Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস প্রতিবন্ধকতা জয় করে স্বপ্ন ছোয়ার আশা তাদের

প্রতিবন্ধকতা জয় করে স্বপ্ন ছোয়ার আশা তাদের

111

জাবি প্রতিনিধি: এক হাতে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র। অন্য হাত ধরে রেখেছে বিএনসিসির এক সদস্য। সুদূর ময়মনসিংহ থেকে
আকাশসম স্বপ্ননিয়ে ভর্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে এসেছেন এই শিক্ষার্থী।

ভর্তিযুদ্ধই বলতে হয়। কারন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১ হাজার ৮৮৮ টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে মোট ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬০৬ টি। সে হিসেবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বে ১৫১ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

বলছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা দিতে আসা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাওনের কথা। ময়মনসিংহ এডওয়ার্ড

ইন্সটিটিউট থেকে এসএসসি এবং নাজিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করা এই পরিক্ষার্থীর স্বপ্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া।

প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে শাওন জানান, “রেকর্ড করে কিংবা বিভিন্ন এপ্সের মাধ্যমে পড়াশোনা করতে হয়। আমি তো আর চাইলেই অন্যদের মতো করে পড়ালেখা করতে পারি না। তারপরও সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি।”

কিভাবে পরীক্ষা দেবেন জানতে চাইলে বলেন, ” আমার সাথে একজন শ্রুতিলেখক আছে। তিনি পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়েছে।”

চান্স পাওয়ার বিষয়ে কতোটা আশাবাদি এমন প্রশ্নের উত্তরে এই পরিক্ষার্থী বলেন, ” শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারনে আমার রাস্তাঘাটে চলাচলে কিছুটা সমস্যা হয়।এক্ষেত্রে জাবির রাস্তাঘাট চলাচলের জন্য সুবিধাজনক মনে হয়। আবাসন সুযোগ-সুবিধাও ভালো। এজন্য আমার স্বপ্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া।

খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলা থেকে পরীক্ষা দিতে আসা এমনই আরেকজন হলেন জোবাইর হোসাইন। হুইলচেয়ারে বসেপরীক্ষা দিতে এসেছেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পড়তে চান বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তিনি বলেন, “ছোটোবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। এজন্য ঢাকায় এসে কোচিং করেছি।এখানকার মুক্ত প্রকৃতি আর সবুজে ঘেরা পরিবেশ আমার অনেক পছন্দ। আশা করি, এখানে পড়াশোনার সুযোগ পাবো।”

দিনাজপুর থেকে আসা আরেক পরিক্ষার্থী হলেন মোখলেছুর
রহমান। দিনাজপুর দিঘলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবংদিনাজপুর সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছেন। পড়তে চান ইংরেজি বিভাগে।

ভর্তি পরিক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধুরা পড়া রেকর্ড করে দিতো। সেটা শুনে আত্মস্থ করতাম। এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। আর অনেকের কাছেই শুনেছি জাহাঙ্গীরনগরের প্রকৃতি অনেক সুন্দর। আমি সেই সৌন্দর্য দেখতে নাপেলেও অনুভব করতে পারি। প্রতিবন্ধকতা জয় করে নিজেকে যোগ্য করে তোলা এবং দেশের সেবায় কাজ করাই আমার লক্ষ।”

এ বিষয়ে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (পিডিএফ) সভাপতি আবদুল গাফফার জিসান বলেন, আমরাবিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় সহযোগিতা প্রদান, ভর্তি কার্যক্রমে সহযোগিতা, আবাসনের ব্যবস্থা করা, তাদের পড়ালেখার উপকরণ জোগানো ইত্যাদি সহায়তা প্রদান করে থাকি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্বদিচ্ছাপ্রয়োজন।”