Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি মহামারির সময় চাকরি হারায় বেসরকারি ব্যাংকের ৬ শতাংশ কর্মী

মহামারির সময় চাকরি হারায় বেসরকারি ব্যাংকের ৬ শতাংশ কর্মী

44

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে কোভিড হানা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকগুলো কর্মী ছাঁটাই করেছে ১ হাজার ২শ ৯২ জন। আর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন ৫ হাজার ৮শ ৭৫ জন। বাংলাদেশে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চাকরি করছে ১ লাখ ২২ হাজার ৯শ ১২ জন।
৫১টি বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে পদত্যাগকারী কর্মকর্তার সংখ্যার দিক থেকে ব্র্যাক ব্যাংকের অবস্থান শীর্ষে। ব্যাংকটির প্রায় ১ হাজার ২৩ জন কর্মচারি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। ৫৬ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। সিটি ব্যাংকের প্রায় ৭১৮ জন কর্মচারি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। আর ১৬০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের প্রায় ৩৭১ জন কর্মচারি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন। আর ১৩০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বেসরকারি ব্যাংকগুলো চাকরি ছাঁটায়ের সময় যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেনি। ব্যাংকগুলো যদিও বলছে কর্মীরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ছাঁটাইকৃত পাঁচজন কর্মচারির সাথে কথা বলে দেখা যায় তাদেরকে কেনো ছাঁটাই করা হয়েছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছুই জানানো হয়নি।

একজন বলেন, আমার কর্মজীবনে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছি। যার ফলে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে আমাকে নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট করা হয়েছিলো। ব্যাংক আমাকে ২০২০ সালের জুন মাসে ছাঁটাই করে। তখন মহামারির একেবারে কঠিন সময় যাচ্ছিলো। আমাকে ছাঁটায়ের সময় একবারও আমার অর্জনগুলোর কথা বিবেচনা করা হয়নি। আমি জানিনা কেন আমার চাকরিটা চলে গেলো।
অন্য একজন বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়, আমি চাকরি না ছাড়লে আমাকে বরখাস্ত করা হবে। আমি জানি বরখাস্ত করা হলে অন্য ব্যাংকে চাকরি পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। তিনি অবশ্য পরে চাকরি ফিরে পাওয়া জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিজের দুর্দশার কথা জানান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার আবেদন আমলে নেয় ও তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু ব্যাংক এখনো তাকে পুনর্বহাল করেনি।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হুসেন বলেন, অনেকে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে না পেরে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধির জন্য কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি। আমরা লক্ষ্য পূরণ করার জন্য অতিরিক্ত ৫ মাস সময় বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। তারপরও অনেকে লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। আমি আরো বলতে পরি, মহামারির পূর্বের সময়ের তুলনায় মহামরির সময় অনেক কম কর্মীর চাকরি গেছে। আমরা মহামারির সময় অনেকে চাকরিতে নতুন করে নিয়োগও দিয়েছি।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী চাকরি হারানো কর্মচারিদের পুনর্বহাল করা শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ২৭ জনকে পনর্বহাল করেছি। ভবিষ্যতে আরো কর্মীকে পুনর্বহাল করা হবে।-আমাদের সময়.কম