Home জাতীয় বানারীপাড়ায় কালি ও মহাদেবের মূর্তি ভাংচুর: এমপির মন্দির পরির্শন

বানারীপাড়ায় কালি ও মহাদেবের মূর্তি ভাংচুর: এমপির মন্দির পরির্শন

31

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: বরিশালের বানারীপাড়ায় হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে। এর অংশ হিসেবে উপজেলার বিশারকান্দিতে সার্বজনিন শ্রী শ্রী কালী মন্দিরের কালি ও মহাদেবের মূর্তি ভাংচুর করেছে দুবৃর্ত্তরা। জানা গেছে, ১৫ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের কদমবাড়ি বাজার সংলগ্ন বটতলা সার্বজনিন কালি মন্দিরের তালা ভেঙ্গে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ভিতরে প্রবেশ করে কালি মূর্তির চার হাত ও মহাদেবের এক হাত আংশিক ভেঙ্গে ফেলেছে। এছাড়া কালি মূর্তির মাথার চুড়া ও মহাদেবের মূর্তির গলায় প্যাচানো সাপের মাথা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকালে পূজারি আহ্লাদি (৬০) মন্দিরে পূজা দিতে এসে কাঠের গেটের তালা খোলা ও ভিতরে কালি এবং মহাদেবের মূর্তি ভাঙ্গা দেখতে পেয়ে তিনি বিষয়টি মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয়দের জানান। এদিকে এ খবর পেয়ে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান। এসময় মন্দির প্রাঙ্গনে উপস্থিত মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন ও সর্বস্তরের মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় তিনি বলেন, বানারীপাড়ার হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে। তিনি এসময় সেখানে উপস্থিত বরিশাল জেলার সহকারি পুলিশ সুপার ( উজিরপুর সার্কেল ) আবু জাফর মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ্ ও বানারীপাড়া থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিনকে দুস্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দেন। সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম এসময় ক্ষতিগ্রস্ত কালি ও মহাদেবের মূর্তি সংস্কারসহ ওই মন্দিরের উন্নয়নে এক লাখ টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন। এছাড়াও বরিশাল জেলার সহকারি পুলিশ সুপার ( উজিরপুর সার্কেল ) আবু জাফর মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ্,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা,বানারীপাড়া থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু,বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত,উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর গৌতম সমদ্দার,কদমবাড়ি বটতলা কালি মন্দিরের সভাপতি নিখিল বিশ্বাস প্রমুখ বক্তৃতা করেন। পরে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম পার্শ্ববর্তী সার্বজনিন দুর্গা মন্দির পরিদর্শণ করেন। এর আগে তিনি ওই দুর্গা মন্দিরে গভীর নলকুপসহ মাঠ ভরাট করে দিয়েছিলেন। মন্দির পরিদর্শনকালে সংসদ সদস্যের সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য কৃষিবিদ ডা. খোরশেদ আলম সেলিম,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি এটিএম মোস্তফা সরদার,উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক অধ্যাপক জাকির হোসেন,পৌর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুমম রায় সুমন,সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বড়াল,পৌর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাষ্টার হায়দার আলী,উপজেলা যুবলীগ নেতা তপু খান ও মশিউর রহমান সুমন,উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন দেবনাথ ও মাহতাব হোসেন মহসিন,পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল চৌধুরী প্রমুখ। মন্দিরের মূর্তি ভাঙ্গা প্রসঙ্গে বরিশাল জেলার সহকারি পুলিশ সুপার (উজিরপুর সার্কেল ) আবু জাফর মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ্ ও বানারীপাড়া থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন,শান্তি ও সম্প্রীতির জনপদ বানারীপাড়াকে যারা অশান্ত করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এদিকে বুধবার বিকালে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিপন কুমার সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মহসিন-উল-হাসান তার সঙ্গে ছিলেন। অপরদিকে শ্রী শ্রী সার্বজনিন দুর্গা মন্দিরের সভাপতি বিধান চন্দ্র হালদার জানান, পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত সার্বজনিন কালি ও হরি মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে স্থানীয় কালাম নামের এক ব্যক্তি ও দুর্গা মন্দিরের খাস সম্পত্তি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্তর সঙ্গে মন্দির কমিটির দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, কদমবাড়ি বাজারের রাস্তার উত্তর পাশে বটতলায় একই স্থানে সার্বজনিন দুর্গা, কালি ও হরি মন্দির ছিল। সেখান থেকে সার্বজনিন দুর্গা মন্দির কদমবাড়ি বাজারের রাস্তার দক্ষিণ পাশে স্থানান্তর করার সময় তিনি কমিটির নেতৃবৃন্দকে সরকারি খাস সম্পত্তিতে নয়, ব্যক্তি মালিকানার দুই শতাংশ সম্পত্তি দান করে সেখানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিলেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে তার ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।