Home স্বাস্থ্য বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের বর্ষপূর্তি ৪১ হাজার ৫ শত রোগী সেবা নিয়েছেন

বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের বর্ষপূর্তি ৪১ হাজার ৫ শত রোগী সেবা নিয়েছেন

19

স্টাফ রিপোটার: নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ১ম বর্ষপূর্তি উৎযাপিত হয়েছে। বুধবার দুপুর ১টায় (২৮ ডিসেম্বর ২০২৩খ্রি.) সুপার স্পেশালাইজড হাসাপাতালের বর্ষপূতি উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন, পায়রা অবমুক্তকরণ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যান্সার ভবন প্রদক্ষিণ করে সি ব্লকে প্রদক্ষিণ করে কেবিন ব্লক হয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের দক্ষিণ ফটকে গিয়ে শেষ হয়। একই সঙ্গে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে চারটি আইটি সম্পর্কিত সেবার শুভ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ওয়েবসাইট, অনলাইন প্যাশেনন্ট এপোয়েন্টমেন্ট সিস্টেম, ইস্যু ট্রাকার সিস্টেম ও স্মার্ট কার পার্কিং সিস্টেম কার্যক্রমেরও শুভ উদ্বোধন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আইসিইউ, আন্তঃবিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়াতে চাই এবং পহেলা জানুয়ারিতে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক্সিকিউটিভ চেকআপ রুম চালু করতে চাই। মাননীয় উপাচার্য বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন দেখেছেন, কোনো রোগী যেনে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে না যায়, সেই স্বপ্ন পূরণে দেশের মধ্যেই সব রোগের চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমাদের দেশেই স্বল্প খরচে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি পেয়েছি। গত ২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা অনেক কাজ করেছি। লক্ষাধিক ইনভেস্টিগেশন করেছি। ৫০ হাজারের মতো রোগী আমাদের এখানে এসেছে। এক হাজারের মতো রোগী এখানে ভর্তি হয়েছে। আমরা এখানে অনেক অপারেশন করেছি, যা মানসম্পন্ন। এছাড়া এখানে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট, জোড়া শিশু আলাদা, জয়েন্ট অ্যান্ড হিপ রিপ্লেসমেন্ট করাসহ আমরা এখানে অনেক কাজ করেছি।
মাননীয় উপাচার্য বলেন, আমরা অনেক সেবা দিয়েছি, যে সেবাগুলোর জন্য আমাদের দেশের রোগীরা বাইরের দেশে চিকিৎসা নিতে যায়। বন্ধ্যাত্বের জন্য রোগীরা বাইরে যায়। আমরা এই সেবাটার জন্যও কাজ করতে চাইছি। আমরা এখানে থেরাপির মাধ্যমে টেস্টটিউব বেবি করেছি। আমরা জোড়া শিশু সেপারেট করছি। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টও এখানেই করবে। যার খরচ আমাদের দেশে ৩ লাখ বাইরের দেশে ৪০ লাখ। লিভার ট্রান্সপ্লান্টও আমরা এখানে করবে, যার খরচ আমাদের এখানে ২০ লাখ টাকা আর বাইরের দেশে এক কোটি টাকা। উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের এখানের কার্যক্রম আরও গতি পাবে যদি আমরা আমাদের সকল জনবল প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে পারি এবং আমাদের যে আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন সেটা সম্পূর্ণ করতে পারি। আর কোরিয়া থেকে যেসব যন্ত্রপাতি আসার কথা সেগুলো আশা করি খুব শিগগিরই পেয়ে যাব। তারপর আমরা শতভাগ চিকিৎসা সেবা চালু করতে পারব।

অনুষ্ঠানে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ রসুল আমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল্লাহ আল হারুন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহ নিজাম উদ্দিন শাওন।

বার্ষিক প্রতিবেষপন বলা হয়, ৫টি সেন্টারের অধীনে ২০টি বিভাগে ২৭-১২-২০২২ থেকে ২৬-১২-২০২৩ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৪১,৫৯৬ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। ল্যাবরেটরী সার্ভিসেসের আওতায় ২৩-০১-২০২৩ থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত ৫টি বিভাগ (বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি, ভাইরোলজি, হেমাটোলজি, ল্যাবরেটরি মেডিসিন) মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ৯১,৯৫২টি। রেডিওলজি এন্ড ইমের্জিং সেন্টারের আওতায় ২৩-০১-২০২৩ থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত মোট পরীক্ষা- ৬,৮৭০টি (১৮৭৭টি এমআরআই, ১১০৭টি সিটি স্ক্যান, ২৯টি বিএমডি, ১৮০৯টি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ২০৪৭টি এক্স-রে, ১ টি ম্যামোগ্রাফি) করা হয়েছে। কার্ডিওভাস্কুলার এন্ড স্ট্রোক সেন্টারের আওতায় ২৩-০১-২০২৩ থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত প্রসিডিউর সংখ্যা- ৩৯৭২টি। হেপাটোবিলিয়ারি, হেপাটোলজি এন্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টারের আওতায় ২৩-০১-২০২৩ থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত প্রসিডিউর সংখ্যা- ১০২৫টি। কিডনি ডিজিজ এন্ড কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টারের আওতায় ২৩-০১-২০২৩ থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত ডায়ালাইসিস সংখ্যা-২৭৯টি ও ২৩-০১-২০২৩ থেকে ১৯-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত সংখ্যা- ১৬টি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছে। ৫-০৭-২০২৩খ্রি. থেকে ২৬-১২-২০২৩ইং পর্যন্ত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে ৯৭টি অপারেশন সম্পন্ন হয় এবং সর্বমোট ৬৩৮ জন রোগী অন্তঃবিভাগে ভর্তি হয়ে সেবা গ্রহণ করেছেন।