Home জাতীয় বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট

বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট

34

ডেস্ক রিপোর্ট: টানা তিন দিন ধরে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গবাসী। অপরদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম প্রান্তে মহাসড়কে চার লেন নির্মাণ ও নলকা সেতুর সংস্কার এবং পূর্বপ্রান্তে যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, টানা তিন দিন ধরে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গবাসী। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সয়দাবাদ থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা যায়, মহাসড়কে চার লেন নির্মাণ ও নলকা সেতুর সংস্কার কাজ চলমান থাকায় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোর থেকে দিনভর যানজট ও ধীরগতি থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে এ মহাসড়কের যানজট কিছুটা স্বাভাবিক হয়। পরে বুধবার (১৬ মার্চ) ভোর থেকে আবারও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমে যানবাহনে ধীরগতি ও যানজটের সৃষ্টি হয়। রাতভর যানজটের কারণে বিভিন্ন যানবাহন সিরাজগঞ্জ শহরের ভিতর ও কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করে। এতে বিপাকে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকালেও স্বাভাবিক হয়নি এ মহাসড়কের যানজট। টানা কয়েক দিনের যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও পণ্য ব্যবসায়ীরা।

বগুড়া থেকে ঢাকাগামী ট্রাক চালক মনিরুল ইসলাম জানান, বগুড়া থেকে কাঁচা পণ্য নিয়ে ট্রাক ছেড়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় পৌঁছানোর পর থেকে সড়কে ধীরগতি ও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পরে বাধ্য হয়ে কামারখন্দ আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে কড্ডা মোড়ে পৌঁছাই। সেখান থেকেও সয়দাবাদ পর্যন্ত যানজট। সড়কেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে। কাঁচা পণ্য নিয়ে কখন ঢাকায় পৌঁছবো কিছুই বুঝতে পারছি না। সঠিক সময়ে ঢাকাতে না পৌঁছাতে পারলে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হবে।

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী খালেক এন্টার প্রাইজের যাত্রী সোহেল রানা জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করে কিছুটা পথ আসার পর থেকে যানজটে পড়ে আছি। ১০ মিনিটের সড়ক অতিক্রম করতে লাগছে দুই ঘণ্টা। কখন বাড়ী পৌঁছবো তার ঠিক নেই।

কামারখন্দ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর জানান, মহাসড়কে চার লেন নির্মাণ ও নলকা সেতুর সংস্কার কাজ চলমান থাকায় এক লেন দিয়েই ঢাকাগামী ও উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চলাচল করাতে হচ্ছে। এতে সয়দাবাদ থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত উভয় লেনে মাঝেমধ্যে এক লেনে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ যানজট কখনো ধীরগতিতে রূপ নিচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে নলকা সেতুর কাজ কিছুটা সম্পন্ন হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। তবে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে।

কালিহাতী ( টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা- টাঙ্গাইল- বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গতরাত থেকে গাড়ির চাপ থাকলেও ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। টানা তিন দিন ছুটি থাকার কারণে ঘরমুখী মানুষের চাপে হঠাৎ করেই যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। তাই এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকাল ৮টায় সরেজনিন দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত প্রায় কিলোমিটার পশ্চিম পাশের রাস্তা গাড়ির চাপে বন্ধ হয়ে আছে। কিছু বড় বাস এবং ট্রাক পাশের সিএনজি প্রবেশ করার কারণে এই যানজট আরও তীব্র হয়েছে। কিছু গাড়ি বিকল্পপথে চলাচল করছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে ঘরমুখী যাত্রীরা।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কতক্ষণ লাগবে সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।-ইত্তেফাক