Home সারাদেশ মোংলায় মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর থানায় মামলা আটক ৩

মোংলায় মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর থানায় মামলা আটক ৩

84

মোংলা থেকে মো. নূর আলমঃ মোংলায় কানাইনগর গ্রামে কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। ৬ আগস্ট শনিবার বিকেলে মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধ থেকে গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাতে মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর সার্বজনীন কালী মন্দিরে থাকা দুইটি প্রতিমার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আংশিক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে মন্দির মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। ওই মন্দিরটির সামনের মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মন্দির কমিটির সাথে খেলতে আসা কিশোরদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়ে আসছিলো কয়েকদিন ধরে। মন্দির কমিটির লোকজন মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলতে নিষেধ করে এলাকার ছেলেদেরকে। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় ছেলেরা ওই মাঠে খেলতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় মন্দির সংশ্লিষ্টরা। এনিয়ে সেখানে অনেক উচ্চবাক্য ও বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় উভয়পক্ষই একে অপরকে হুমকি-ধামকি দেন। পরে খেলতে আসা ছেলেরা সেখান থেকে চলে যায়। এরপর শনিবার গভীর রাতে ওই মন্দিরটিতে থাকা কালী ও গণেশ মূর্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আংশিক ভাংচুর হয়েছে। খেলা ছাড়াও অন্য কোন কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কিনা তার অনুসন্ধান চলছে। মোংলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পীযুষ কান্তি মজুমদার বলেন, শুনেছি শনিবার বিকেলে কানাইনগর মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে মন্দির কমিটি ও খেলতে আসা ছেলেদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছিলো। কে বা কারা উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে প্রতিমা ভাংচুর করেছে। এলাকায় সম্প্রীতির কোন ঘাটতি হয়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় আছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবী করছি। এ এলাকায় এমন ঘটনা এই প্রথম বলেও জানান তিনি। কানাইনগর গ্রামের বাসিন্দা সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক ইউপি সদস্য দেবলা বিশ্বাস বলেন বর্তমান ইউপি সদস্য সুলতান মেম্বরের আত্মীয়-স্বজনরা খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এবিষয়টি মেম্বর এবং তার ছেলে জাকিরকে জানানো হলেও তারা কোন সমাধান করেননি। গভীর রাত পর্যন্ত রাহাত চৌধুরীসহ মেম্বরের আত্মীয়-স্বজনরা হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে গালিগালাজ করতে থাকে। আর সকাল বেলায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর অবস্থা দেখতে পাই। মন্দির কমিটির সভাপতি দেবাশীষ বলেন মাঠে খেলতে না দেয়ার কারনে কতিপয় যুবক যারা বর্তমান মেম্বরের আত্মীয়-স্বজন তারা আমাদের হুমকি-ধামকি দেয়। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ মেম্বরের ছেলে, পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। কিন্তু ঘটনাটির কোন সুরাহা না হওয়ায় গভীর রাতে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করে ঐসব কতিপয় যুবক। মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মোংলা-রামপাল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আসিফ ইকবালও। ওসি মনিরুল আরো বলেন, মন্দিরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলতে নিষেধ করলে শনিবার বিকেলে দুইপক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। খেলতে গিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ানো তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। মোংলা সার্কেল’র সহকারি পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র মন্দির কমিটির সভাপতির সাথে বাকবিতন্ডার জের ধরে ভাঙচুর হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। এটি কোন সাম্প্রদায়িক ইস্যু না। থানা সূত্রে জানা যায় এ ঘটনায় ২৯৭/২৯৮/২৯৫ ও ৪২৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আটককৃতদের আসামি করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো কানাইনগর গ্রামের শহিদ চৌধুরীর ছেলে রাহাত চৌধুরী (২০), মৃত হাবিব মুন্সীর ছেলে নয়ন মুন্সী (২৪) ও জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আসিফ খান (২২) ।