Home জাতীয় প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকল ১২ দল

প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকল ১২ দল

26

ডেস্ক রিপোর্ট: নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে ১২টি দলের কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেছে। এখন মাঠপর্যায়ে এসব দলের তথ্য নেবে ইসি। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

প্রাথমিক বাছাইয়ে যে ১২টি দল টিকেছে সেগুলো হলো- এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।
এসব দলের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে আছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতা প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। নাগরিক ঐক্যের নেতৃত্বে রয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। এবি পার্টির নেতাদের বড় অংশই জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা। তবে সংক্ষিপ্ত এই তালিকায় জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) নাম নেই। যদিও এ দলটি প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকেছিল। ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, কমিশনের অনানুষ্ঠানিক সভা হয়েছে। এতে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন করে নিবন্ধন পেতে ৯৩টি দল আবেদন করেছিল। এই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ে যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করেছে।
তিনি জানান, ৯৩টি আবেদনের মধ্যে ১৪টি আবেদন নির্দিষ্ট ফরমেটে করা হয়নি এবং ২টি আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৬টি আবেদন বাতিল হয়ে যায়। অবশিষ্ট ৭৭টি দলকে আমরা তাদের চাহিত কাগজপত্র ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলেছিলাম। ১৯টি দল সে সময়কালে জমা দিতে পারেনি। এ ছাড়া প্রেরিত দুটি চিঠির ঠিকানা ঠিক না থাকায় ফেরত এসেছে। ১০টি দল সময়ের আবেদন করেছিল। সেটা না-মঞ্জুর করা হয়েছিল। এভাবে ৩১টি আবেদন পরবর্তী সময়ে বাতিল হয়। সবশেষে থাকে ৪৬টি আবেদন। এগুলো যাচাই-বাছাইকালে নীতিমালা, আইন এবং চাহিত তথ্য পূরণ না করায় ৩৪টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। আর যে ১২টি দল টিকেছে, সেসব দলের দেওয়া তথ্যগুলো মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এরপর কমিশন সিদ্ধান্ত দেবে।

কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে; কারও সুপারিশে এ বাছাই হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, আমি আগেই বলেছি আমাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষে এই ১২টি দলের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলগুলোর সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও কেন্দ্রীয় অফিস আছে কি না ইত্যাদি যাচাই করা হবে। আমরা বলেছি ১৫ দিনের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। রোডম্যাপ অনুযায়ী, জুনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।

মো. জাহাংগীর আলম বলেন, যাচাই-বাছাইয়ে কতগুলো টিকবে বা কারা টিকবে, সেটা বলতে পারব না। এসব দলের উপজেলা পর্যায়ে ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকতে হবে, এখন সেটা যাচাই করা হবে। এক-তৃতীয়াংশ জেলায় অফিস আছে কি না; সেই রিপোর্ট আসার পর সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

সচিব জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও) এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী, তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করলে সেই রাজনৈতিক দলটি নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। শর্ত তিনটি হলো- এক. বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে অনুষ্ঠিত যেকোনো সংসদ নির্বাচনের যেকোনো একটিতে দলীয় প্রতীকে একটি আসন পেতে হবে; দুই. কোনো সংসদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৫ শতাংশ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং তিন. দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় ও অন্তত ১০০টি উপজেলায় বা মেট্রোপলিটন থানায় কার্যালয় থাকতে হবে। প্রতিটি উপজেলায় দলের সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত থাকতে হবে।
আমাদের সময়