ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ১১ ডিসেম্বর রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিএনপির ১০ দফা সংবিধান, আইন, আদালতের কবর দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জংলি সরকার আনা এবং সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গবাদী সন্ত্রাস, দূর্নীতি অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষাবলম্বনের কালো দলিল। তারা বলেন, ১০ দফা দিয়ে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো যে, তারা দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে ফেলে দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জংলি সরকার আনার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পথই আঁকড়ে ধরে আছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাস ও দূর্নীতির বিচার বন্ধ করা। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজদের মুক্ত করা। বিএনপি সংবিধান, আইন, আদালত কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করে না।
জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কোনোভাবে আলেম, ওলেমা, ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারক বন্দি নাই। যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে প্রকাশ্য আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সে সাজা নিশ্চিত হয়ে যারা বন্দি আছে তারা কেউই প্রকৃত আলেম, ওলামা, ইসালামি চিন্তাবিদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারক নয়। তারা ধর্মের অপব্যবহারকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী। কোনো যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা ধর্মের মনগড়া ব্যাখা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে ওয়াজ করলেই আলেম বা নিরপাধী হয়ে যায় না। দেশের কেউই আইন আদালতে উর্ধে না, মসজিদের ইমাম বা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক নেতাও আইন আদালতে উর্ধে না।
জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সুনির্দিষ্ট রায়ের পর বিচারবিভাগকে সম্পৃক্ত করে পুরাতন ধাচের তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনোই সুযোগ নাই। তারপরও পুরাতন ধাচের তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, আরপিও বাতিল করার দাবি তুলে বিএনপি সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করিতে সংঘাত-সংঘর্ষের মাধ্যমে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে জলঘোলা করার পথে যাবারই ইংগিত দিয়েছে।
জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপির ক্ষমতা পুনর্দখলের আন্দোলনের ১০ দফায় চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করে জাতীয় অর্থনীতি সচল রাখা, মানুষের আয় ও জীবিকা রক্ষাসহ জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখার কোনো প্রস্তাব নাই। বিএনপির সময় দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস, পানির দাম অযোক্তিকভাবে বাড়িয়েছিল। বিএনপি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতেও পারেনি, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়াতে পারেনি।
জাসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আমলেই রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক চালু এবং পরিচালক নিয়োগ শুরু হয়। দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত বিএনপির চালু করা দুষ্ট চক্রের অশুভ প্রভাব থেকে এখনও মুক্ত হতে পারছে না। বিএনপি যতবার ক্ষমতায় ছিল ততবারই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডকে ইনডেমনিটি দিয়েছে। বিএনপির আমলে বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীগুলিকে হাওয়া ভবনের অধিনস্থ করা হয়েছল। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নিজদের তোলা দাবি যে ভুলে যায়, তার প্রমান হলো জিয়া, খালেদা জিয়া, খালেদা-জিয়া, ইয়াজউদ্দিন সরকার ক্ষমতায় থাকা কালে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করেনি।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি তাদের বিবৃতিতে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে ফেলে দিয়ে অসাংবিধানিক অস্বাভাবিক জংলি সরকার আনা, যুদ্ধাপরাধ-জঙ্গবাদী সন্ত্রাস-দূর্নীতির অপরাধের বিচার বন্ধ, সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী-দূর্নীতিবাজদের মুক্ত করা এবং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করার জন্য বিএনপি-জামাত ও এদের রাজনৈতিক পার্টনারদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সম্পর্কে সজাগ থাকা এবং বাংলাদেশ বিরোধী এই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য জাসদ ও ১৪ দলসহ দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সকল ব্যক্তি, মহল, গোষ্ঠী ও শক্তির প্রতি আহবান জানান।