Home সারাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কাউন্সিলের বিরুদ্ধে বিধবার বাড়ি দখলের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কাউন্সিলের বিরুদ্ধে বিধবার বাড়ি দখলের অভিযোগ

44

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারীর বিরুদ্ধে বিধবা নারীর বাড়ি দখল এবং ভাড়াটিয়াদের জোরপূর্বক উৎখাত করে দেয়াসহ হুমকী প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেও রেহায় পাচ্ছেন না ওই বিধবা নারী। ওই নারীর নাম সুলতানা আক্তার। তিনি জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ার মৃত সহিদুল ইসলামের স্ত্রী। গত ২৬মে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনি সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। মৃত সহিদুল ইসলামের বর্তমানে তিন ভাই ও তিন বোন রয়েছে। ওই নারীর পরিবার ও সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে নবীনগর পৌর এলাকার নায়ারপুর গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে সুলতানার সঙ্গে একই উপজেলার বিদ্যাকূট ইউনিয়নের উরখুলিয়া গ্রামের সহিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। তারা পশ্চিম পাইকপাড়ায় শ্বশুরের নামে থাকা ৩ দশমিক ৮১ শতক জায়গায় স্বামীর সঙ্গে একমাত্র মেয়ে সন্তান ঈশাত ইসলামকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। ২০১৭ সালে সুলতানার স্বামী মারা যান। মৃত্যুর পর স্বামীর ওয়ারিশসূত্রে ও অন্যান্য শরীকগণের সঙ্গে আপোষ বন্টনে সুলতানা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ার বাসায় বসবাস শুরু করে আসছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর আয় রোজগারের কোনো উৎস না থাকায় স্বামীর তিন ভাই ও তিন বোনের সঙ্গে আলোচনা করেই পশ্চিম পাইকপাড়ার বাসায় দুটি ঘর ভাড়া দেন সুলতানা। বসতবাড়ি ভাড়া থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে চলে খরচ। সম্পত্তির বন্টন নিয়ে স্বামীর তিন ভাই, তিন বোন ও ভাগিনাদের সঙ্গে সুলতানার বিরোধ দেখা দেয়। গত কয়েক মাস আগে ব্রাহ্মবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে স্বামীর বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে একটি বন্টননামা মামলা করেন। যা বিচারীধীন রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বাড়িটি দখলে নিতে সুলতানা ও তার মেয়েকে বেদখলের জন্য নানাভাবে হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করছেন। গত মঙ্গলবার রাতেও বাড়িতে লোক পাঠিয়ে সুলতানা ও তার ভাড়াটিয়েকে সেখান থেকে উঠে যেতে বলেছেন। প্রতিবাদ করায় এলাকার বখাটে কিশোর ও যুবকদেরকে সুলতানা ও তার মেয়ের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন কাউন্সিলর।
সুলতানা বেগম বলেন, কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী এলাকার কিশোর গ্যাং অন্যায়ভাবে আমার ভাড়াটিয়াদের বসতবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিচ্ছেন। কাউন্সিলরের কারণে মেয়েকে নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। কিন্তু কাউন্সিলরের উৎপাত দিনদিন বাড়ছে। জায়গা দখলে নিতে উঠে পড়ে লেগেছেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী বলেন, ওই বাড়ির দক্ষিণ ও উত্তরদিকে পৌরসভার মেয়র নায়ার কবিরের বাড়ি। বাড়িটি বিক্রি হবে জেনে কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মেয়র। বাড়ির অন্যান্য প্রকৃত মালিকারা ৩ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট মেয়রের ছেলে ও আমার নামে বায়না দলিল করে দিয়েছে। আমি তাদেরকে কোনো ধরণের হয়রানি করছি না। হুমকিও দেইনি। তবে তার বাসার এক ভাড়াটিয়া আমার আত্মীয়।
পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিধবা নারীকে আইনী সহায়তা দেয়া হয়েছে। কোন অন্যায় অত্যাচার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছি।