সর্বদা প্রস্তুত। তার স্ত্রী নিশাত রসুলও একজন বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা। বাবা রহমতুল্লাহ কিছুদিন আগে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। ভাই রফিকুল ইসলাম ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।