Home রাজনীতি প্রধানমন্ত্রীর লোহার হার্ট আছে : মান্না

প্রধানমন্ত্রীর লোহার হার্ট আছে : মান্না

40

স্টাফ রিপোটার: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লোহার হার্ট আছে। সি ইজ রিয়েলি হার্টলেস। আমি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করেছি, কিন্তু তার হার্ট আছে এমন আমি কখনো দেখিনি। অভিনয় করে কথাবার্তা বলেন। কিন্তু এই কান্না তার কাছে যায় না। যে নেত্রী বলেন যখন ডিমের দাম কম থাকবে, তখন সেদ্ধ করে তা ফ্রিজে রাখবে। হাউ স্টুপিড। উনি জানেন না এমন কোনো কিছু নেই, শুধুমাত্র মানুষের দুঃখ কষ্ট উনার কাছে পৌঁছে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বুকের মধ্যে মমতা নাই। যতই কাঁদেন, তার চোখের কোন ভিজবে না। এই সরকার যতদিন পর্যন্ত আছে ততদিন পর্যন্ত গুম হয়ে যাওয়া মানুষের কোনো খবর পাওয়া যাবে না। আপনারা কষ্ট পেতে পারেন, তবে পাঁচ বছর আগেও এই কথা বলেছিলাম এবং আজও একই কথাই বলছি।

বুধবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমার অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের স্মরণে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে মায়ের ডাক নামে একটি সংগঠন।

অনুষ্ঠানে নিখোঁজ হওয়া পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মানুষকে গুম করা হয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদের হত্যা করা হয়েছে। যারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য, বাংলাদেশের ব্যাংক লুটপাট করার জন্য, লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার জন্য- এই গুমগুলো করা হয়েছে। ভিন্ন মতের মানুষদের মনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার জন্য এইসব করা হয়েছে। যদি আমরা গুমের বিচার চাই, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই তাহলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশে বাংলাদেশের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশ যে দেউলিয়া হতে যাচ্ছে এটা ঠেকানোর উপায় এই সরকারের নেই। তারা যতই বলুক তারা অভিজ্ঞ, বর্তমান বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে না। এই সরকার ক্ষমতায় থাকা মানে আরো গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে যাওয়া।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার বাসে আগুন দেওয়া, হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়া, মাদক ধরিয়ে দেওয়াসহ নানা ধরনের চক্রান্তের জালসহ সবকিছু করবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে মানুষের শক্তি নিয়ে আমরা রাজপথে দাঁড়াবো। তাদের সব শক্তিকে আমরা নস্যাৎ করে দেব- সেই শপথ আমাদের নিতে হবে। আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। কারণ, ওই ভয় পাওয়ানোটাই তাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, সব সমস্যার সমাধান একজন। তিনি অমরত্ব লাভ করার জন্য আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান। এজন্য বিরোধী দল নির্মূল করার জন্য তার একটা টার্গেট থাকবেই। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। তাই বিরোধী দলের যেসব ভাইয়েরা রাজপথে আন্দোলন করছে তাদেরকে এক থাকতে হবে। হয় লড়ো, না হয় মরো।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা কোনো প্রতিশোধের রাজনীতি করি না। কিন্তু যারা খুনি ডাকাত এবং প্রতিটি গুমের সঙ্গে দায়ী তাদের বিচার করা হবে। দেশকে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে যাবো। সেই লড়াইয়ে আমরা গুম হওয়া পরিবারের সকলের সঙ্গে ভাই বন্ধু হিসেবে এগিয়ে যাবো। আমরা আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আপনাদের সঙ্গে আছি এবং শেষ পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে থাকবো।

অনুষ্ঠানে গুম হওয়া সমনের মা বলেন, মরার আগে যেন ছেলেকে দেখে যেতে পারি। আজকে এত বছর হয়ে গেছে দুই নাতিন নিয়ে আছি। ছেলের কোনো খোঁজ পাই না। আপনারা দোয়া কইরেন, মরার আগে যেন আমার ছেলেকে দেখে যেতে পারি।’ কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন গুমের শিকার সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন। অনুষ্ঠানে শুধু সুমনের মা নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পরিবারের সদস্যরা এভাবেই নিজেদের অসহায়ত্ব ফুটিয়ে তোলেন। এদের মধ্যে এসেছেন কারও সন্তান, স্ত্রী, মা, বোন। সবারই একটাই প্রার্থনা- অন্তত তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, গুমের শিকার আব্দুল বাসেদ মারজান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত সাবেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির স্থায়ী কমিটির সদস্য তানিয়া রব, মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী আফরোজা ইসলাম আঁখি প্রমুখ।