Home সারাদেশ বানারীপাড়ার সেই অদম্য মেধাবী হারিছার পাশে এবার প্রধানমন্ত্রী

বানারীপাড়ার সেই অদম্য মেধাবী হারিছার পাশে এবার প্রধানমন্ত্রী

28

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় দারিদ্রতাকে জয় করে মেডিকেলে চান্স পাওয়া অদম্য মেধাবী সেই সাদিয়া আফরিন হারিছার পাশে এবার দাঁড়িয়েছেন মাদার অব হিউম্যানিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বিঘ্নে হারিছার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলমের প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিল থেকে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এ উপলক্ষে হারিছার পুরনো বিদ্যাপিঠ বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ২৮ আগস্ট রবিবার দুপুর ১২টায় বিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক আবু বকার সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. শাহে আলম বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনারবাংলা গড়তে হলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত আদর্শ সোনার মানুষ তৈরী করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে এভাবে অদম্য মেধাবী হারিছাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই সোনার মানুষ তৈরী করছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যারা একদিন সত্যিকার সোনারবাংলা গড়ে তুলে দেশকে বিশ^সভায় অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এসময় তিনি আরও বলেন.মায়ের গর্ভ থেকে কেউ মেধাবী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না অদম্য ইচ্ছে শক্তি,নিরলস অধ্যবসায় ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সে একসময় তার কাঙিখত অভীষ্টে পৌঁছে যায়। যার অনন্য দৃষ্টান্ত সাদিয়া আফরিন হারিছা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট সোহেল সানি ইতিহাসের জনক নেপোলিয়ান বোনাপার্টের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে শিক্ষিত জাতি উপহার দিবো। আর তাইতো মানবতার মা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা নিজেও একটি শিক্ষিত জাতি তৈরীতে বদ্ধপরিকর। তার দুই সন্তান জয় ও পুতুলকেও উচ্চ শিক্ষিত ও আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। কারণ তার বাবা বঙ্গবন্ধুও চাইতেন- সোনার বাংলা গড়তে হলে আমার সোনার মানুষ চাই। কিন্তু তাঁকে নরপশুরা প্রায় সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে গোটা জাতিকে ধ্বংস করে ফেলেছিলো। শেখ হাসিনা দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে ধ্বংস প্রায় সেই জাতিকে আবার টেনে তুলেছেন। এই নতুন প্রজন্মকে তার নেতৃত্বে দেশ গড়ার কাজে সামিল হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী শুধূ শিক্ষার্থীই নয় দেশের কবি,সাহিত্যিক,সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিকজনসহ প্রতিভাবানদের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দাঁড়াচ্ছেন। বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাওসার হোসেনের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন মোল্লা,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মু.আনোয়ার আজিম,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, বিটিভির সিনিয়র সাংবাদিক সুজন হালদার,বানারীপাড়া ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মোফাজ্জেল হোসেন খান,সরকারি বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন (পাইলট) স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ কান্ত হাওলাদার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত সাদিয়া আফরিন হারিছা তার আবেগঘন বক্তৃতায় বলেন,প্রধানমন্ত্রী যে সত্যিকারের মানবতার মা আমার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি তা অবারও প্রমান করলেন। প্রধানমন্ত্রী ও বসুন্ধরা গ্রুপসহ যারা অকৃপনভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ঋন কখনও শোধ হবার নয়। তাদের জন্য আমার ও পরিবারের অফুরান দোয়া ও অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা। এছাড়াও বক্তৃতা করেন বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মৃদুলা,কারিমা শেখ মুমু ও অংকিতা মল্লিক। এসময় হারিছার গর্বিত পিতা মিজানুর রহমান হাওলাদার ও মা রাজিয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন। হারিছার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এ মমত্ববোধে তারা আবেগাপ্লুত। অনুষ্ঠানে হারিছাকে সম্মাননা ক্রেষ্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করা হয়। প্রসঙ্গত বানারীপাড়া পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিকশা শ্রমিক মিজানুর রহমান হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আফরিন হারিছা দারিদ্রতাকে জয় করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়ার পরেও ভর্তিসহ লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া নিয়ে তার ও দরিদ্র পিতা-মাতার চোখে অমানিশার ঘোর অন্ধকার দেখা দেওয়া নিয়ে দৈনিক কালেরকন্ঠে তখন একটি মানবিক রিপোর্ট প্রকাশের পরে দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ তার পাশে দাঁড়ান।